কলকাতা, 18 ফেব্রুয়ারি : একদিকে বিজেপির বহু নেতা বারংবার অভিযোগ করেছেন যে, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের মতো ব্যবহার করছেন ৷ কোনও নিরপেক্ষতার বালাই রাখেন না তাঁরা । এমনকী রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও এই নিয়ে বহুবার সরব হয়েছেন । অন্যদিকে, সপ্তম বেতন কমিশন চালু না করায় এক বিশাল সংখ্যক রাজ্য সরকারি কর্মচারী ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকারের উপর। এবার সেই সমস্ত ক্ষুব্ধ কর্মচারীর মনজয় করার জন্য মাস্টার স্ট্রোক দিলেন অমিত শাহ ৷ বৃহস্পতিবার তাঁর কাকদ্বীপের সভা থেকে ঘোষণা করলেন, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে সপ্তম বেতন কমিশন চালু করবে ।
এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিছু বলতে রাজি হননি। ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর কিছুক্ষণ পরেই পৈলানের জনসভায় বক্তৃতা পেশ করবেন ৷ উনি কিছু বলার আগে আমার কিছু বলা ঠিক হবে না,’’ পার্থবাবু বলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সপ্তম বেতন কমিশন চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করেছেন। শাহের এই ঘোষণা নিয়ে এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, ‘‘একদিকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বেতন কমিশন না পাওয়া ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের তৃণমূলের দিক থেকে বিজেপির দিকে আনার চাল চেলেছেন। অন্যদিকে, এই প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে তিনি কিছু না বলেও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের নিরপেক্ষ থাকতে বলেছেন।’’
আরও পড়ুন :ক্ষমতায় এলে 4 লাখ মৎস্যজীবীকে কিষাণ নিধির সুবিধা : শাহ
বৃহস্পতিবার যেখানে অমিত শাহর সভা আছে সেই কাকদ্বীপ মূলত মৎস্যজীবী অধ্যুষিত অঞ্চল। সেই পেশার মানুষদের কথা মনে রেখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও প্রতিশ্রুতি দেন যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে প্রায় চার লাখ মৎস্যজীবীকে কিষান সম্মাননিধি দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, গঙ্গাসাগরে আন্তর্জাতিকমানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। নিজের চিরাচরিত আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবারও আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে। "তৃণমূল কংগ্রেস শুধু ভাইপোর কল্যাণে কাজ করে। ভাইপো এবং তাঁর গুন্ডা মানুষের সব টাকা মেরে দিয়েছে। কিন্তু, এবার ভোটের দিন তৃণমূলের কোনও গুন্ডাকে রাস্তায় দেখা যাবে না। আপনারা নির্ভয়ে ভোট দেবেন," তিনি বলেন। কথা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকার থাকলে রাজ্যে আইশৃঙ্খলা বলে কিছু থাকবে না। তিনি আরও বলেন, "বিজেপির সরকার এলে আমফানে চুরির সঠিক তদন্ত হবে। আমাদের সরকার এলে কাউকে কাটমানি দিতে হবে না। কৃষক শস্যের সঠিক দাম পাবে।"