কলকাতা, 21 নভেম্বর: ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স বা গার্হস্থ্য হিংসা (Domestic Violence) যে কতটা ভয়াবহ ভাবে মনে দাগ কাটতে পারে, তার প্ৰকৃষ্ট উদাহরণ বারুইপুরে মল্লিকপুরের নৃশংস হত্যাকাণ্ড (Baruipur Murder for Revenge)। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত ছেলে জয় ওরফে রাজু চক্রবর্তী এবং অভিযুক্ত মা শ্যামলী চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বারুইপুর জেলা পুলিশ । কিন্তু বছর 55-র বাবা, প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তীকে হত্যা করার যে ধরন, সেটি কোথা থেকে রপ্ত করলেন অভিযুক্ত মা ও ছেলে ? তদন্তে নেমে বারুইপুর জেলা পুলিশের আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, বছরের পর বছর বাবার বিরুদ্ধে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়েই জন্ম নিয়েছিল রিভেঞ্জ বা বদলা নেওয়ার তাগিদ । পুলিশ সূত্রে খবর, বাবাকে খুনের পর দেহের ছয় টুকরো করার জন্য আগে থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ছেলে রাজু চক্রবর্তী ওরফে জয় । আর তাঁর মা শ্যামলী চক্রবর্তী শুধু গোটা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মাত্র ।
তদন্তে প্রাথমিকভাবে এখনও পর্যন্ত তদন্তকারী আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন যে, খুনের পর কীভাবে এক লহমায় বিন্দুমাত্র বল প্রয়োগ না করে মানবদেহ কীভাবে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করা যায়, তার প্রশিক্ষণ অনলাইনে নিয়েছিলেন অভিযুক্ত জয় । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বারুইপুর জেলা পুলিশের আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা একজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, "ঘটনায় একটি হ্যাকস ব্লেডের কথা আমরা জানতে পেরেছি ৷ কিন্তু গোয়েন্দারা উজ্জ্বল চক্রবর্তীর দেহ দেখে প্রাথমিকভাবে অনুমান করছেন যে, অন্য আধুনিক মানের কোনও যন্ত্র অথবা অপারেশন বা অস্ত্রপচারের জন্য ব্যবহৃত কোনও আধুনিক সূক্ষ্ম যন্ত্র দিয়েই অভিযুক্ত ছেলে তাঁর বাবার দেহ, পা, কোমর এবং বুক কেটে মোট ছ টুকরো করেছেন ।"
বারুইপুর জেলা পুলিশের সুপার স্মিতা পুষ্পা জানিয়েছেন, গত 14 নভেম্বর ছেলে জয়ের সঙ্গে তাঁর বাবা উজ্জ্বল চক্রবর্তীর 3,000 টাকার কলেজ ফি নিয়ে গোলমাল হয় । তবে এই গোলমাল যে প্রথমবার তেমনটা নয় । ধৃত ছেলে ও তাঁর মা শ্যামলীকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, বছরের পর বছর মদ্যপান করে শ্যামলী চক্রবর্তী এবং তাঁর ছেলে রাজু চক্রবর্তীকে বেধড়ক মারধর করতেন প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তী ।