বোলপুর, 9 মে : নোবেল প্রাপ্তির পরই অবসাদের অতল গহ্বরে তলিয়ে গিয়েছিলেন কবিগুরু । জীবনে তৃপ্তির লেশমাত্র ছিল না । সে যেন এক অন্য মানুষ । মানসিক অবসাদের কথা জানিয়ে চিঠি লিখলেন পুত্র রথীন্দ্রনাথকে । লেখেন "আমি ডেলিবারেটলি সুইসাইড (ইচ্ছাকৃতভাবে আত্মহত্যা) করতে বসেছিলুম। যা কিছু স্পর্শ করছিলুম সমস্তই যেন ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলছিলুম । এরকম একেবারে উলটো মানুষ যে কী রকম হতে পারে, এ আমার নতুন অভিজ্ঞতা ।" 25 বৈশাখে ETV ভারতের মুখোমুখি হয়ে কবির জীবনের অন্য দিক তুলে ধরলেন রবীন্দ্র গবেষক অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় ।
কবির ঘরে তখন সদ্যই এসেছে নোবেল পদক । গোটা দেশ তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত । বিশ্বে তিনি খ্যাতির শীর্ষে । গোটা বিশ্ব যখন কবির প্রাপ্তিতে আনন্দে আত্মহারা, ঠিক তখন কবির অন্তরেই বাসা বেঁধেছে অন্ধকার । গভীর অবসাদ । রথীন্দ্রনাথকে চিঠিতে লিখলেন তাঁর সমস্ত বেদনার কথা । সেই সঙ্গে লিখলেন তাঁর উত্তরণের পথও । লিখলেন, "তোদের ভয় নেই, এ আমি ছিন্ন করবই । এর ঔষধ আমার অন্তরেই আছে। আমি কিছুদিন সুরুলের ছাদে শান্ত হয়ে বসে আবার আমার চিরন্তন স্বভাবকে ফিরে পাব সন্দেহ নেই । মৃত্যুর যে গুহার দিকে নেমে যাচ্ছিলুম, তার থেকে আবার আলোকে উঠে আসব, কোনও সন্দেহ নেই ।"
কেন এই অবসাদ, আত্মহত্যার চিন্তা ?
বিশ্বভারতীর বাংলাদেশ ভবনের মুখ্য সমন্বয়ক তথা রবীন্দ্র গবেষক অধ্যাপক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, "এটা ব্যাখ্যা করা খুবই মুশকিল । আমরা মনে করি যে কোনও একটা ইহজাগতিক প্রাপ্তি না ঘটলেই বুঝি অবসাদ আসে । কিন্তু, মনস্তত্ত্ব যে বড়ই জটিল, তাই অবসাদের সঠিক কারণ খোঁজা খুবই কঠিন । হতে পারে তিনি নিউরালজিয়ার ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছিলেন বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ।