আলিপুরদুয়ার,4 জুলাই : আলিপুরদুয়ার জেলার দুুুই নম্বর ব্লকের শামুকতলা থানার শক্তিনগর এলাকার 65 বছরের এক বৃদ্ধ দিন চারেক আগে কোরোনা সংক্রামিত হয়ে মারা যান । তাঁর মৃতদেহ কেউ সৎকার করতে না চাওয়ায় অসুবিধায় পড়েছিলেন শামুকতলা থানার OC বিরাজ মুখোপাধ্যায় । এই অবস্থায় OC-কে সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন এলাকার বাসিন্দা তিন জন শ্রমিক। শর্তসাপেক্ষে OC ও রাজি হলেন। অবশেষে ধারসি নদীর চরে PPE কিট পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল তিনজনকে। সাথে হাফ প্যান্ট পরে মুখে গামছা পেঁচিয়ে OC স্বয়ং । OC কেই বৃদ্ধের মুখাগ্নি করতে হয়েছিল। সব ঠিকঠাক ছিল কিন্তু শবদেহ দাহ হবার পর থেকেই ছন্দ পতন ঘটে। বিকাশ মাহাতো, প্রধান অধিকারী ও ভাতু টুডু নামের তিন এলাকাবাসী মৃতদেহ সৎকার করে আসার পরেই আর বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না বলে অভিযোগ । এরপরেই ওই তিন ব্যক্তিকে OC নিজেই থাকা খাওয়ার সব ব্যবস্থা করে দেন।
OC-র আতিথিয়তায় দিনযাপন করছেন তিন শ্মশান যাত্রী - OC
আলিপুরদুয়ারের শামুকতলা থানার শক্তিনগর এলাকায় তিন জন শ্রমিক অভিযোগ করেন কোরোনা আক্রান্ত বৃদ্ধের মৃতদেহ সৎকার করার জন্য তাদের আর গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। শামুকতলা থানার OC বিরাজ মুখোপাধ্যায়ের আতিথিয়তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
বিষয়টি নিয়ে বিকাশ মাহাতো জানান,"তিন জনের খাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন OC সাহেব। থানার পাশেই একটি হোটেল ঠিক করা আছে আমাদের খাবারের জন্য । রাত্রে থাকার জন্য জায়গা নির্ধারণ হয়েছে শামুকতলা বাজারের গরুহাটিতে ।"
শামুকতলা থানার OC বিরাজ মুখোপাধ্যায় বিষয়়়টি নিয়ে জানান, “কোরোনা যুদ্ধে আমরা ব্রতী হয়েছি। আমাদের সব কাজই করতে হবে সাবধানতা অবলম্বন করে। মৃতদেহ সৎকার নিজেই করেছি। এমনকি পেশায় শ্রমিক তিনজনকে সাথে নেওয়া হয়েছিল। সৎকার হয়ে যাবার পরে একটা সমস্যা হয়েছে। তাই তাদের থাকা খাওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা করেছি।এমনকি তাদের তিনজন সহ শ্মশানে যারা গিয়েছিল সবার কোরোনার সোয়াব টেস্ট করা হবে দুইদিনের মধ্যেই। আমিও টেস্ট করাব। তবে ওই তিনজন যাতে অন্য কোথায় না যায় তার জন্য আমিই থানার কাছেই থাকার ব্যবস্থা করেছি।" OC আরও জানান,"কোরোনা আক্রান্তের মৃতদেহ সৎকার করতে যাতে লোকজন পাওয়া যায় তারজন্য বিভিন্ন সংগঠন লোকেদের সাথে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি যাতে শ্মশানে যাবার লোক পাওয়া যায়। ”