কলকাতা, 23 জুন : করোনার জেরে কার্যত লকডাউন চলছে রাজ্যে ৷ এই সময়টায় যোগাভ্যাস করে, ডায়েট মেনে দিন কাটছে অভিনেত্রী অর্পিতা চট্টোপাধ্য়ায়ের (Arpita Chatterjee) ৷ তাঁর মতে, এই সময়টায় কোনও রুটিন না-থাকাটাই রুটিন ৷ পরবর্তী প্রজেক্টগুলির কথাবার্তাও এগিয়ে রাখছেন ৷ সম্প্রতি ওটিটিতে মুক্তি পেয়েছে তাঁর ফিল্ম গুলদস্তা ৷ আসছে স্যাটেলাইটেও ৷ তাই নিয়েও বেশ এক্সাইটেড ৷ এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কারে ইটিভি ভারতের সঙ্গে মন খুলে গল্প করলেন অর্পিতা ৷
ইটিভি ভারত:প্রথমেই বলো, কার্যত লকডাউনের এই সময়টায় তোমার রুটিন কী ?
অর্পিতা : কোনও রুটিন না-থাকাটাই একটা রুটিন ৷ বাড়িতেই আছি ৷ একটু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করি ৷ বাড়িতে থেকে মনোনিবেশ করে জিম করার মানুষ আমি নই ৷ তবে সামান্য জিম বা যোগাভ্যাস কিছু একটা করা দরকার, সবাই তাই বলছেন ৷ হেলদি ডায়েট মেনে চলাটাও জরুরি ৷ সেটাই করার চেষ্টা করছি ৷ সুষম খাওয়া-দাওয়ার উপর খেয়াল রাখছি ৷ পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি ৷ আর যে ছবিগুলি নিয়ে পরিকল্পনা চলছে, সেগুলি নিয়ে কথা বলাও সেরে রাখছি ৷ ডিরেক্টরদের সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছে ৷ এ ছাড়াও দিল্লিতে আমার একটা কোম্পানি রয়েছে, সেটার কাজ অনলাইনে করতে একটু সময় লাগে ৷ আর গান শুনছি, প্রচুর কনটেন্ট দেখছি ৷ সেই প্রথমবারের লকডাউন থেকেই খালি মনে হচ্ছে, আর যেন আমাদের লকডাউন ফেস করতে না হয় !
ইটিভি ভারত:করোনার সময়ে মুক্তি পেয়েছিল তোমার ফিল্ম গুলদস্তা ৷ অনেকেই হলমুখো হতে পারেননি, এ বার ওটিটিতে, স্য়াটেলাইটে সেই ফিল্ম ৷ দর্শকদের জন্য কী বলবে ?
অর্পিতা : 2020-তে লকডাউন শুরু হওয়ার পর দীর্ঘদিন সময়টা থমকে গিয়েছিল ৷ তারপরে আবার সব বিধিনিষেধ উঠল, সব ঠিক হল ৷ তখন একটা উইনডো বেরোয় ৷ যখন সিনেমা হলগুলো খোলে ৷ পুজোর ঠিক আগে 2020 সালের 21 অক্টোবর গুলদস্তা মুক্তি পায় ৷ কিন্তু তখনও সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখার মানসিক অবস্থা বোধহয় মানুষের ছিল না ৷ আমি তাঁদের দোষও দিই না ৷ আমি নিজেই ছবি দেখতে হলে যাইনি ৷ এটা প্রথম হল, যখন আমার একটা ছবি রিলিজ করছে, প্রিমিয়ার হচ্ছে, আর আমি নিজে সেখানে যাইনি ৷ বাড়ির লোকজন যাননি, বাবা-মা যাননি ৷ আমি নিজে তাঁদের যেতে ডিসকারেজ করেছি ৷ তখন সত্যি খুব খারাপ পরিস্থিতি ছিল ৷ 50 শতাংশ মানুষ হলে ঢুকতে পারতেন ৷ সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে রিলিজ করাই যেহেতু দস্তুর, তাই প্রযোজকরা ভেবেছিলেন, এতদিন পর হলে ফিল্ম রিলিজ করলে মানুষ আসবে ৷ কিন্তু তা হয়নি ৷ শুধু গুলদস্তা নয়, বাংলা-হিন্দি যা যা ছবি তখন রিলিজ করেছে, কোনওটাতেই মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা দেখা যায়নি ৷ তারপর আবারও কোভিড আছড়ে পড়ে ৷ স্বাভাবিকভাবেই মানুষের কাছে ফিল্মটি পৌঁছয়নি ৷ আমি খুব খুশি যে এত ভালো একটা কাজ ওটিটি-তে আসছে, স্যাটেলাইটে আসছে ৷ পরিচালক অর্জুনের খুব ভালো কাজ এটা ৷ সিনেমাটা বানানো দর্শকদের জন্যই ৷ গত বছর দেড়েক ধরে দেখছি, ওটিটি প্ল্যাটফর্মই দর্শকদের কাছে পৌঁছনোর সবচেয়ে সফল মাধ্যম ৷ এখন বড় বাজেট, বড় কাস্টিং-এর ছবিও ওটিটি-তেই রিলিজ করছে ৷ বলিউডেও এই দৃষ্টান্ত রয়েছে ৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা খুবই সঠিক সিদ্ধান্ত ৷
আরও পড়ুন:এবার ওটিটি-তে 'গুলদস্তা' নিয়ে হাজির স্বস্তিকা-অর্পিতা-দেবযানী
ইটিভি ভারত:গুলদস্তায় তোমার চরিত্রটা কেমন ?
অর্পিতা: আমার চরিত্রের নাম শ্রীরূপা ৷ এর নানা স্তর আছে ৷ প্রাথমিকভাবে একে খুব দুর্বল বলে মনে হয় ৷ খুব সংবেদনশীল একটা চরিত্র ৷ মেয়েটির মধ্য়ে অনেক গুণ আছে ৷ খুব ভালো নাচ করে ৷ ভালো হোমমেকার ৷ একসময়ে ব্যবসা করেছে ৷ সফল না হলেও নিজের কিছু করার ইচ্ছে রয়েছে ৷ বাচ্চা হওয়া নিয়ে মেয়েটির মেডিক্যাল ইস্যু রয়েছে, সেটাকে নিজেই বড় একটা বিষয় বানিয়ে নিয়েছে ৷ চার দেওয়ালে নিজেকে বন্ধ করে ফেলে সে ৷ পরে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতেও সক্ষম হয় ৷ এই চরিত্র আমাদের শেখায় যে, জীবনে কোনওকিছুই আল্টিমেট নয় ৷ সবাই সবটা পায় না ৷ যেটা জীবনে নেই, সেটা মেনে নিয়েই সবাইকে এগিয়ে যেতে হয় ৷ গুলদস্তাও সেই কথাই বলে ৷ শ্রীরূপাও তাই করেছে ৷ না পাওয়ার কষ্টটাকে ধরে রেখে বসে থাকার কোনও মানে নেই ৷ এটা আমাদের সবার জন্যই একটা শিক্ষা ৷ আমার এই চরিত্র করতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়েছে ৷ কারণ আমি এই চরিত্রের একেবারেই বিপরীত ৷ আমি চেষ্টা করেছি পরিচালকের ভাবনার মতো করে চরিত্রটাকে ফুটিয়ে তুলতে ৷
ইটিভি ভারত: স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ?