ফ্রান্স ও কলকাতা : বহু বছর পর বাঙালি হিসেবে বিশ্বের দরবারে ভারতকে এই খাতি ও সম্মান পাইয়ে দিলেন এক বাঙালি, এক বঙ্গ তনয়া। শুধু বাঙালি বলে নয়। মধুরা এখন সারাদেশে আলোচিত নাম। সারাদেশের গর্ব। এই মুহূর্তে কানে উপস্থিত মধুরার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করল ETV Bharat।
ফোনে উচ্ছ্বসিত ও আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন মধুরা। কথা বলতে বলতে গলা ধরে আসছিল তাঁর। বললেন, "প্রথমে যখন খবর পাই, বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না, এই পুরস্কার আমি পাচ্ছি। জানি না কী বলা উচিত। ভাষা হারিয়ে ফেলছি। স্বপ্ন দেখেছি অনেক। কিন্তু, কখনও ভাবিনি সত্যি সত্যি স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরিত হবে। তবে জীবনে বড় সাফল্য ছুঁতে চেয়েছিলাম। আজ সেই সাফল্যের পথে হেঁটে চলেছি। স্বপ্নের মতো লাগছে। বুঝতে পারছি অনেক বড় দায়িত্ব আমার কাঁধে। ভারতীয় চলচ্চিত্রকে আরও সমৃদ্ধ করার দায়ভার নিতে হবে।"
সেই সঙ্গে মধুরা প্রশ্ন তুললেন, "আমাদের দেশে ক্যামেরার পিছনে কাজ করেন যেসব মহিলা, তাঁদের ক'জনকে আমরা চিনি? ক'জন মহিলা সিনেমাটোগ্রাফারের নাম বলতে পারবেন? ক্যামেরার পিছনের লোকেরা, ক্যামেরার পিছনেই থেকে যান। তাঁদেরকে সামনে আনা হয় না। আমার এই পুরস্কার তাঁদের জন্য।"
পৃথিবীজুড়ে যাঁরা সিনেমাটোগ্রাফিতে স্নাতক হয়েছেন এবং যাঁদের কয়েক বছরের কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাঁদের মধ্যে থেকে এই পুরস্কারের জন্য বেছে নেওয়া হয় একজনকে। চলতি বছর বেছে নেওয়া হয়েছে মধুরাকে। সেই সঙ্গে কানে পুরস্কৃত স্মিতা পাতিল, শাবানা আজমি এবং নন্দিতা দাসেদের মতো ভারতীয় নারীর তালিকায় এবার যুক্ত হল মধুরার নামও। মধুরা এটাও প্রমাণ করলেন, কানে ভারতীয় নারীর অংশগ্রহণ কেবল রেড কার্পেটে সীমাবদ্ধ নয়। নিজের সুদক্ষ কাজ, আত্মবিশ্বাস দিয়ে তাঁরাও পারেন দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে।
মধুরার সঙ্গে ক্যামেরার প্রেম শিশু বয়স থেকে। বাবা-মা দুজনেই সিনেমাটোগ্রাফার। তাই ছোটোবেলায় তাঁদের কাছেই প্রশিক্ষণ পেয়েছেন ছোট্ট মধুরা। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা করেছেন। কলেজে পড়াকালীন ক্যামেরার প্রতি ভালোবাসা আরও বেড়েছিল। তখনই ঠিক করলেন, ক্যামেরা নিয়েই কাজ করবেন। সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিটিউটেও পড়াশোনা করেছেন।