মুম্বই : সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছে CBI । জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে প্রয়াত অভিনেতার বন্ধু, রাঁধুনি, পরিচারক ও অ্যাকাউন্ট্যান্টদের । পরপর পাঁচদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে অভিনেতার ফ্ল্যাটমেট সিদ্ধার্থ পিঠানিকে । সেই জিজ্ঞাসাবাদের সময়ই নাকি CBI-কে সিদ্ধার্থ জানান, 8 জুন সুশান্তের ফ্ল্যাট ছেড়ে যাওয়ার আগে 8টি হার্ডড্রাইভ নষ্ট করে দেন রিয়া চক্রবর্তী ।
লকডাউনের সময় সুশান্তের সঙ্গেই ছিলেন রিয়া । সূত্রের খবর, এরপর হঠাৎই তাঁদের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয় । তারপরই 8 জুন সুশান্তের বান্দ্রার ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যান রিয়া । কিন্তু, যাওয়ার আগে 8টি হার্ডড্রাইভ নষ্ট করে দেন তিনি । যদিও সেই হার্ড ড্রাইভগুলিতে কী ছিল তা অবশ্য জানেন না বলে জিজ্ঞাসাবাদের সময় CBI-কে জানান সিদ্ধার্থ ।
এদিকে পুলিশের কাছে ইতিমধ্যেই ফোন ও ল্যাপটপ সহ একাধিক ডিভাইস জমা দিয়েছিলেন রিয়া । তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রিয়া তাঁদের কাছে যে সব ডিভাইস জমা দিয়েছিলেন সেখানে এমন কিছু ফাইল আছে যা খোলা যাচ্ছে না । কিন্তু, সেই হার্ডড্রাইভগুলিতে ঠিক কী ছিল ? যার জন্য সেগুলিকে নষ্ট করে দিলেন রিয়া, তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি ।
এ প্রসঙ্গে সুশান্তের পারিবারিক আইনজীবী বিকাশ সিং বলেন, "এ পিছনে কোনও বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে । এই ঘটনার সঙ্গে কোনও বড় মাথা যুক্ত রয়েছে মনে হচ্ছে । সবার প্রথম মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার ও ওই এলাকার DCP-কে বরখাস্ত করা হতে পারে ।"
14 জুন সকালে বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় সুশান্তের ঝুলন্ত । সেই সময় অভিনেতার সঙ্গে সিদ্ধার্থ ছাড়াও ছিলেন রাঁধুনি নীরজ সিং, পরিচারক দীপেশ । এই ঘটনার তদন্তভার নেওয়ার পর সিদ্ধার্থ, নীরজ, দীপেশকে নিয়ে বান্দ্রার ফ্ল্যাটে যায় CBI-এর বিশেষ দলটি । ঘটনার পুনর্নির্মাণও করা হয় । যদিও তাঁদের বয়ানে একাধিক অসংগতি রয়েছে । আর সেই কারণেই একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাঁদের ।
সুশান্তের ড্রাগ নেওয়ার কথা তদন্তকারীদের জানিয়েছেন দীপেশ । এদিকে রিয়া জীবনে কখনও ড্রাগ নেননি বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী সতীশ মানশিন্দে । তবে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে ড্রাগ ডিলিংয়ের সঙ্গে রিয়ার যুক্ত থাকার ইঙ্গিত পেয়েছে ED । তারপরই নারকোটিকস কন্ট্রোল বিওরোর (NCB) সঙ্গে যোগাযোগ করেন ED-র তদন্তকারীরা । বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য NCB-কে লিখিতভাবে জানান তাঁরা । এরপর গতকাল রিয়ার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করে NCB । মাদক সঙ্গে রাখা, সেবন করা ও পাচার করার মতো একগুচ্ছ অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে ।