লন্ডন, 14 মে : খুনেরও হুমকি দিয়েছিলেন নীরব মোদি । এমনকি মিথ্যে চুরির অপরাধ দেবেন বলেও ভয় দেখিয়েছিলেন । নীরব মোদির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেন ‘ডামি ডিরেক্টর’ । এই অভিযোগ তাঁরা অপরাধের তালিকা আরও দীর্ঘ করল । এর আগে প্রমাণ লোপাটের জন্য সাক্ষীকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে ।
জালিয়াতি এবং আর্থিক তছরুপের অভিযোগে অভিযুক্ত নীরব মোদি । UK-এ একটি আদালতে তাঁর এই মামলার শুনানি চলছে । গতকাল CBI-র তরফে আদালতে একটি ভিডিয়ো জমা দেওয়া হয় । নীরব মোদির সঙ্গে সংযুক্ত কম্পানিগুলির সঙ্গে যুক্ত ‘ডামি ডিরেক্টররা’ এই ভিডিয়ো রেকর্ড করেছিলেন । ভিডিয়োটি প্রকাশ করেই নীরব মোদির বিরুদ্ধে খুনের হুমকির অভিযোগ আনলেন ডামি ডিরেক্টরা ।
ভিডিয়োয় ছয়জন ভারতীয়র একটি দলকে দেখা যায় । প্রত্যেকেই এই অভিযোগ আনছেন তাঁদের দুবাই ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল । কাউকে ইজিপ্ট বা কাউকে কারিও যেতে বাধ্য করা হয় । যেখানে তাঁদের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয় । এবং সন্দেহজনক কয়েকটি নথিতেও ইচ্ছার বিরুদ্ধে সই করতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ করেন তাঁরা । এই কাজটি করেন নীরব মোদির ভাই নেহাল মোদি ।
ভিডিয়োয় একজনের বক্তব্য 2018 সালের জুন মাসে রেকর্ড করা হয়েছিল । তিনি বলছেন, “আমার নাম আশিষকুমার মোহনভাই । নীরব মোদি আমায় ফোন করেন । বলেন মিথ্যে চুরির অভিযোগ করবেন । এমনকি মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেন । ” অন্যান্য ব্যক্তিরাও প্রায় একই কথা বলেন । প্রত্যেকেই নিজের নিরাপত্তার কথা ভাবছেন । ভয়ে আছেন । ভারতে ফিরতে চান । কিন্তু তাঁদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাঁদের আটকে রাখা হয়েছে ।
জেথওয়া নামের এক ব্যক্তি বলেন, “আমরা নথিগুলিতে সই করতে বাধ্য হয়েছি । নয়তো ওরা আমাদের পাসপোর্ট ফেরত দিত না ।”
যদিও নীরব মোদির প্রতিরক্ষা দলের দাবি, ভিডিয়োতে নীরব মোদিকে দোষী প্রমাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রমাণের অভাব রয়েছে ।
উল্লেখ্য, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে শোধ করেননি নীরব মোদি । সেই ঘটনায় প্রায় 13 হাজার কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে । গ্রেপ্তারি এড়াতে গত বছর দেশ ছেড়ে পালান । কয়েকদিন আগে তাঁকে লন্ডনের রাস্তায় দেখা যায় । ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য টেলিগ্রাফের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী লন্ডনের সোহো এলাকায় হিরের ব্যবসা শুরু করেছিলেন নীরব । এরও এক সপ্তাহ আগে ব্রিটেনের কাছে নীরবকে প্রত্যর্পণের আর্জি জানায় ভারত । নীরব মোদির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার আদালত । 19 মার্চ লন্ডনের হলবর্ন মেট্রো স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয় । পরদিন তাঁকে ওয়েস্টমিনস্টার আদালতে তোলা হলে জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায় ।