মুম্বই, 2 জুন :পারেননি সচিন, লক্ষণ, রাহুলরা ৷ 2003-04-এর বর্ডার-গাভাস্কর ট্রফিতে ড্র নিয়েই খুশি থাকতে হয়েছিল সৌরভের টিম ইন্ডিয়াকে ৷ সেই অপূর্ণ সাধ অবশ্য 2018 সালে পূর্ণ করেছিল বিরাট কোহলির ভারত ৷ কিন্তু জুতোর নীচে একটু খানি পেরেক ছিল সেই জয়ে ৷ কারণ অস্ট্রেলিয়া দল থেকে তখন নির্বাসিত দুই মহীরূহ ডেভিড ওয়ার্নার এবং স্টিভ স্মিথ ৷ রূপকথার ইতিহাস তৈরি হলেও সমালোচকদের দ্বিধা দ্বন্দ্ব থেকে মুক্তি পায়নি টিম ইন্ডিয়া ৷ অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন, 'এ অস্ট্রেলিয়া তো আর সেই অস্ট্রেলিয়া নয়...সমানে সমানে লড়াই হলে মানতাম', ইত্যাদি ইত্যাদি ৷
তাই সকলেই তাকিয়েছিলেন 2020-21-এর বর্ডার গাভাস্কর ট্রফির দিকে ৷ শুরুটা একেবারেই ভাল হয়নি ৷ প্রথম টেস্টের কড়া হার তো ছিলই, তার উপর অ্যাডিলেডে মাত্র 36 রানে ভেঙে পড়েছিল বিরাট বাহিনী ৷ আবার হারের ধাক্কা নিয়ে দেশে ফিরছিলেন কোহলিও ৷ ভারত তখন যাকে বলে মাঝ সাগরে ভাঙা নৌকা ৷ রোহিতরা ছিলেন ঠিকই কিন্তু দরকার ছিল একজন নাবিকের যিনি এই উত্তাল ঢেউ সামলে তরী তীরে ভেড়ানোর আশা জাগাবেন ৷ ঠিক যেন নজরুলের সেই কবিতার ডাক, 'কে আছ জোয়ান, হও আগুয়ান, হাঁকিছে ভবিষ্যৎ' ৷ এগিয়ে এলেন অজিঙ্কা রাহানে, দলের পদাধিকারী সহ-অধিনায়ক তিনি ছিলেন ঠিকই তবে তিনি আদৌ দলে থাকবেন কি না তা নিয়েই কখনও কখনও উঠে যেত প্রশ্ন ৷ লড়াইয়ে পাশে দাঁড়ালেন হনুমা বিহারি, ঋষভ পন্থের মত তরুণরাও ৷ আর নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দেওয়ার জন্য রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রোহিত শর্মা, মহম্মদ সিরাজরা তো ছিলেনই ৷
দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া টিম ইন্ডিয়া দ্বিতীয় ম্য়াচেই কড়া জবাব দিল ৷ শতরান পেলেন অধিনায়ক রাহানে নিজেই ৷ বল হাতে আগুন ঝরালেন বুমরা, সিরাজরা ৷ গুলি খাওয়া বাঘের মত ঘুরে দাঁড়াল 11 জন যোদ্ধা ৷ এরপরেও লড়াই কম ছিল না চোট আঘাতে জেরবার হচ্ছিল গোটা দল ৷ কিন্তু রূপকথা যখন তৈরি হয় কেউ না কেউ তো নায়ক হয়েই যায় ৷ তাই কখনও অশ্বিন হনুমার টেস্ট বাঁচানোর মরণপন লড়াই, কখনও তরুণ ওয়াশিংটন, শামির ব্যাটিং, পরিস্থিতি যতই খারাপ হচ্ছিল ততই আরও একজোট আরও মরিয়া এবং আগ্রাসী হয়ে উঠছিলেন ভারতীয় খেলোয়াড়রা ৷ শেষ পর্যন্ত যখন 2-1 ফলাফলে সিরিজ জিতে ট্রফি তুলল টিম, লাল বলের ঘায়ে, স্লেজিংয়ে তখন ক্ষত বিক্ষত পূজারা, রোহিত, শুভমনরা ৷ এবারের সফরে 32 বছর অজিদের দুর্গ গাব্বার মাঠেও তেরঙা ওড়াতে ভোলেননি রাহানেরা ৷