পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / elections

শীতলকুচির সভায় অমিতের আগাগোড়া নিশানায় মমতা - নির্বাচনী সভা

শুক্রবার কোচবিহারের শীতলকুচিতে জনসভা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ ৷ সভামঞ্চে ভাষণ দিতে উঠে আগাগোড়া আক্রমণ করেন তৃণমূল তৃণমূল সুপ্রিম তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে ৷ বললেন, দিদি কাজ করেন ‘থ্রি টি মডেল’-এ (তানাশাহি, তোলাবাজি, তুষ্টিকরণ) ৷ তাই উত্তরবঙ্গের স্বার্থেই উত্তরবঙ্গবাসীকে বিজেপিকে জেতাতে হবে ৷ কোচবিহারের ন’টি বিধানসভা আসনে ভোট হবে আগামী 10 এপ্রিল ৷

bengal election 2021_amit shah targets mamata banejee at shitalkuchi rally in coochbehar
শীতলকুচিতে অমিত শাহের একমাত্র লক্ষ্য মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়

By

Published : Apr 2, 2021, 1:21 PM IST

শীতলকুচি, 2 এপ্রিল : উত্তরবঙ্গে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে হলে মোদিকে চাই ৷ উত্তরবঙ্গে বিকাশ ঘটাতে হলে মোদিকে চাই ৷ কারণ, মোদির কাজ করেন ‘থ্রি ভি মডেল’-এ (বিকাশ, বিশ্বাস, ব্যাপার বা ব্যবসা) আর দিদি কাজ করেন ‘থ্রি টি মডেল’-এ (তানাশাহি, তোলাবাজি, তুষ্টিকরণ) ৷ শুক্রবার কোচবিহারের শীতলকুচির জনসভায় ঠিক এই ভাষাতেই মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷

আগামী 10 এপ্রিল ভোট হবে কোচবিহারের ন’টি আসনে ৷ একই দিনে ভোট হবে আলিপুরদুয়ারের পাঁচ বিধানসভা কেন্দ্রেও ৷ এদিন তারই প্রচারে শীতলকুচিতে জনসভা করেন অমিত ৷ সভামঞ্চে আগাগোড়া তৃণমূল সুপ্রিম তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কেই আক্রমণ করেন তিনি ৷

অমিত শাহের অভিযোগ, ‘দিদি’ বরাবরই উত্তরবঙ্গকে অবহেলা করেছেন ৷ তাঁর কথায়, রাজ্য়ের রাজধানী ‘‘কলকাতা থেকে কোচবিহারের দূরত্ব 700 কিলোমিটার ৷ কিন্তু দিদির হৃদয় থেকে কোচবিহারের দূরত্ব 7 হাজার কিলোমিটার ৷’’ চা, সিঙ্কোনার বাগান থেকে তামাক চাষ, পাকা রাস্তা থেকে রাজবংশীদের উন্নয়ন ৷ অমিতের অভিযোগ, কোনও ক্ষেত্রেই কোনও কাজ করেনি মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সরকার ৷ কারণ, মমতা উত্তরবঙ্গের কল্যাণ নিয়ে ভাবেন না ৷ তিনি শুধু ভাবেন নিজের ভাইপোর কথা ৷ ভাইপোর উন্নতি, তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন করাই মমতার একমাত্র লক্ষ্য বলে তোপ দাগেন অমিত শাহ ৷

লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, একমাত্র মতুয়া প্রসঙ্গ ছাড়া বাংলার ভোট মরশুমে সরাসরি এনআরসি বা সিএএ নিয়ে খুব বেশি কথা বলতে দেখা যায়নি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ৷ অথচ করোনা আবহের আগে তিনিই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গোটা দেশে এনআরসি ও সিএএ কার্যকরের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন ৷ এ নিয়ে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় একাধিকবার ভোটের প্রচার মঞ্চে মুখও খুলেছেন ৷ কিন্তু গেরুয়া শিবির বিষয়টি কৌশলে এড়িয়েছে ৷ তবে তারা যে তাদের অবস্থান থেকে এক চুলও সরেনি, ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছে তাও ৷ এদিন শীতলকুচিতেও অমিত শাহ সেই আভাস দিয়েছেন ৷

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর মতে, কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গের সবথেকে বড় সমস্য়া হল অনুপ্রবেশ ৷ আর দিদির পক্ষে এই অনুপ্রবেশ ঠেকানো সম্ভব নয় ৷ অমিতের আশ্বাস, বাংলায় বিজেপির সরকার গঠিত হলেই বিএসএফের সঙ্গে আলোচনা করে অনুপ্রবেশ 100 শতাংশ ঠেকানো হবে ৷

আরও পড়ুন :প্রচারে ঝড় তুলতে কোচবিহারে একাধিক সভা বিজেপি-তৃণমূলের

এদিন শীলকুচিতে অমিত যে খুব লম্বা ভাষণ দিয়েছেন, তা নয় ৷ কিন্তু যেটুকু কথা তিনি বলেছেন, তার সবটুকুরই নিশানা ছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ৷ তাঁর ভাষণ শুনে মনে হতেই পারে যে এই নির্বাচন কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মসনদ দখলের লড়াই নয়, বরং তা আদতেই মমতা বনাম মোদির লড়াই ৷ অমিতের দাবি, মোদির প্রশাসন মানেই উন্নয়নের নিশ্চয়তা ৷ কারণ, তিনি ‘থ্রি ভি মডেল’-এ কাজ করেন ৷ কী এই থ্রি ভি মডেল ? এগুলি হল, বিকাশ অর্থাৎ উন্নয়ন, বিশ্বাস অর্থাৎ প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং ব্য়াপার অর্থাৎ ব্য়াবসা ৷ অর্থাৎ মোদি উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করেন এবং নিজের প্রতিশ্রুতি পালন করেন ৷ ব্য়বসা অর্থে অমিত অবশ্যই আর্থিক উন্নয়নের পক্ষে ব্য়বসায়িক পরিকাঠামো তৈরির কথাই বলেছেন ৷ যদিও তার ব্য়াখ্যা তিনি দেননি ৷ লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, অবিজেপিদের বরাবরের অভিযোগ, বিজেপির কাছে ব্য়বসা মানেই দেশের সম্পদ বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া ৷ পছন্দের ব্য়বসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া ৷ এ নিয়ে গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষও কম করা হয় না ৷

একইসঙ্গে অমিত শাহের অভিযোগ, ‘দিদি’র সরকার চলে ‘থ্রি টি মডেল’-এ ৷ যার অর্থ তানাশাহি, তোলাবাজি ও তুষ্টিকরণ ৷ অর্থাৎ অমিতের মতে, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় একজন স্বৈরাচারী ৷ তোলাবাজি এবং স্বজনপোষণই তাঁর সরকারের প্রধান বৈশিষ্ট্য় ৷ যদিও 2 মে-র পর এই পরিস্থিতি আর থাকবে না বলেই দাবি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর ৷ কারণ, এবারের নির্বাচনে তৃণমূলের পরাজয় নিশ্চিত বলেই তাঁর দাবি ৷ এমনকি, নন্দীগ্রামেও মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় যে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে যাবেন, সে বিষয়েও আত্মপ্রত্য়য়ী অমিত শাহ ৷

ABOUT THE AUTHOR

...view details