কলকাতা, 8 মার্চ : সমাজে নারী নির্যাতনের ঘটনা নতুন না । উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত সর্বত্র ঘটছে । তবে কর্মস্থলে মহিলাদের নির্যাতনের ঘটনা নতুন না হলেও তা সামনে আসে না বড় একটা । কারণ, অনেক ক্ষেত্রেই সম্মানহানির ভয়, কাজ হারাবার ভয়ে পিছিয়ে যান মহিলারা । কর্মস্থলে মহিলাদের উপর মানসিক ও শারীরিক হেনস্থা ঘটনা আসলে ক্ষমতার বিন্যাসের উপর দাঁড়িয়ে । কিন্তু মেয়েরা কি প্রতিবাদী হচ্ছেন ? আগের চেয়ে বাড়ছে প্রতিবাদ ?
সাম্প্রতিককালে কর্মস্থল থেকে শিক্ষাক্ষেত্রে এবং অন্যত্র যৌন হেনস্থা তথা নিপীড়নের প্রতিবাদ #মিটু আন্দোলন দেখা গিয়েছে । যার পর সোশাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয় । 2005 সালে এক মার্কিন সমাজকর্মী তারানা বারক প্রথম হ্যাসট্যাগ আন্দোলন শুরু করেন । তবে অভিযোগ ওঠে, অনেক ক্ষেত্রে ঘটনা ভিত্তিহীন, শুধুমাত্র অন্য কোনও রাগের কারণে এই ধরনের পোস্ট করে অভিযুক্তকে বিপাকে ফেলা হচ্ছে । অন্যদিকে নিপীড়িতরা বলছেন, অনেক সময় অফিসের এইচআর বিভাগে নালিশ করেও প্রতিকার পাওয়া যায় না ৷ উল্টে বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করতে বারণ করা হয় ।
পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় এই বিষয়ে বলেন, "আজকাল আগের চেয়ে অনেক বেশি কর্মরত মহিলা আমাদের কাছে এই ধরণের মামলা নিয়ে আসছেন । বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রতিকারও পেয়েছেন তাঁরা ।"
হ্যাসট্যাগ আন্দোলন প্রসঙ্গে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "কোনও মহিলার সঙ্গে অনেক দিন আগে হয়তো খারাপ কিছু ঘটেছিল । তা হয়তো তখন তিনি চেপে গিয়েছিলেন । বহু বছর পর সাহস দেখিয়ে এগিয়ে আসছেন । প্রতিবাদ করছেন । বিভিন্ন সামাজিক ট্যাবুর কারণে তখন হয়তো কাউকে জানাননি, সাহস পাননি । তাঁদের মনে হয়েছে, আমি যদি এই বিষয়ে জনসমক্ষে বলি তাহলে লোকে আমাকেই খারাপ মনে করবে । সময় মতো ব্যবস্থা না নিয়ে পরে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করে হয়তো এক ধরনের মানসিক শান্তি পাওয়া যায় ৷ তবে সোশাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়ে আইনগত সুবিধা মেলে না । অতএব, আইনি সাহায্য পেতে হলে ঘটনা ঘটার পরেই বিষয়টিকে সামনে আনতে হবে, উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে ।"