কলকাতা, 25 ফেব্রুয়ারি : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (TMC Chairperson Mamata Banerjee) সঙ্গে তাঁর দলের দুই নম্বরের সংঘাত কোনও নতুন বিষয় নয় । অতীতে দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতাকেই তৃণমূল সুপ্রিমো সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে । তালিকাটা নেহাতই ছোট নয় । অজিত পাঁজা, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সোমেন মিত্র, মুকুল রায় থেকে হালফিলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ।
কার্যক্ষেত্রে এরা সকলেই এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভীষণ কাছের ছিলেন । এমনকি একটা সময় বলা হত অজিত পাঁজা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডান হাত । তবে সেই অজিত পাঁজা নেত্রীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে দল ছেড়ে ছিলেন । একই ভাবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও মেয়র হিসাবে মমতা সবথেকে বেশি ভরসার পাত্র মনে করেছিলেন । কিন্তু পরবর্তীতে তিনি দলত্যাগ করে তৃণমূল থেকে কংগ্রেসের ফিরেছিলেন । পরে অবশ্য আবার দল বদলে তৃণমূল কংগ্রেসে (Trinamool Congress) ফেরেন সুব্রতবাবু এবং রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রীও হন ।
যাঁর কারণে একটা সময় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল গড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই সোমেন মিত্র পরবর্তীতে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল নেত্রীর হাত ধরেন । মমতার ইচ্ছেতেই তিনি ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ হয়েছিলেন । কিন্তু পরবর্তীতে তিনিও মমতার বিরাগভাজন হয়ে দল ছাড়েন ।
1998 সাল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিন ধরে সবথেকে ভরসার পাত্র ছিলেন মুকুল রায় (Mukul Roy) । তিনি মুকুল রায়কে এতটাই ভরসা করতেন যে 2011 সালে সরকার গঠন করার পর সংগঠনের দায়িত্ব পুরোপুরিভাবে তাঁর হাতে ছেড়ে দেন । ইতিহাস বলছে, মুকুল-মমতার এই বোঝাপড়া দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়নি । সারদা-নারদা আবহে অবিশ্বাস দলের মধ্যেই তাঁকে নিয়ে একটা সন্দেহের পরিবেশ ক্রমেই দূরত্ব তৈরি করেছিল তৃণমূল নেত্রী ও মুকুলের মধ্যে ৷ পরবর্তীতে এর ফল যা হওয়ার তাই হয়েছিল । দল ছাড়তে হয়েছিল মুকুল রায়কে ।
এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (TMC National General Secretary Abhishek Banerjee) কথায় আসা যাক । তিনি মমতার ভ্রাতুষ্পুত্র । মুকুল রায়ের শেষ দিকটায় ক্রমেই উত্থান হচ্ছিল এই যুবনেতার । বর্তমানে তৃণমূলে তিনি কার্যত মমতার ডেপুটি । তারপরও সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে কালীঘাটের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে অতীতের ঘটনা পরম্পরা আবার স্মরণে আসছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।