কলকাতা, 1 নভেম্বর : উন্নয়নের আড়ালে লুকিয়ে থাকে উচ্ছেদের নির্মমতা। সেখানে ঐতিহ্য, ইতিহাস, রুটিরুজি অনেক সময় কড়া চ্যালেঞ্জের সামনে পড়ে যায়। ধর্মতলার ময়দান মার্কেট এবার সেই কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে চলেছে ।
ধর্মতলা চত্বরে অবস্থিত ময়দান মার্কেট, যার পোশাকি নাম ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় মার্কেট ৷ শহর কলকাতার ক্রীড়াপ্রেমী মানুষের কাছে এই বাজার ময়দান মার্কেট নামেই বেশি পরিচিত। প্রায় সাড়ে তিনশোর বেশি দোকান রয়েছে এই মার্কেটে। যার সিংহভাগ ক্রীড়া সরঞ্জামের। এক একর জমির ওপর তিনশোর বেশি ক্রীড়া সরঞ্জামের দোকানের সহাবস্থান, এরকম খুব একটা দেখা যায় না ৷
1960 সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় ওপার বাংলা থেকে আগত উদ্বাস্তু মানুষের রুটিরুজির কথা চিন্তা করে, বিশেষ করে হকারদের একছাতার তলায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে এই মার্কেট তৈরি করেছিলেন। তারপর সময় গড়িয়েছে, খেলাধুলার সরঞ্জামের অন্যতম ঠিকানা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিধানচন্দ্র মার্কেট ওরফে ময়দান মার্কেট। ময়দানের খেলাধুলার প্রসারের সঙ্গে ময়দান মার্কেটের ব্যাপ্তি এবং প্রচারও বেড়েছে। সস্তা, টেকসই ক্রীড়াসরঞ্জামের ঠিকানা বলা যায় এই বাজারকে। এখানে পা দিয়েছেন আমেদ খান থেকে চুনি গোস্বামী, পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়, বলরাম মায় হাল আমলের মেহতাব হোসেন, রহিম নবির মতো তারকারা। নাগরাজের তৈরি করা বুট আর চক্রবর্তীর দোকানের প্যান্ট পড়ে খেলোয়াড়দের মাঠে নামা ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। শুধু ফুটবল বা অন্য খেলা নয় লক্ষীরতন শুক্লা, মনোজ তিওয়ারি, শিবশঙ্কর পালদের মত ক্রিকেটারদের একসময় খেলার সরঞ্জাম কেনার ঠিকানাও ছিল এই ময়দান মার্কেট। তাই এই ময়দান মার্কেটকে শহর কলকাতার এক ঐতিহ্য বলা যায়।