পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / city

শব্দ-ভাষা রাজ্যপাল সুলভ নয়, ধনকড়কে 'পত্রবোমা' মমতার - রাজ্য রাজ্যপাল সংঘাত

মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে রাজ্যপাল বলেছিলেন, "COVID 19 সংক্রান্ত তথ্য গোপন করা বন্ধ করুন । স্বচ্ছভাবে তথ্য পরিবেশন করুন ।" এবার তার পালটা 13 পাতার চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ।

ছবি
ছবি

By

Published : May 2, 2020, 6:10 PM IST

Updated : May 2, 2020, 9:00 PM IST

কলকাতা, 2 মে: ফের মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি গেল রাজভবনে । রাজ্যপালকে তার দু'টি চিঠির জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । রাজ্যপালের লেখা প্রতিটি অভিযোগের জবাব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । গতকাল মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে রাজ্যপাল বলেছিলেন, "COVID 19 সংক্রান্ত তথ্য গোপন করা বন্ধ করুন । স্বচ্ছভাবে তথ্য পরিবেশন করুন ।" পিছিয়ে নেই রাজ্যপালও । চিঠি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাপ্তি স্বীকার করেই রাজ্যপালের পাল্টা, 'এটা রাজনীতি করার সময় নয়'।

রাজ্যপালের পাঠানো 14 পাতার চিঠির জবাবে এবার মুখ্যমন্ত্রী লিখলেন 13 পাতার চিঠি । চিঠির শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "আপনার 23 এবং 24 এপ্রিলের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এটা লেখা।" রাজ্যপালকে তাঁর দু'টি চিঠির জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, রাজ্যপালের থেকে এই ভাষা কাম্য নয় । রাজ্যের মন্ত্রী , আমলারা অপমানিত হয়েছেন । রাজ্যপালের ভাষায় ব্যথিত তিনি । লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এভাবে কথা বলা যায় না ।

রাজ্যপালকে পাঠানো 13 পাতার চিঠির আট নম্বর অনুচ্ছেদে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "...সংক্ষেপে বলতে গেলে, কিছু কিছু দিক আপনার নজর এড়িয়ে যাচ্ছে । সেগুলি হল যদি কোনও বিষয়ে আপনি একমত না হন, বা যদি দেখেন কোনওক্ষেত্রে আপনি যেভাবে চাইছেন, সরকার সেভাবে চলছে না , বা যদি কোনও ভুল নিয়োগ, ভুল নীতি, ভুল সিদ্ধান্ত আপনার চোখে পড়ে তবে তা সরাসরি আমাকে জানান, অন্যান্য মন্ত্রী বা দপ্তর বা সংবাদমাধ্যমের কাছে নয় । তাতেও যদি আপনার সমস্যার সমাধান না হয়, তবে দুর্ভাগ্যবশত যতদিন আমার সরকার ক্ষমতায় আছে, আপনার আর অন্য কিছুই করার নেই ।"

রাজ্যপালকে পাঠানো চিঠির প্রতিলিপি

রাজ্যপালের পাঠানো একের পর এক চিঠিতে যে তিনি বিরক্তি বোধ করছেন, তা আজকের এই 13 পাতার চিঠি থেকেই স্পষ্ট । চিঠি তিনি আরও বলেছেন, "হয়তো অনেকক্ষেত্রে আপনি সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নাও হতে পারেন, কিন্তু সরকার যা চাইবে, তাতে সাক্ষর করা ও মান্যতা দিতে আপনি বাধ্য ।"

চিঠির নবম অনুচ্ছেদে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "সত্য সবসময়েই তিক্ত । কিন্তু এটাই সাংবিধানিক সত্য । যদি আপনি এই বাস্তবটা মানতে না পারেন, তবে আপনাকে আমার চেয়ারে বসা উচিত ছিল, যেটা আদতে কোনওদিনই সম্ভব না ।"

রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে যখন থেকে এসেছেন, তখন থেকেই রাজ্যের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের তিক্ততা বারবার প্রকাশ্যে এসেছে । একাধিকবার একাধিক ইশুতে রাজ্যকে বিড়ম্বনায় ফেলেছেন জগদীপ ধনকড় (অভিযোগ শাসক দলের) । সেগুলি যে মুখ্যমন্ত্রী যে ভালোভাবে নেননি, তাও চিঠিতে জানিয়েছেন । চিঠির 13 নম্বর অনুচ্ছেদে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "আমি জানি আপনি এই চিঠিরও একইভাবে উত্তর দেবেন, যেভাবে আপনি এতদিন দিয়ে এসেছেন । কিন্তু এবার থেকে আমি ঠিক করে নিয়েছে, আপনার চিঠির আর কোনও জবাব আমি দেব না..."

পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, "এই সংকটময় সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার না করার জন্য আপনার কাছে অনুরোধ । কিন্তু আপনি কোরোনা ইশুতে ঠিক তার উলটোটাই করছেন । দয়া করে এই কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্যের একতা নষ্ট করার চেষ্টা করবেন না । দয়া করে রাজ্যে দ্বৈত শাসন আনার চেষ্টা করবেন না । প্রথম দিন থেকে আপনার ব্যবহার রাজ্যবাসীকে অষ্টাদশ শতকে দ্বৈত শাসনের কালো অধ্যায়ের কথা মনে করায় ।"

মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করে টুইট করেছেন রাজ্যপাল । টুইটে তিনি লিখেছেন, "মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিতে আইন বা তথ্য কিছুই নেই । তবে তাঁর রাজ্যের পাশে থাকার আবেদন সমর্থন করছি । এই কঠিন সময়ে আমি মুখ্যমন্ত্রীকে মানুষের পাশে থাকার কথা বলেছি । অবশ্যই তাঁকে চিঠি পাঠাব । কারণ তার চিঠিতে এমন কিছু বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে যা সংবিধানের পরিপন্থী ।

প্রসঙ্গত, গতকাল কোরোনা সংক্রান্ত বুলেটিনও প্রকাশ করেনি রাজ্য । সেই ইশুতেও আজ টুইটে সরব হন রাজ্যপাল ।

Last Updated : May 2, 2020, 9:00 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details