আসানসোল, 28 জুন : নতুন ঝকঝকে গাড়ি । কোনওটির নম্বর প্লেটও লেখা হয়নি এখনও । সেইসব গাড়িই আগাছার জঙ্গলে দাঁড়িয়ে নষ্ট হচ্ছে । একটি দু‘টি নয়, অন্তত 30টি গাড়ি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে । ঘন ঝোপ আর মাটিতে ঢেকে যাচ্ছে সরকারি টাকায় কেনা কোটি কোটি টাকার এই গাড়ি । আসানসোল পৌরনিগমে (Asansol Corporation) সেন্ট্রাল স্টোরে এ ভাবেই নষ্ট হচ্ছে মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে কেনা আবর্জনা পরিষ্কারের গাড়ি ।
কেন্দ্রীয় সমীক্ষায় ভারতের দ্বিতীয় অপরিচ্ছন্ন, নোংরা শহর হিসেবে উঠে এসেছিল আসানসোলের নাম । আর তারপরেই তৎকালীন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি (Jitendra Tiwari) আসানসোলকে গ্রিন এবং ক্লিন তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন । সাফাই কাজে বিশেষ জোর দিয়ে মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্প থেকে কেনা হয়েছিল প্রচুর আবর্জনা ফেলার গাড়ি, ভ্যাট কম্প্রেসার । কিন্তু বর্তমানে সেই গাড়িগুলি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে আসানসোল পৌরনিগমের সেন্ট্রাল স্টোররুমে । এমনকী বেশ কয়েকটি গাড়ি নতুন অবস্থাতেই পড়ে আছে । একদিনের জন্যও ব্যবহার করা হয়নি বলে খবর । দাঁড়িয়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে অন্ততপক্ষে 30টি গাড়ি । যার মূল্য কয়েক কোটি টাকা ।
আরও পড়ুন:বজ্রাঘাতে মৃত্যুর 48 ঘণ্টার মধ্যেই পরিবারকে সরকারি সাহায্য সায়ন্তিকার
কিন্তু কেন এই অবস্থা ? তবে কি প্রয়োজনের বেশি গাড়ি কেনা হয়েছিল ?
আসানসোল পৌরনিগমের প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য অভিজিৎ ঘটক বলেন, "পৌরনিগম অঞ্চলে সাফাইয়ের জন্য আরও বেশি গাড়ির প্রয়োজন এবং তার অভাব আমরা বোধ করি । কিন্তু এই গাড়িগুলিকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না, তার কারণ হচ্ছে পরিকল্পনাহীনতা । চালক এবং সঠিক সাফাইকর্মী না হলে এই গাড়িগুলিকে চালানো যাবে না । সে সব না দেখেই পূর্ববর্তী বোর্ডের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি এই গাড়িগুলিকে ক্রয় করেছিলেন । যার ফলে গাড়িগুলোকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে । তবে আগামী দিনে আমরা চালক এবং সাফাই কর্মী নিয়োগ করে এই গাড়িগুলিকে চালানোর ব্যবস্থা করব ।"
আসানসোল পৌরনিগমে নষ্ট হচ্ছে নির্মল বাংলার কয়েক কোটির গাড়ি আরও পড়ুন:বিধানসভার অন্দরে মুকুলের শক্তিশেল সামলানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ বিজেপির
পরিকল্পনার অভাবেই গাড়িগুলির এই অবস্থা বলে জানিয়েছেন আসানসোল পৌরনিগমের প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ও । তিনি তৎকালীন বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন । তা সত্ত্বেও পূর্ববর্তী বোর্ডের পরিকল্পনাহীনতাকে দায়ী করেছেন । অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, "এই গাড়িগুলোর চালক কিংবা সাফাই কর্মীদের বেতন কোথা থেকে দেওয়া হবে সে সব না ভেবে গাড়িগুলি কেনা হয়েছিল । যার ফলে গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে রয়েছে । তবে বোর্ড মিটিংয়ে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এই গাড়িগুলিকে আবার নতুন করে চালানোর ব্যবস্থা করা হবে ।"
আরও পড়ুন:নুসরতের রোদচশমায় কার প্রতিচ্ছবি ? সরগরম নেটপাড়া
অভিজিৎ ঘটক, অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় দু‘জনে পূর্ববর্তী বোর্ডের মেয়র পারিষদ এবং চেয়ারম্যান ছিলেন । কিন্তু তা সত্ত্বেও পূর্ববর্তী বোর্ডের নামেই তাঁরা দোষ দিচ্ছেন কেন ? অভিজিৎ ঘটকের সাফ বক্তব্য, "আমাদের কোনও কথাই শোনা হত না । জিতেন্দ্র তিওয়ারি নিজের মন মর্জিমাফিক কাজ করতেন ।" যদিও বিষয়টি নিয়ে জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি কোনও কিছুই বলতে রাজি হননি ।