হায়দরাবাদ, 2 জানুয়ারি:বিদেশের তথাকথিত বিভিন্ন বিপ্লবী সংগঠনের (Foreign Revolutionary Organizations) সঙ্গে সখ্য বাড়াতে শুরু করেছে ভারতের মাওবাদীরা (Maoist Party) ৷ সূত্রের দাবি, দীর্ঘ সময় পর মাওবাদীরা তাদের আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটিকে (International Affairs Committee) ফের একবার প্রথম সারিতে নিয়ে এসেছে ৷ সেই কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মাওবাদী নেতা অমৃতকে (Amrit) ৷ গোয়েন্দাদের হাতে আসা তথ্য বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার মাওবাদী পার্টি এবং সংগঠনগুলির সমন্বয় কমিটি (Coordination Committee of Maoist Parties and Organizations of South Asia) বা কমপোসার (CCOMPOSA) পথে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এদেশের মাওবাদীরা ৷ আপাতত সেদিকেই মনোযোগ দিয়েছে তারা ৷
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যে মাওবাদী সংগঠনগুলি সক্রিয় রয়েছে, সেগুলির অধিকাংশই কমপোসার সদস্য ৷ অতীতে এই কমিটির মাধ্যমেই নেপাল, বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপিন্সের মাওবাদী সংগঠনগুলি তুর্কি, জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইতালির মতো দেশের তথাকথিত বৈপ্লবিক সংগঠনগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলত ৷ 2005 থেকে 2011 সালের মধ্য়ে ফিলিপিন্সের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা ভারতের মাওবাদীদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতেন ! এই বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণও রয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট সূত্রের ৷
আরও পড়ুন:বিজাপুরে মাওবাদী হামলায় শহিদ ডিআরজি জওয়ান
কিন্তু, এর মধ্যেই ভারতের নানা প্রান্তে মাওদমন অভিযান জোরদার করা হয় ৷ তারই জেরে 2009 সালে দিল্লিতে কোবাড গান্ধিকে গ্রেফতার করা হয় ৷ 2010 সালে আদিলাবাদে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় মাও নেতা আজাদের ৷ পরবর্তী সময়ে পশ্চিমবঙ্গের লালগড়ে যৌথবাহিনীর অভিযানে প্রাণ যায় মাওনেতা কিষেণজির ৷ এতে মাওবাদী সংগঠন অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ে ৷ এরপর সংগঠনের অন্দরেই বিভিন্ন নেতাদের মধ্যে বিবাদ ও স্বার্থের সংঘাত শুরু হয় ৷ ফলে আন্তর্জাতিক পরিসর থেকে ভারতের মাওবাদীদের দূরত্ব বাড়ে ৷
এই প্রেক্ষাপটে ফের একবার ফিলিপিন্সের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলির সঙ্গে সখ্য বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে ভারতের মাওবাদীরা ৷ সূত্রের দাবি, ইতিমধ্য়েই দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে যোগাযোগ শুরু হয়েছে ৷ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভিডিয়ো কলে বৈঠক চলছে ৷ এমনকী, আগামী 16 জানুয়ারি দিনটি বিশেষভাবে পালন করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ ফিলিপিন্সের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জোসে মারিয়া সিসন গত মাসের (ডিসেম্বর, 2022) 16 তারিখ প্রয়াত হন ৷ তাঁর স্মরণেই আগামী 16 জানুয়ারি বিক্ষোভ প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷
এদিকে, তেলাঙ্গানার গোয়েন্দা বিভাগ অতি সম্প্রতি অমৃত নামে এক মাওনেতার কথা জানতে পারে ৷ তবে, তিনি যে আদতে কে, তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয় ৷ যদিও মনে করা হচ্ছে, অমৃত আসলে কোনও মাওনেতার ছদ্মনাম ! গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুমান, দলের পলিটব্যুরো সদস্য মাল্লোজুলা বেণুগোপাল রাও ওরফে সোনু দাদা, সামরিক শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ত্রিপ্পিরি তিরুপতি ওরফে চেতন এবং অন্যতম প্রবীণ নেতা উকে গণেশের মধ্যে যেকোনও একজন এই অমৃত হতে পারেন !