নয়াদিল্লি : সব ক্ষেত্রেই প্রযুক্তিগত উন্নতির জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী । সেই আহ্বানকে মাথায় রেখে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা দেশেই সবচেয়ে কম খরচে অপটিক্যাল স্পেকট্রোগ্রাফ তৈরির পরিকল্পনা করেছেন এবং তা তৈরি করেছেন । এটা একেবারে নতুন মহাবিশ্বের দূরবর্তী কোয়ারস এবং ছায়াপথে অদৃশ্য আলোর উৎসগুলি আবিষ্কার করতে পারে, ছায়াপথের চারপাশে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলগুলির আশপাশের অঞ্চল এবং মহাজাগতিক বিস্ফোরণের সন্ধান করতে পারে ।
লক্ষণীয় যে এই স্পেকট্রোগ্রাফকে বাইরে থেকে আমদানি করলে, যা খরচ হত, এই ক্ষেত্রে তার থেকে 2.5 গুণ কম খরচ হয়েছে । আর এক ফোটন প্রতি সেকেন্ডের মতো কম ফোটন রেটে এটা আলোর উৎস সনাক্ত করতে পারে । যন্ত্রটি তৈরির খরচ প্রায় চার কোটি টাকা ।
ভারতে যত স্পেকট্রোগ্রাফ রয়েছে, তার মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় । এটাকে উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালের কাছে অবস্থিত কোনও জায়গায় ৩.৬ এম দেবস্থল অপটিক্যাল টেলিস্কোপ (ডিওটি) সফলভাবে কার্যকর করা হয়েছে । তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই স্পেকট্রোগ্রাফটি কেবলমাত্র দেশের মধ্যে নয়, এশিয়াতেও সবচেয়ে বড় ।
সাম্প্রতিক অতীত পর্যন্ত ব্যয়বহুল এই স্পেকট্রোগ্রাফগুলি বিদেশ থেকে আমদানি করা হত । অ্যারি-দেবস্থল ফেন্ট অবজেক্ট স্পেকট্রোগ্রাফ অ্যান্ড ক্যামেরা (এডিএফওএসসি) নামে অভিহিত এই অপটিক্যাল স্পেকট্রোগ্রাফটি নৈনিতালের আর্যভট্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ অবজারভেসনাল সায়েন্সেস (এআরআইইএস)-এ দেশীয় প্রযুক্তিতে পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং তৈরি করা হয়েছে । এআরআইইএস হল ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ (ডিএসটি) এর একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান । এআরআইইএস এর বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও বৈজ্ঞানিক দল ড. অমিতেশ ওমরের নেতৃত্বে কাজ করেন । তাঁরা স্পেকট্রোগ্রাফ এবং ক্যামেরার বিভিন্ন অপটিক্যাল, যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিন ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করেন এবং তার বিকাশ ঘটান ।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একেবারে নতুন মহাবিশ্বে দূরবর্তী কোয়ারস এবং ছায়াপথ, গ্যালাক্সির চারপাশে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের আশপাশের অঞ্চল, কসমিক বিস্ফোরণ এবং অত্যন্ত শক্তিশালী গামা-রে বিস্ফোরণ, তরুণ এবং বিশাল নক্ষত্র এবং অজ্ঞাত বামন ছায়াপথ নিয়ে গবেষণা করার জন্য স্পেকট্রোগ্রাফ ব্যবহার করেন ।
এই প্রচেষ্টার প্রশংসা করে এআরআইইএস এর ডিরেক্টর অধ্যাপক দীপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভারতে এডিএফওএসসি এর মতো জটিল যন্ত্রপাতি দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করা আসলে অ্যাসট্রোনমি ও অ্যাসট্রোফিজিক্সের ক্ষেত্রে ‘আত্মনির্ভর’ হওয়ার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ।’’