পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / bharat

Brutal Murder in Dehradun: দেরাদুনে নৃশংস খুন ! স্ত্রীকে হাতুড়ির আঘাত-ইনজেকশন স্বামীর

স্বামী-স্ত্রীর কথাকাটি চরম পর্যায়ে পৌঁছয় ৷ স্বামী স্ত্রী'কে হাতুড়ি দিয়ে মারধর করে ৷ পরে ইনজেকশনের মাধ্যমে বিষ প্রয়োগে খুন করে (Husband kills wife by injecting poison due to domestic dispute in Dehradun) ৷

Murder
ETV Bharat

By

Published : Dec 20, 2022, 2:12 PM IST

দেরাদুন, 20 ডিসেম্বর: স্ত্রীকে নৃশংসভাবে খুন করল স্বামী ৷ প্রথম তাঁকে হাতুড়ি দিয়ে মারধর করে স্বামী ৷ এরপর বিষের ইনজেকশন দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে ৷ মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরাখণ্ডের রায়পুর থানার সোডা সরোলি এলাকার ৷ স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ ওই ঘাতক হাতুড়ি আর বিষের শিশি-সহ ইনজেকশনের সিরিঞ্জও উদ্ধার করা হয়েছে (Husband murders wife injecting poison in Dehradun Uttarakhand) ৷

দেরাদুনের এসএসপি দলীপ সিং জানিয়েছেন, 2010 সালে পিঙ্কি দেবীর (26) সঙ্গে সেই রাজ্যেরই বীরেন্দ্র কুমার ওরফে কৃষ্ণর বিয়ে হয় ৷ দম্পতির 3 সন্তান রয়েছে ৷ 13 ডিসেম্বর বিকেলে বীরেন্দ্র কাজ থেকে বাড়ি ফেরেন ৷ এরপর ঘরের কাজকর্ম নিয়ে স্ত্রী'র সঙ্গে কথাকাটাকাটি শুরু হয় (Domestic Violence) ৷ দেখতে দেখতে সেই তক্কাতক্কি ভয়াবহ আকার নেয় ৷ বীরেন্দ্র তিন সন্তানকে একটি ঘরে বন্ধ করে দেয় ৷ এরপর একটি হাতুড়ি দিয়ে স্ত্রী'র পেট এবং পিঠে আঘাত করতে থাকে ৷ বেশ কয়েকবার এরকম মারধরে স্বভাবতই গুরুতর জখম হন স্ত্রী পিঙ্কি দেবী ৷

বীরেন্দ্র তার সন্তানদের ধমকি দেয়, তারা যেন কোনও ভাবে এই ঘটনা কাউকে না বলে ৷ কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে তারা বলবে, মা বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে পড়ে গিয়ে জখম হয়েছেন ৷ বীরেন্দ্র অন্য ঘরে চলে যায় এবং স্ত্রী আরেকটি ঘরে যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন ৷ পরে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ৷ 14 ডিসেম্বর সকালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্ত্রী'কে কাছাকাছি এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায় ৷ চিকিৎসক পরিস্থিতি গুরুতর বুঝে পিঙ্কি দেবীকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভরতির পরামর্শ দেন ৷ কিন্তু বীরেন্দ্র কোনও বড়ো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে জখম স্ত্রীকে রায়পুরের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় ৷ সেখানও চিকিৎসকেরা প্রাথমিক চিকিৎসা করে পিঙ্কি দেবীকে সঙ্গে সঙ্গে কোনও বড়ো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ারই পরামর্শ দেন ৷ কিন্তু বীরেন্দ্র স্ত্রীকে ওই অবস্থায় বাড়িতে ফিরিয়ে আনে ৷

আরও পড়ুন: সিওয়ান থেকে ধর্ষণে অভিযুক্তকে গ্রেফতার কলকাতা পুলিশের

15 ডিসেম্বর স্ত্রী পিঙ্কি দেবীর অবস্থা আরও খারাপ হয় ৷ তিনি যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন ৷ ওইদিন রাতে তাঁকে খেতে দেওয়া হলে তিনি বমি করে ফেলেন ৷ এরপর 16 ডিসেম্বর স্বামী বীরেন্দ্র ফের বাড়ির নিকটবর্তী আরেকটি ক্লিনিকে নিয়ে যায় ৷ সেখানে পিঙ্কি দেবীর আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা হয় ৷ তাতে তাঁর পেটের ভিতরে গুরুতর জখমের ছবি ধরা পড়ে ৷ এবারও চিকিৎসক কোনও বড়ো হাসপাতালে ভরতি করার পরামর্শ দেন ৷ তবে এবারও বীরেন্দ্র আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্ত্রীকে বাড়িতেই ফিরিয়ে আনে ৷

16 ডিসেম্বর বিকেল নাগাদ বীরেন্দ্র কিছুক্ষণের জন্য বাড়ির বাইরে যায় ৷ সেই সুযোগে জখম পিঙ্কি বিহারে তাঁর ভাই রঞ্জিতকে ফোন করে সব ঘটনা খুলে বলেন ৷ তিনি এও জানান যে, এবার তিনি আর বাঁচবেন না ৷ স্বামী ঘরে ফিরলে পিঙ্কি দেবী তাকে জানিয়ে দেন যে, বীরেন্দ্রর মারধরের ঘটনা তিনি ভাইকে জানিয়ে দিয়েছেন ৷ ওই দিন গভীর রাতে স্বামী স্ত্রী পিঙ্কিকে বিষের ইনজেকশন দেয় ৷ 17 ডিসেম্বর আনুমানিক রাত 3টে নাগাদ পিঙ্কির মৃত্যু হয় ৷

17 ডিসেম্বর পিঙ্কির ভাই রঞ্জিত বিহার পুলিশের কাছ থেকে কোনও রকমে রায়পুর পুলিশের নম্বর জোগাড় করেন এবং বোনের মর্মান্তিক ঘটনা বলেন ৷ খবর পেয়ে পুলিশ বীরেন্দ্রর বাড়িতে পৌঁছয় ৷ পুলিশ আধিকারিক কুন্দন সিংহ সেখানে পৌঁছলে বীরেন্দ্র জানায়, সে স্ত্রীর দেহ সৎকারে তাঁকে হরিদ্বারে নিয়ে যাচ্ছেন ৷ তারই প্রস্তুতি চলছে ৷

পুলিশ তাকে পিঙ্কি দেবীর মৃত্যুর কারণ জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, 13 ডিসেম্বর তিনি সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হন ৷ এরপর তাঁকে নিয়ে বীরেন্দ্র অনেক জায়গায় চিকিৎসার জন্য ঘুরেছে ৷ কিন্তু স্ত্রীকে বাঁচাতে পারেনি ৷ এতে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ বীরেন্দ্রকে আটক করে এবং পিঙ্কি দেবীর মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠায় ৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তিনজন চিকিৎসক জানান, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর চোট রয়েছে ৷ অন্ত্র পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷

এই রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশ খুনের অভিযোগে বীরেন্দ্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ৷ চাপের মুখে সব সত্যি কথা বলে ফেলে বীরেন্দ্র ৷ এরপর সন্তানদের বয়ানও নেওয়া হয় ৷ সব মিলিয়ে পরিষ্কার প্রমাণিত হয়, বীরেন্দ্র তাঁর স্ত্রী পিঙ্কিকে মারধর করে এবং পরে বিষ প্রয়োগে খুন করেছে ৷

আরও পড়ুন: ফোনে বেশি সময় কথা বলায় মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন

ABOUT THE AUTHOR

...view details