দেরাদুন, 20 ডিসেম্বর: স্ত্রীকে নৃশংসভাবে খুন করল স্বামী ৷ প্রথম তাঁকে হাতুড়ি দিয়ে মারধর করে স্বামী ৷ এরপর বিষের ইনজেকশন দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে ৷ মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরাখণ্ডের রায়পুর থানার সোডা সরোলি এলাকার ৷ স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ ওই ঘাতক হাতুড়ি আর বিষের শিশি-সহ ইনজেকশনের সিরিঞ্জও উদ্ধার করা হয়েছে (Husband murders wife injecting poison in Dehradun Uttarakhand) ৷
দেরাদুনের এসএসপি দলীপ সিং জানিয়েছেন, 2010 সালে পিঙ্কি দেবীর (26) সঙ্গে সেই রাজ্যেরই বীরেন্দ্র কুমার ওরফে কৃষ্ণর বিয়ে হয় ৷ দম্পতির 3 সন্তান রয়েছে ৷ 13 ডিসেম্বর বিকেলে বীরেন্দ্র কাজ থেকে বাড়ি ফেরেন ৷ এরপর ঘরের কাজকর্ম নিয়ে স্ত্রী'র সঙ্গে কথাকাটাকাটি শুরু হয় (Domestic Violence) ৷ দেখতে দেখতে সেই তক্কাতক্কি ভয়াবহ আকার নেয় ৷ বীরেন্দ্র তিন সন্তানকে একটি ঘরে বন্ধ করে দেয় ৷ এরপর একটি হাতুড়ি দিয়ে স্ত্রী'র পেট এবং পিঠে আঘাত করতে থাকে ৷ বেশ কয়েকবার এরকম মারধরে স্বভাবতই গুরুতর জখম হন স্ত্রী পিঙ্কি দেবী ৷
বীরেন্দ্র তার সন্তানদের ধমকি দেয়, তারা যেন কোনও ভাবে এই ঘটনা কাউকে না বলে ৷ কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে তারা বলবে, মা বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে পড়ে গিয়ে জখম হয়েছেন ৷ বীরেন্দ্র অন্য ঘরে চলে যায় এবং স্ত্রী আরেকটি ঘরে যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন ৷ পরে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ৷ 14 ডিসেম্বর সকালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্ত্রী'কে কাছাকাছি এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায় ৷ চিকিৎসক পরিস্থিতি গুরুতর বুঝে পিঙ্কি দেবীকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভরতির পরামর্শ দেন ৷ কিন্তু বীরেন্দ্র কোনও বড়ো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে জখম স্ত্রীকে রায়পুরের একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় ৷ সেখানও চিকিৎসকেরা প্রাথমিক চিকিৎসা করে পিঙ্কি দেবীকে সঙ্গে সঙ্গে কোনও বড়ো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ারই পরামর্শ দেন ৷ কিন্তু বীরেন্দ্র স্ত্রীকে ওই অবস্থায় বাড়িতে ফিরিয়ে আনে ৷
আরও পড়ুন: সিওয়ান থেকে ধর্ষণে অভিযুক্তকে গ্রেফতার কলকাতা পুলিশের
15 ডিসেম্বর স্ত্রী পিঙ্কি দেবীর অবস্থা আরও খারাপ হয় ৷ তিনি যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন ৷ ওইদিন রাতে তাঁকে খেতে দেওয়া হলে তিনি বমি করে ফেলেন ৷ এরপর 16 ডিসেম্বর স্বামী বীরেন্দ্র ফের বাড়ির নিকটবর্তী আরেকটি ক্লিনিকে নিয়ে যায় ৷ সেখানে পিঙ্কি দেবীর আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা হয় ৷ তাতে তাঁর পেটের ভিতরে গুরুতর জখমের ছবি ধরা পড়ে ৷ এবারও চিকিৎসক কোনও বড়ো হাসপাতালে ভরতি করার পরামর্শ দেন ৷ তবে এবারও বীরেন্দ্র আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্ত্রীকে বাড়িতেই ফিরিয়ে আনে ৷