গাজিয়াবাদ, 25 এপ্রিল : করোনায় আক্রান্ত 70 বছরের বিদ্যা দেবী ৷ কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বদলে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা একটি গাড়ির পিছনের সিটে শুয়ে রয়েছেন তিনি ৷ গাড়ির জানলা দিয়েই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অক্সিজেন সরবরাহকারী নল ৷ অক্সিজেন মাস্ক মুখে সেঁটে কোনও মতে শ্বাস-প্রশ্বাস চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি ৷
রবিবার এমনই ছবি দেখা গেল দিল্লি লাগোয়া গাজিয়াবাদের একটি গুরুদ্বারের বাইরে ৷ করোনা কালে আর্তদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিল গুরুদ্বার কর্তৃপক্ষ ৷ শ্বাসকষ্টে ছটফট করতে থাকা রোগীদের জন্য সাধ্যমতো বিনামূল্যে সরবরাহ করা হল অক্সিজেন ৷
সূত্রের খবর, ভাঁড়ারে জমানো টাকা খরচ করেই সামান্য পরিমাণে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনেছে গাজিয়াবাদের এই গুরুদ্বারটি ৷ কোভিড রোগীদের প্রয়োজনে সেই অক্সিজেনই সরবরাহ করছে তারা ৷
রিক্সায়, গাড়িতে করে কোভিড রোগীদের গুরুদ্বারে নিয়ে আসছেন তাঁদের আত্মীয়রা ৷ আর ঘাড়ে করে কালো রঙের অক্সিজেন সিলিন্ডার বয়ে আনছেন গুরুদ্বারের স্বেচ্ছাসেবকরা ৷ তারপর তা দেওয়া হচ্ছে করোনা আক্রান্তকে ৷ রোগী ঠিক মতো অক্সিজেন পাচ্ছেন কিনা, তা অবশ্য দেখতে হচ্ছে পরিবারের সদস্যদেরই ৷
আরও পড়ুন :বিনামূল্যে রাজ্যবাসীকে কোভিড ভ্যাকসিন দেবে মহারাষ্ট্র সরকার
এমনই এক ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মাকে ভর্তি করার জন্য একের পর এক কোভিড হাসপাতাল ছুটে বেরিয়েছেন তিনি ৷ অক্সিজেনের জন্য খোঁজ চালিয়েছেন সর্বত্র ৷ কিন্তু কোথাও মেলেনি জীবনদায়ী এই বাষ্প ৷ শেষমেশ এখানকার গুরুদ্বার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই ব্য৷ক্তি ৷ তারা দ্রুত তাঁর মাকে এখানে নিয়ে আসতে বলেন ৷
গুরুদ্বারের সভাপতি রাম্মি জানান, দিল্লিতে করোনা পরিস্থিতি জটিল হওয়ার পর থেকেই অক্সিজেনের আকাল শুরু হয়েছে ৷ এই প্রেক্ষাপটে তিন দিন আগেই বিনামূল্যে করোনা আক্রান্তদের অক্সিজেন দেওয়ার কাজ শুরু করেন তিনি ৷ রাম্মি বলেন, ‘‘রাস্তায় পড়ে থেকে মানুষ মরে যাচ্ছে ৷ তাই আমরা এই পরিষেবা চালু করেছি ৷’’ রাম্মি জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধে পর্যন্ত এভাবে অন্তত 700 রোগীর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে ৷ তবে কয়েকজন অক্সিজেন নেওয়ার পরও মারা যান ৷