নয়াদিল্লি, 14 নভেম্বর: নাবালক এবং নাবালিকাদের যৌন হেনস্থার (Sexual Exploitation) হাত থেকে রক্ষা করতেই পকসো (POCSO) আনা হয়েছিল ৷ কিন্তু, পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে কম বয়সীরা যদি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে তাদের ক্ষেত্রে কখনই এই আইন প্রয়োগ করা যায় না ৷ এই আইন প্রণয়নের তেমন কোনও উদ্দেশ্যও নেই ৷ এক পর্যবেক্ষণে এমটাই জানাল দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court) ৷ একইসঙ্গে, আদালত এও মনে করে যে অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত প্রত্যেকটি মামলা সমান গুরুত্ব দিয়ে আলাদা আলাদাভাবে তলিয়ে দেখা উচিত ৷ কারণ, হেনস্থার শিকার কিশোর-কিশোরীকে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার জন্য কিছু ক্ষেত্রে চাপ দেওয়া হতে পারে ৷
সংশ্লিষ্ট একটি মামলার প্রেক্ষিতে এই মত প্রকাশ করেছে আদালত ৷ এই মামলায় 17 বছরের এক কিশোরীকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে ৷ অভিযুক্ত যুবক আবার ওই কিশোরীকে বিয়েও করেছেন ৷ এই ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে পকসো (Protection of Children from Sexual Offences)-এর আওতায় মামলা রুজু করা হয় ৷
আরও পড়ুন:সহপাঠীকে গায়ের জোরে মঙ্গলসূত্র ! পকসো আইনে অভিযুক্ত পড়ুয়া
শুনানি চলাকালীন 'আক্রান্ত' কিশোরী আদালতে সাক্ষী দেয় ৷ তার ভিত্তিতে আদালতের পর্যবেক্ষণ হল, এই কিশোরীকে ওই যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর জন্য জোর করা হয়নি ৷ এবং তাদের মধ্যে যে যৌন সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল, তাও দু'জনের সম্মতিতেই হয়েছিল ৷ কিশোরীর বয়ান থেকেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ৷ যার ভিত্তিতে অভিযুক্ত যুবকের জামিনের আবেদন আদালত মঞ্জুর করে ৷
সংশ্লিষ্ট মামলায় বিচারপতি জসমীত সিং (Justice Jasmeet Singh) তাঁর নির্দেশনামায় বলেন, "আমার মতে, 18 বছরের কম বয়সীদের যৌন হেনস্থা থেকে রক্ষা করার জন্যই পকসো আইন আনা হয়েছিল ৷ অল্পবয়সীদের প্রেমের সম্পর্ককে অপরাধ হিসাবে গণ্য করার জন্য কখনই এই আইন তৈরি করা হয়নি ৷" এর সঙ্গেই এই ধরনের প্রতিটি মামলাকে সমান গুরুত্ব দিয়ে আলাদা আলাদাভাবে খতিয়ে দেখাও দরকার বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি ৷ আদালতের মনে হয়েছে, যদি প্রেম এবং পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হয়, তাহলে জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে তা অবশ্যই বিবেচ্য হওয়া উচিত ৷