সীতাপুর, 23 নভেম্বর: মেহরৌলির ছায়া এবার উত্তরপ্রদেশে ৷ অভিযোগ, শ্রদ্ধা ওয়ালকারের মতো খুন করে স্ত্রীর দেহ কেটে টুকরো টুকরো করেছে এক ব্যক্তি ৷ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের সীতাপুরে ৷ স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে ৷ তারপর বন্ধুর সাহায্যে তাঁর দেহাংশ টুকরো টুকরো করে মাঠে ছড়িয়ে দিয়েছে স্বামী ৷ পুলিশ স্বামী ও তার বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে ৷ স্বামীর নাম পঙ্কজ মৌর্য (Man allegedly strangled his wife and cut her body into pieces in Uttar Pradesh) ৷
পঙ্কজের সঙ্গে বারাবাঁকির জ্যোতির (38) বিয়ে হয় 10 বছর আগে ৷ সম্প্রতি সে সন্দেহ করে, স্ত্রী বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ৷ তাই সুপরিকল্পিতভাবে খুনের ছক কষে পঙ্কজ ৷ সীতাপুর এসপি জি সুশীল চন্দ্রভান জানিয়েছেন, 8 নভেম্বর রামপুর কালান থানা এলাকার গুলহেরিয়া গ্রামের মাঠ থেকে এক মহিলার দেহাংশ পাওয়া যায় ৷ পরে সেগুলি জ্যোতির বলে চিহ্নিত করে পুলিশ ৷ এসপি আরও জানান, মহিলার মাথা-কাটা দেহ, ক্ষতবিক্ষত ডান হাত এবং পা পাওয়া গিয়েছে মাঠ থেকে ৷ ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের মত, ওই দেহাংশগুলি কোনও মহিলার ৷ তবে সেটা নিশ্চিত করতে হবে ৷ মাঠ থেকে একটি বিকৃত মুখ পায় পুলিশ ৷ পুলিশ বিশেষজ্ঞদের ডেকে পাঠায় তার স্কেচ তৈরির জন্য ৷ মুখটি কার ? সে পরিচয় জানতে স্কেচের কপি বারাবাঁকি, সীতাপুর, হারদৌই, রায় বরেলি, লখনৌ এবং সুলতানপুরে বিতরণ করা হয় ৷
আরও পড়ুন: হিট অফ দ্য মোমেন্টে খুন করেন শ্রদ্ধাকে, আদালতে দাবি আফতাবের; জরুরি 10 তথ্য
কয়েকদিন বাদে বারাবাঁকি থেকে মালতী সিং নামের এক প্রৌঢ়া পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ তিনি নিজেকে ওই মহিলার মা বলে দাবি করেন ৷ এরপর পুলিশ তাঁকে দেহ থেকে উদ্ধার হওয়া জামাকাপড়গুলি দেখালে তিনি সঙ্গে সঙ্গে সেগুলি তাঁর মেয়ে জ্যোতির বলে চিহ্নিত করেন ৷ সিধৌলির সার্কল অফিসার যাদবেন্দ্র যাদব বলেন, "20 নভেম্বর আমরা তাঁর স্বামী পঙ্কজকে খুঁজে বের করি ৷ 15 নভেম্বর থেকে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছিল না ৷"
পঙ্কজকে তার স্ত্রীর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে স্ত্রীর নিরুদ্দেশ হওয়া নিয়ে যথার্থ কোনও কারণ বলতে পারেনি সে ৷ চাপের মুখে পড়ে সে স্বীকার করে নেয়, স্ত্রীকে সে খুন করেছে ৷ মঙ্গলবার, পুলিশের একটি দল তার বাড়িতে অভিযান চালায় ৷ সেখান থেকে রক্তমাখা জামাকাপড় এবং ধারালো একটি ছুরি খুঁজে পায় ৷ তারপর তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে ৷ পঙ্কজ পুলিশকে জানায়, সে একটি ওষুধের দোকানে কাজ করত এবং বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হয়ে যেত ৷
তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় পঙ্কজ বলেছে, "প্রতিবেশীদের কাছ থেকে প্রায়ই শুনতাম যে, জ্যোতিকে অন্য পুরুষের সঙ্গে ঘুরতে দেখা গিয়েছে ৷ সে মাদক নিতেও শুরু করেছিল ৷ আমি তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি ৷ কিন্তু তাঁরাও এ বিষয়ে অসহায় ছিলেন ৷" সে স্বীকার করে, 8 নভেম্বর রাতে জ্যোতির সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তার ৷ তারপর পঙ্কজ জ্যোতিকে খুন করে ৷ বন্ধু দুজান পাসির সাহায্যে দেহটি টুকরো টুকরো করে সেগুলি বাড়ি থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি মাঠে ছড়িয়ে দেয় পঙ্কজ ও দুজান ৷ এই অপরাধ ঘটানোর আগে পঙ্কজ তার দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে আত্মীয়ের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল ৷
আরও পড়ুন: প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর দেহাংশের খোঁজে ডুবুরি