পাকিস্তানে থাকা জঙ্গিদের ওপর হামলা চালাতে আমাদের সেদেশের সীমানায় ঢোকার প্রয়োজন নেই । আমাদের বায়ুসেনা এখন প্রতিবেশী দেশের সম্পূর্ণ অজ্ঞাতসারে, আমাদের আকাশসীমার মধ্যে থেকেই জঙ্গিঘাঁটির ওপর বজ্রপাত ঘটাতে পারে । রাফাল যুদ্ধবিমান এসে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই এই অসম্ভবও এখন সম্ভব । এই বিমান লে-র মতো চিন সীমান্তের কাছাকাছি থাকা পাহাড়ি এলাকা থেকেও আকাশে উড়তে পারে । ফরাসিতে রাফাল শব্দের অর্থ ‘আগুনের উদ্গীরণ’ । নিজের নামের সার্থকতা রেখে, রাফাল ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে ঘূর্ণিঝড় হয়ে দাঁড়াবে । ফ্রান্স ও মিশরের মতো দেশগুলোর কাছে ইতিমধ্যেই রাফাল ফাইটার জেট রয়েছে । কিন্তু ভারতে যেগুলো আনা হয়েছে, তা আরও উন্নত । ইজ়রায়েলের মতো দেশের কাছ থেকে আরও যন্ত্রাংশ কিনে যুক্ত করার ফলে রাফাল শত্রুর কাছে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে ।
- আকাশে থাকা টার্গেটের মোকাবিলা করতে পারে মিটিওর ক্ষেপণাস্ত্র । 150 কিলোমিটার দূর থেকে শত্রুর যুদ্ধবিমান, ড্রোন এবং ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রকে উড়িয়ে দিতে সক্ষম মিটিওর । আমাদের বিমানের উপস্থিতি বুঝে ওঠার আগেই শত্রুর যুদ্ধবিমানের খেল খতম ! মিটিওরে রয়েছে ' রকেট জ্যামজেট মোটর ' । তাই এই ক্ষেপণাস্ত্রের ইঞ্জিনের ক্ষমতা অনেক বেশি । যে কোনও আবহাওয়ায় এটা কাজ করতে পারে ।
- মাটিতে থাকা টার্গেটদের ধ্বংস করবে স্ক্যাল্প ক্রুজ় মিজ়াইল । 300 কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকা শত্রুঘাঁটি ধ্বংস করতে সক্ষম এটি ।
- কাছাকাছি থাকা শত্রু বিমানকে ধ্বংস করবে মাইকা মিজ়াইল । এর পাল্লা 80 কিলোমিটার । নিঃশব্দ ঘাতক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে মাইকা ।
- এছাড়াও রয়েছে ইলেকট্রনিক কমব্যাট সিস্টেম ‘স্পেকট্রা’ । এই সিস্টেম শত্রুর রাডারকে কবজা করে আকাশে রাফালের অবস্থানকে লুকিয়ে ফেলে । এতে রয়েছে শক্তিশালী জ্যামার, লেজ়ার ওয়ার্নিং রিসিভার, আর এমন প্রযুক্তি যা 360 ডিগ্রি অবস্থানেই শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র এলে তা ধরে ফেলে এবং পাইলটকে সতর্ক করে । এছাড়াও টার্গেটকে আক্রমণ করতে এটা পাইলটকে সাহায্য করে । এতে থাকা ফ্লেয়ার ও শ্যাফট ডিসপেনসার আর টড ডিকয় সিস্টেম শত্রুর রাডার ও মিজ়াইল লঞ্চারকে বিভ্রান্ত করতে সক্ষম । এর ফলে রাফাল সফলভাবে শত্রুকে আঘাত করে, অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসতে পারে ।
- রাফালে রয়েছে RBE-2A অ্যাকটিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানড অ্যারে মাল্টিমোড রাডার । এর মাধ্যমে 124 মাইল দূর থেকে শতাধিক টার্গেটের ওপর নজরদারি চালানো সম্ভব । একসঙ্গে 8 টি লক্ষ্য স্থির করতে পারে । আকাশে শত্রুর গতিবিধি বিশ্লেষণ করে পাইলটকে সেই তথ্য দেয় ।
- রাফালের ককপিট অত্যন্ত উন্নত, যাতে রয়েছে হলোগ্রাফিক ককপিট ডিসপ্লে । এর ফলে বিমানের নিয়ন্ত্রণ, মিশন ডেটা ম্যানেজমেন্ট এবং অস্ত্র নিক্ষেপ আরও সহজ ।
- ডিসপ্লে সিস্টেম ওপরের দিকে হওয়ায়, পাইলট মাথা না নামিয়েই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেখে নিতে পারেন ।
- রাফালে রয়েছে এমন একটি প্রলেপ যা রাডারের তরঙ্গকে শুষে নেয় ।
- রয়েছে 30 মিলিমিটার ক্যানন গান, যা থেকে শক্তিশালী বুলেট বেরিয়ে আসে ।
- আকাশেই জ্বালানি ভরতে সক্ষম রাফাল । প্রয়োজনে অন্য বিমানকেও জ্বালানি দিতে পারে ।
আমাদের চাহিদা মেটাতে ...
- আমাদের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তা মেটাতে ভারত রাফালে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেছে ।
- ইজরায়েলে তৈরি হেলমেট মাউন্টেড ডিসপ্লে । এর ফলে অস্ত্র নিক্ষেপ আরও ভালোভাবে করা যাবে ।
- রাডার অ্যালার্ট রিসিভার ৷
- লো ব্যান্ড জ্যামার ৷
- 10 ঘণ্টা অ্যাভিয়েশন ডেটা রেকর্ডিংয়ের সুবিধা ৷
- ইনফ্রারেড (অবলোহিত) নির্ভর সার্চ অ্যান্ড ট্র্যাকিং সিস্টেম ৷
- ' কোল্ড ইঞ্জিন স্টার্ট ' ব্যবস্থা । যার জন্য লে-র মতো এত উঁচু জায়গাতেও যুদ্ধবিমান মোতায়েন রাখা সম্ভব ।
- হ্যামার মিসাইল সিস্টেম । এতে 60 কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা যেতে পারে ।