দিল্লি, 7 জানুয়ারি : ঘণ্টাখানেক আগেও তাঁকে নিয়ে তেমন কোনও চর্চা হয়নি । বিকেলের একটা রায়ই যেন বদলে দিল সবকিছু । সচরাচর যে শব্দটা শুনলে মানুষ ভয় পায় । ঘৃণা করে । কটু কথা হিসেবে যে শব্দের চল । সেই শব্দটি আজ সবার মুখে মুখে । জল্লাদ । আর জল্লাদ শব্দটার সঙ্গে যে নামটি উঠে আসছে তিনি পবন । পবন জল্লাদ ।
কে এই পবন জল্লাদ ?
প্রকৃত নাম সিন্ধি রাম । মীরাঠের বাসিন্দা তিনি । পেশায় ফাঁসুড়ে ৷ পারিবারিক পেশা বলাই চলে ৷ চার প্রজন্ম ধরেই এই কাজ করে আসছে পবনের পরিবার । প্রপিতামহ লক্ষ্মণরামের হাত ধরে শুরু । পবনের দাবি, লাহোর জেলে ভগত সিংকে ফাঁসি দিয়েছিলেন প্রপিতামহ । পিতামহ কাল্লু জল্লাদ রঙ্গা-বিল্লার ফাঁসি দিয়েছিলেন । ইন্দিরা গান্ধির হত্যাকারীদেরও ফাঁসি দিয়েছিলেন তিনি । শোনা যায়, সেই সময় ওই তল্লাটে কাল্লুর মতো আর কেউ ফাঁসির দড়ি পারতেন না । বাবা মাম্মু জল্লাদও দু'জনকে ফাঁসি দিয়েছিলেন । কিশোর অবস্থা থেকে বাপ-দাদুদের সঙ্গে ফাঁসির দড়ি তৈরিতে হাত লাগাতেন । এখন বংশ পরম্পরায় ফাঁসি দেওয়ার কাজ তাঁর কাঁধে ।
পবনের পরিবারে 9 জন সদস্য । সাত ছেলে-মেয়ে । এদের মধ্যে পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলে । মীরাটের ভুমিয়াপুলের কাছে ভগবানপুরে পবনের দাদুর একটি দোকান ছিল । পরে দোকানটি ভেঙে পড়ে । এতে পরিবারের সদস্যরাও জখম হন । এরপর ভগবানপুর থেকে কাশীরামে গিয়ে থাকতে শুরু করেন পবনের পরিবার । 22 বছর বয়স । তখন থেকেই ফাঁসুড়ে হওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল পবনের । পবনের কথায় সেদিন তিনি বাবাকে বলেছিলেন, বাবা তোমার পরে আমি আপনার কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই ।
কিন্তু এই ফাঁসি দেওয়ার কাজের জন্য খুব একটা টাকা পান না পবন । মাসের শেষে মাত্র তিন হাজার হাতে আসত ৷ গত বছরই মাস মাইনের বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলেন । দাবি করেছিলেন কম করে 20 হাজার করার ৷ কিন্তু সরকারের তরফে মাত্র দু'হাজার টাকা বাড়ানো হয় । এখন তার বেতন মোট পাঁচ হাজার টাকা ।