দিল্লি, 17 জানুয়ারি : বিষয়টা কাকতালীয় । তবু কোথাও যেন মিলে গেল । আড়াই দশক পেরিয়ে সিনেমার চিত্রনাট্য, চরিত্রের সংলাপ কোথাও যেন বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মিলে গেল । 1993 সালের দামিনীতেও ছিল ধর্ষণের ঘটনা আর ন্যায়বিচারের অপেক্ষা । আর নির্ভয়া গণধর্ষণে যেন সেই একই ঘটনাক্রম । তাই বোধহয়, 1 ফেব্রুয়ারি ফাঁসির কথা শুনেও নির্ভয়ার মা সরব হলেন বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতার বিরুদ্ধে । আঙুল তুলেছেন সরকার ও সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার প্রতি । মেয়ের দোষীদের ফাঁসির দিন ঘোষণার পর খানিক হলেও স্বস্তি পেয়েছেন তিনি । তবুও কোথাও যেন একটা ক্ষোভ রয়ে গেছে তাঁর মনে ।
1993 সালের সেই সিনেমাও গর্জে উঠেছিল ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতার বিরুদ্ধে । তুলে ধরেছিল আইনের জাঁতাকলে পড়ে সাধারণ নাগরিকের দিনের পর দিন ন্যায়বিচারের অপেক্ষার কথা । দামিনীতে সানি দেওলের আদালতের মধ্যে ক্ষোভ উগরে দেওয়া, আদালতের এক পর এক নতুন তারিখ দেওয়াকে কটাক্ষ করার সেই দৃশ্য আমজনতার কাছে আজও উজ্জ্বল । তারিখ পে তারিখের সেই সংলাপও যেন মনে গেঁথে গেছে । তবে এ ছিল সিনেমা । এবার বাস্তবে কোথাও যেন একই পরিস্থিতির নীরব উপস্থিতি । তাই বোধহয় সাত বছর ধরে মেয়ের ন্যায়বিচার নিয়ে লড়াই করা মায়ের কণ্ঠেও শোনা গেল একই সংলাপ, "তারিখ পে তারিখ, তারিখ পে তারিখ । দোষীরা যা চেয়েছিল তাই হচ্ছে । আমাদের পুরো ব্যবস্থাই এইরকম যেখানে দোষীদের কথা শোনা হয় ।"
2012 সালের 16 ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে প্যারা-মেডিকেল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে তাঁর যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেয় ছয় দুষ্কৃতী । প্রতিদিনের মতো মেয়ের অপেক্ষায় পথ চেয়েছিলেন মা । কিন্তু মেয়ে আর ফেরেনি । পরে মেয়েকে যেভাবে দেখেছেন তা হয়ত কোনওদিন স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি । 16 ডিসেম্বরের ঘটনার সেই নির্মমতা নাড়িয়ে দিয়েছিল পুরো দেশকে । প্রতিবারের মতো রাজপথে মোমবাতি মিছিল হয়েছে । সোশাল মিডিয়ায় গর্জে উঠেছে যুবসমাজ । হ্যাশট্যাগের ছড়াছড়ি হয়েছে । 2013 সালে নির্ভয়া অ্যাক্ট তৈরি হয়েছে । কখনও মামলার শুনানি স্থগিত । কখনও রিভিউ পিটিশন দাখিল । কখনও নতুন বেঞ্চে শুনানি এভাবেই কেটে গেছে সময় ।