সদ্ভাবনা দিবস । প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির জন্মদিন উপলক্ষ্যে প্রত্যেক বছর 20 অগাস্ট দিনটি পালন করা হয় । এই দিনটিকে সব ধর্মের মানুষের মধ্যে জাতীয় সংহতি , শান্তি , স্নেহ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রচারের প্রতীক বলা হয় ।
সদ্ভাবনা দিবস সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য:
- এই দিনে গান্ধি পরিবারের সদস্য , কংগ্রেসের নেতারা বীরভূমিতে গিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান ।
- সাধারণত , ভারতের সব ধর্মের মানুষের মধ্যে জাতীয় সংহতি , শান্তি , সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যাতে বজায় থাকে , সেটাকে লক্ষ্য রেখে দিনটি পালন করা হয় ।
- সকল ধর্ম এবং ভাষার মধ্যে জাতীয় সংহতি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা এই দিনটির মূল লক্ষ্য ।
আজ রাজীব গান্ধির 76 তম জন্মবার্ষিকী । দেশ সম্পর্কে তাঁর একটি উক্তি স্মরণ করা যেতে পারে :
"ভারত একটি প্রাচীন দেশ, কিন্তু একটি তরুণ জাতি ; এবং সর্বত্র তরুণদের মতো আমরা অধৈর্য । আমিও তরুণ এবং আমারও একটি স্বপ্ন আছে । আমি এমন একটি ভারতের স্বপ্ন দেখি , যা শক্তিশালী , স্বাবলম্বী , স্বনির্ভর এবং মানব জাতির সেবায় পৃথিবীর মধ্যে সবসময় সামনের সারিতে থাকে । "
রাজীব গান্ধি সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য :
- মাত্র 40 বছর বয়সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসেন রাজীব গান্ধি । দেশে এত কম বয়সে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার নজির আর কারও নেই । দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু তাঁর দাদু ।
- অন্যদিকে, তাঁর মা ইন্দিরা গান্ধিও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন । ইন্দিরা গান্ধির হত্যার পর রাজীব গান্ধি প্রধানমন্ত্রীর পদে বসেন । 1984 থেকে 1989, পাঁচ বছর তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলান ।
- 1986-তে তাঁর সরকার জাতীয় শিক্ষা নীতি ঘোষণা করেন । মূলত , দেশজুড়ে উচ্চতর শিক্ষাকে আরও আধুনিক ও সম্প্রসারিত করার জন্য তিনি এই শিক্ষানীতি আনেন ।
- তিনি 1986 সালে জওহর নবোদয় বিদ্যালয় ব্যবস্থা নামে একটি কেন্দ্রীয় সরকার ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন । এখানে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয় । প্রধান লক্ষ্য ছিল সমাজের গ্রামীণ অংশের উন্নতিসাধন করা ।
- গ্রামীণ এলাকায় টেলিফোন ব্যবস্থা ছড়ানোর জন্য পাবলিক কল অফিস (PCOs) তৈরি করেন ।
রাজীব গান্ধি সম্পর্কে আরও 10 টি উল্লেখযোগ্য তথ্য :
- তাঁর দিদিমা কমলা নেহরুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর নাম রাজীব রাখা হয়েছিল । 'কমলা' শব্দটি দেবী লক্ষ্মীকে বোঝায় এবং 'রাজীব' পদ্মের অন্য একটি নাম , যা দেবতার উপাসনায় ব্যবহৃত হয় ।
- তিনি ফ্লাইং ক্লাবের সদস্য ছিলেন । এখানে তিনি অসামরিক বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন ।
- 1970 সালে এয়ার ইন্ডিয়াতে যোগ দিয়েছিলেন এবং 1980 সালে রাজনীতিতে আসার আগে পর্যন্ত সেখানে কাজ করেছিলেন ।
- তিনি কম্পিউটার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেট পছন্দ করতেন । মন্ত্রী হিসাবে দেশের মধ্যে ডিজিটাইজ়েশনের অগ্রগতির উপর জোর দিয়েছিলেন ।
- 1981 সালে তিনি কংগ্রেসের যুব শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন ।
- 1984 সালে তাঁর নেতৃত্বেই কংগ্রেস লোকসভায় 542-এর মধ্যে 411 টি আসন নিয়ে বৃহত্তম সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল ।
- দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তিনি মিস্টার ক্লিন নামে পরিচিত
- 1991 সালের 21 মে ৷ তামিলনাড়ুর শ্রীপেরামবুদুরে একটি জনসভায় গিয়েছিলেন রাজীব গান্ধি ৷
- পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় বোমা বিস্ফোরণে তাঁকে হত্যা করা হয় ।
রাজীব গান্ধি জাতীয় সদ্ভাবনা দিবস পুরস্কার :
- 1992 সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধি স্মরণে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটি দ্বারা রাজীব গান্ধি জাতীয় সদ্ভাবনা পুরস্কারটি তৈরি করা হয়েছিল । সামাজিক সম্প্রীতি প্রচারে যাঁরা নিজেদের নিয়োজিত করেছেন, প্রতি বছর তাঁদের 10 লাখ টাকার সম্মাননা ও নগদ পুরস্কার দেওয়া হয় ।
- রাজীব গান্ধি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন : জগননাথ কৌল , লতা মঙ্গেশকর , সুনীল দত্ত , কপিলা বাৎস্যানান , এস এন সুব্বা রাও , স্বামী অগ্নিবেশ , নির্মলা দেশপাণ্ডে , হেম দত্ত , এন রাধাকৃষ্ণন , গৌতম ভাই , ওয়াহিদউদ্দিন খান , ডি আর মেহতা , আমজাদ আলি খান , মুজ়ফ্ফর আলি , মহম্মদ আজ়হারউদ্দিন , গোপালকৃষ্ণ গান্ধি প্রমুখ ।
সদ্ভাবনা দিবস প্রতিশ্রুতি :
"আমি এই আন্তরিক প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করি যে , আমি বর্ণ , ধর্ম বা ভাষা নির্বিশেষে দেশের সকল মানুষের সংবেদনশীল একতা এবং সম্প্রীতির জন্য কাজ করব । আমি আরও প্রতিশ্রুতি করছি, হিংসার সাহায্য না নিয়ে আলোচনা এবং সাংবিধানিক উপায়ে আমাদের মধ্যে সকল মতপার্থক্যের সমাধান করব । "