বেঙ্গালুরু, 14 জুন: কোরোনা ভাইরাস ছড়াতে পারে অশ্রুর মাধ্যমেও। এমনই তথ্য উঠে এল বেঙ্গালুরুর মিন্টো হাসপাতালের গবেষকদের একটি রিপোর্টে। আজ গবেষকরা একটি রিপোর্ট পেশ করে দাবি করেন, শুধুমাত্র লালারসের মাধ্যমেই নয় অশ্রুর মাধ্যমেও কোরোনা সংক্রমণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রতিনিয়ত কোরোনা ভাইরাস তার চরিত্র বদলাচ্ছে। বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন আবহাওয়ার মধ্যে গিয়ে নিজের চরিত্রের বদল ঘটাচ্ছে। এর ফলে গবেষকদের এর সঠিক চরিত্র বুঝতে সমস্যা হচ্ছে। যা এই ভাইরাসের ওষুধ বা ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভাইরাসের চরিত্র বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলাতে হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধিও। প্রথমদিকে এই ভাইরাসের উপসর্গগুলি ছিল জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতা, প্রশ্বাসের সমস্যা, গলাজ্বালা ও ডায়রিয়া। এরপর দেখা যায় এই ভাইরাসের ফলে শরীরে লাল-লাল রেশ দেখা দিচ্ছে। এমনকী গতকালই ICMR আরও দুই উপসর্গের কথা জানিয়েছে, সেগুলি হল ঘ্রাণ ও স্বাদ শক্তি হারিয়ে ফেলা। এইভাবে কোরোনা ভাইরাস বিভিন্ন পরিবেশে গিয়ে তার চরিত্রের পরিবর্তন ঘটাচ্ছে।
ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ অপথ্যালমোলজির প্রকাশিত হওয়ার একটি বিবৃতি থেকে জানা গিয়েছে, কোরোনা ভাইরাস শুধু উপসর্গই বদলাচ্ছে না বদলাচ্ছে সংক্রমণের ধরনও। রিপোর্ট অনুযায়ী বেঙ্গালুরুর মিন্টো হাসপাতালের গবেষকরা জানিয়েছেন, "তাঁরা কিছু রোগীর ক্ষেত্রে দেখেচ্ছেন প্রথমে তারা চোখে ইনফেকশন নিয়ে হাসপাতালে আসেন। কিন্তু তাদের শরীরে কোরোনার কোনও রকম উপসর্গ ছিল না। পরে তাদের অশ্রু পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাতে কোরোনা ভাইরাস রয়েছে। এরপরেই মে মাসে ব্যাঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে 45 জন কোরোনা রোগীর উপর পরীক্ষা শুরু করেন গবেষকরা। ওই 45 জনের মধ্যে 35 জন ছিলেন পুরুষ। বাকি সবাই মহিলা। এদের মধ্যে কনিষ্টতম ছিলেন ছয় বছরের এক শিশু এবং সবচেয়ে বয়স্ক ছিলেন 66 বছরের এক মহিলা। এই 45 জনের মধ্যে শুধুমাত্র 13 জনের শরীরে কোরোনা উপসর্গ ছিল। তবে কারোরই চোখের কোনও রোগ ছিল না। "
এই 45 জনের অশ্রু পরীক্ষা করে দেখা যায় তাদের অশ্রুর মধ্যেও কোরোনা ভাইরাস রয়েছে। যদিও গবেষকরা জানিয়েছেন, “এই অশ্রুর মাধ্যমে মাত্র 2.2% সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদিও কোনও ব্যক্তি কোরোনা আক্রান্তের চোখে বা অশ্রুতে হাত দেন এবং এরপর সেই হাত তাঁর নিজের চোখে বা মুখে দেন তাহলেই কোরোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ”
এই তথ্য সামনে আসার পরেই নড়েচড়ে বসে মিন্টো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের সমস্ত চিকিৎসক ও নার্সদের সতর্ক করা হয়েছে। তাঁরা যাতে রোগীদের চিকিৎসার সময় আরও সাবধানতা অবলম্বন করেন। কোনও রোগীর চোখে ইনফেকশন থাকলে তাদের কোরোনা পরীক্ষা করানো হবে। এবং রোগী দেখার ক্ষেত্রে চক্ষু চিকিৎসকদেরও কোরোনার সবরকম স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।