রায়গঞ্জ, 2 সেপ্টেম্বর: রাজ্য়ে একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে সরব হওয়ার জন্য ডাকা ভার্চুয়াল মিটিংয়ে পুলিশ পরিচয় দিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল ৷ উত্তরবঙ্গের তিন জেলার ছাত্র-ছাত্রীরা ওই ভার্চুয়াল মিটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন ৷ সেখানেই হুমকি দেওয়া হয় এবং কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচি না করার কথা বলা হয় বলে অভিযোগ ৷ পাশাপাশি আপত্তিকর ভিডিয়োও অংশগ্রহণকারীদের পাঠানো হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে ৷ এই নিয়ে ওই পড়ুয়ারা রায়গঞ্জ সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷
আরজি কর-কাণ্ড সহ বিভিন্ন জেলায় সম্প্রতি ঘটে চলা মহিলাদের ওপর নৃশংসতার প্রতিবাদে একটি ভার্চুয়াল মিটিংয়ের আয়োজন করে একদল ছাত্র-ছাত্রী । সেই মিটিংয়ে উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদা জেলার ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেন । মূলত, ভবিষ্যতে এই নিয়ে আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করতেই এই বৈঠক ডাকা হয় ৷
সেই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছিলেন বাপি সরেন নামে এক ছাত্র ৷ তিনি বলেন, "আমাদের রাজ্যে আরজি কর ঘটনা হওয়ার পরে আমরা দেখলাম মালদা এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় 11-12 বছর বয়সী দু’টি বোনের উপরে ধর্ষণ এবং হত্যার চেষ্টা করা হয় । তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা গতকাল একটি ভার্চুয়াল মিটের আয়োজন করি । যেখানে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মালদা জেলার ছাত্রছাত্রী-প্রাক্তনীরা ছিলাম । এবং এই ঘটনাগুলোর আমরা কীভাবে প্রতিবাদ করব, এই বিষয়ে এটা একটা প্রাইভেট মিটিং ছিল । সেখানে কাউকে অনুমতি ছাড়া অংশ নিতে দেওয়া হয়নি ৷’’
তাঁর অভিযোগ, ‘‘মিটিং শুরু হওয়ার 10 মিনিট পর আমরা দেখি আমাদের পেজটি হ্যাক করে তিনজন সেখানে ঢোকে । এবং তাদের একজন নিজেকে দিল্লি পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের সাব-ইন্সপেক্টর বলে পরিচয় দিয়ে বলেন আমাদের পেজটি পাকিস্তান থেকে হ্যাক করা হয়েছে এবং অবিলম্বে আমরা যাতে মিটিংটি বাতিল করি এবং আমরা যাতে কোনও কর্মসূচি না গ্রহণ করি ।’’
বাপির আরও দাবি, ‘‘পাশাপাশি মেসেজ করে ভয় দেখায় । এবং সেখানে পর্নোগ্রাফি ও অশ্লীল ভিডিয়ো চালু হয়ে যায় । এই ঘটনার প্রতিবাদে আমরা আজ সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি । আমরা চাই এ ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি হোক ।"
মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারী এক ছাত্রী বলেন, "আরজি করের ঘটনার পর বিভিন্ন জেলায় মেয়েদের উপরে নৃশংস অত্যাচারের বিরুদ্ধে কী করে প্রতিবাদ করা যায়, সেই বিষয়ে আমাদের একটি ভার্চুয়াল মিটিং চলছিল । সেই সময় কিছু অজানা অ্যাকাউন্ট থেকে অশ্লীল ভিডিয়ো চালিয়ে দেওয়া হয় । কারা কীভাবে করল আমরা তা জানি না । তবে যতই আমাদের আটকানোর চেষ্টা করুক, আমরা আমাদের প্রতিবাদ চালিয়ে যাব ।"