পেট্রাপোল (উত্তর 24 পরগনা), 20 ডিসেম্বর: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভারতের প্রতিবেশী এই দেশকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর ৷ শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘আমরা যদি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করতে পারি ৷ তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে কী করতে পারি, তা সকলেই জানেন ।"
এদিন সশস্ত্র সীমা বল বা এসএসবি-র 61তম প্রতিষ্ঠা দিবস ছিল ৷ সেই উপলক্ষ্যে শিলিগুড়িতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ ওই অনুষ্ঠান থেকে অমিত শাহ ভার্চুয়ালি পেট্রাপোল স্থলবন্দরে কর্মরত বিএসএফ জওয়ানদের জন্য তৈরি হওয়া আধুনিক ভবনের উদ্বোধন করেন ।
সেই উদ্বোধন উপলক্ষ্যে পেট্রাপোলেও এক অনুষ্ঠান হয় ৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ৷ ওই অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়েই কার্যত বাংলাদেশকে হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যায় বনগাঁর সাংসদকে ৷ বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে সেদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা শোনা যায় তাঁর মুখে ৷ বিএসএফ-কেও তিনি সতর্ক থাকতে বলেন ৷ তখনই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রসঙ্গ তুলে বাংলাদেশকে হুঁশিয়ারি দেন তিনি ৷ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ যা করছে, তার ফল ভালো হবে না ।’’
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে শান্তনু ঠাকুর আরও বলেন, ‘‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ এমন একটা দেশ ছিল, যারা আর্থিকভাবে শক্তিশালী ছিল । এখন তারা 50 বছর পিছিয়ে গিয়েছে । ওখানের জেহাদী কর্মকাণ্ড-উগ্রবাদীদের আচরণ আমরা সহ্য করব না । আমরা চাইব বাংলাদেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক হাত বাড়িয়ে দিতে । তাদের কার্যকলাপ যেমন হবে, আমাদের কার্যকলাপও তেমন হবে । ভারতবর্ষ সামরিক শক্তির দিক থেকে তৃতীয় বৃহত্তম শক্তিশালী দেশ৷ অর্থনৈতিকভাবেও শক্তিশালী দেশ । ভারতের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ নিতে এলে সমস্যা হয়ে যাবে ।’’
পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান সখ্যতা নিয়ে শান্তনু ঠাকুর বলেন, "এরা আসলে সরকার চালাতে চাইছে না । জামাত, উগ্রপন্থী মিলে যে আশ্রয় পেয়েছে, সেই আশ্রয় কোথা থেকে পাচ্ছে, আমরা সব জানি । ভারতকে তারা টুকরো করতে চায়। কারণ, ভারতের ডেভেলপমেন্ট দেখে বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশের রাতের ঘুম ছুটে গিয়েছে । তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত করার জন্য জিওপলিটিকালি ভাবে বাংলাদেশে এই পরিস্থিতি তৈরি করে ভারতের বিরুদ্ধে দাঁড় করাচ্ছে, তাতে তারা সফল হবে না ।’’
শান্তনু ঠাকুরের আরও বক্তব্য, ‘‘বিনা কারণে ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাবে না । আমরা ভারত সরকার সব সময় বাংলাদেশের বন্ধু । সব সময় বাংলাদেশকে সাহায্য করে এসেছি ।’’ তিনি মনে করেন, ‘‘ভারত সব সময় বাংলাদেশের বন্ধু ছিল৷ আগামীতেও থাকবে । যদি তারা বন্ধুত্বের হাত বাড়ায় ।’’ শান্তনু কার্যত হুশিয়ারির সুরে বলেন, ‘‘এখন আমাদের ভাগ করতে এলে আমরা তো আর চুপ করে বসে থাকব না, আমাদেরও ব্যবস্থা নিতে হবে ।"
অন্যদিকে শান্তনু এদিন যে ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন, সেটি পেট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অধীনস্থ এলাকায় তৈরি হয়েছে ৷ যা অবস্থিত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তর 24 পরগনার পেট্রাপোল স্থলবন্দরে ৷ ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি সূত্রে খবর, সাড়ে তিন একর জমির উপরে প্রায় 30 কোটি টাকা ব্যয় এই ভবন তৈরি হয়েছে । যেখানে আলাদা আলাদা চারটি চারটি ভবন রয়েছে । যার মধ্যে সমস্ত ধরনের আধুনিক সুবিধা রয়েছে ।
এদিনের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পেট্রাপোল সীমান্তে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক বিজেপির স্বপন মজুমদার ও বনগাঁর কাউন্সিলর দেবদাস মণ্ডল-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা ।