সোদপুর, 27 ফেব্রুয়ারি: মর্মান্তিক পরিণতি ! ট্রেনের ধাক্কায় মৃত দুই মহিলার একজনের দেহ কয়েক কিলোমিটার টেনে নিয়ে গেল হাটেবাজারে এক্সপ্রেস। শিয়ালদা-মেইন শাখার 8টি স্টেশন পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত তাঁর দেহ নৈহাটি স্টেশন পর্যন্ত টেনে নিয়ে ট্রেনটি। সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার পর ওই মহিলার দেহ এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনের কাউ-ক্যাচারে আটকে যায়। সেই অবস্থাতেই তাঁকে টেনে নিয়ে যায় এক্সপ্রেস ট্রেনটি।
তবে, অপর মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছে দুর্ঘটনাস্থল সোদপুর স্টেশনের রেল লাইন থেকে। জানা গিয়েছে, লাইন পারাপার করতে গিয়েই এই বিপত্তি ! এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় একজন ছিটকে পড়লেও অপরজনকে টেনে নিয়ে যায় দ্রুত গতির ট্রেনটি। রেল পুলিশ দেহ দু'টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায় ৷ নিহত দুই মহিলার নাম ও পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিয়ালদা থেকে রাত 9টা 15 মিনিট নাগাদ ছেড়েছিল আপ হাটেবাজারে এক্সপ্রেস। ট্রেনটি 'থ্রু' হওয়ায় সোদপুর স্টেশনে দাঁড়ানোর কথা ছিল না। রাত 9টা 35 মিনিট নাগাদ হাটেবাজারে এক্সপ্রেস সোদপুর স্টেশনের 3 নম্বর লাইন দিয়ে পেরনোর সময় ধাক্কা মারে ওই দুই মহিলাকে। ওই স্টেশন থেকে 'থ্রু ট্রেন' পাশ হওয়ার অ্যানাউন্সমেন্ট করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও স্টেশনের ওভারব্রিজ ব্যবহার না-করে ওই দুই মহিলা রেল লাইন পেরিয়ে প্ল্যাটফর্ম ওঠার চেষ্টা করছিলেন।
তার আগেই দ্রুত গতিতে আসা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ধাক্কা মারে দুই মহিলাকে। সোদপুর স্টেশন ছেড়ে ট্রেনটি চলে গেলে একজনের দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় রেল লাইনে। কিন্তু, অপরজনের দেহ টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় এক্সপ্রেস ট্রেনটি খড়দা, টিটাগড়, ব্যারাকপুর, পলতা, ইছাপুর, শ্যামনগর, জগদ্দল, কাঁকিনাড়া পেরিয়ে রাত 10টা নাগাদ যখন এক্সপ্রেস ট্রেনটি নৈহাটি স্টেশনে দাঁড়ায় তখন উদ্ধার হয় অন্য মহিলার দেহ ৷
স্বাভাবিকভাবেই দুর্ঘটনার জেরে বিলম্বিত হয় রেল পরিষেবা। প্রায় 30 মিনিট নৈহাটি স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে হাটেবাজারে এক্সপ্রেস। দেহ উদ্ধারের পর রাত সাড়ে 10টা নাগাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়ে নৈহাটি স্টেশন থেকে। এদিকে, রেল যাত্রীদের একাংশের দাবি, ওই দুই মহিলা ফোনে কথা বলতে বলতে লাইন পেরোচ্ছিলেন। ফলে 'থ্রু' ট্রেনের অ্যানাউন্সমেন্ট তাঁদের কানে পৌঁছয়নি। যার মাশুল দিতে হয় তাঁদেরই। যদিও, যাত্রীদের এই দাবির সত্যতা খতিয়ে দেখছে রেল পুলিশ। পাশাপাশি, নিহত দুই মহিলার পরিচয় জানারও চেষ্টা চলছে।