আসানসোল, 27 সেপ্টেম্বর: কে বেশি উন্নয়ন করেছেন, রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ! এই নিয়ে সরগরম পশ্চিম বর্ধমান৷ একদিকে নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর দাবি, পাণ্ডবেশ্বরেই সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে ৷ অন্যদিকে তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, উন্নয়ন তাঁর এলাকাতেই হয়েছে সবচেয়ে বেশি ৷ এখন প্রশ্ন হল, কার দাবি ঠিক ?
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক তৃণমূলের নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ৷ সেখানে তিনি দাবি করেছেন যে পশ্চিম বর্ধমানে বিধায়ক এলাকা উন্নয়নে এগিয়ে রয়েছে ৷ সেখানে কাজ হয়েছে 51 শতাংশ ৷ ওই জেলায় অন্য বিধানসভাগুলিতে বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের টাকা কতটা খরচ হয়েছে, তার একটি হিসেবও তিনি সেই পোস্টে দিয়েছেন ৷ তবে সেখানে এই তথ্যের উৎসের বিষয়টি উল্লেখ করা নেই ৷
যদিও জানা গিয়েছে, বিধানসভা এলাকার উন্নয়ন প্রকল্পের নজরদারি চালানোর জন্য বিধানসভার যে স্ট্যান্ডিং কমিটি রয়েছে, তারা সম্প্রতি এসেছিল পশ্চিম বর্ধমানের কাজ সরজমিনে দেখতে ৷ এর পর তারা একটি রিপোর্ট দেন, সেই রিপোর্ট অনুযায়ী পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁর বিধায়ক তহবিলের টাকা সবচেয়ে বেশি খরচ করেছেন ৷ সম্ভবত সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই এই পোস্ট করেছেন নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ৷
কিন্তু সতীর্থের এই দাবি মানতে নারাজ রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়কের পোস্ট অনুযায়ী রানিগঞ্জে মাত্র 30 শতাংশ কাজ হয়েছে ৷ আর তা নিয়েই আপত্তি তুলেছেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র ৷ তাঁর দাবি, পাণ্ডবেশ্বর নয়, রানিগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় সবচেয়ে বেশি কাজ হয়েছে ৷
সত্যিই যদি তা হয়, তাহলে রিপোর্টে তার উল্লেখ নেই কেন ? এই প্রশ্নের উত্তরে তাপস পুরো দায় সরকারি আধিকারিকদের ঘাড়ে চাপিয়েছেন ৷ তাঁর দাবি, সরকারি আধিকারিকদের গাফিলতির কারণে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা পড়েনি বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে ৷ আর সেই কারণেই তাঁর কাজকে কম করে দেখানো হয়েছে ।
তিনি বলেন, "স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টে আমার বিধানসভায় পাওয়া ফান্ড থেকে মাত্র 38 শতাংশ টাকার কাজ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে । মাত্র 84 লক্ষ টাকার ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দেখানো হয়েছে । অথচ সাত মাস আগে শেষ হওয়া 27 লক্ষ টাকার একটি কাজের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট এল বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটি চলে যাওয়ার দু’দিন পর । সরকারি কিছু আধিকারিকের উদাসীনতার কারণেই এটা হয়েছে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘যদিও আমি কাউকে দোষ দিতে চাই না । কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমারও কোনও দোষ নেই । অর্থাৎ আমার বিধানসভা এলাকায় পাওয়া 1 কোটি 70 লক্ষ টাকার ফান্ডের থেকে 1 কোটি 3 লক্ষ টাকার কাজ ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে । আগামীর পরিকল্পনাও পাঠানো হয়েছে । অর্থাৎ যা ফান্ড পাওয়া গিয়েছিল, তার মধ্যে রানিগঞ্জ বিধানসভায় 61 শতাংশ টাকার কাজ আমি করে দিয়েছি । তারপরও আমার কাজ দেখানো হল মাত্র 38 শতাংশ ।"