মালদা, 23 ফেব্রুয়ারি: আবারও নাবালিকা ছাত্রীকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ উঠল মালদায় ৷ পরিবারের দাবি, ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ বা গণধর্ষণ করে ইট দিয়ে থেঁতলে খুন করা হয়েছে ৷ শুক্রবার সন্ধেয় একটি ইটভাটা থেকে ওই নাবালিকার মৃতদেহ উদ্ধার হয় ৷ এই নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় এলাকায় ৷ ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদার একটি গ্রামে ৷ খবর পেয়ে নাবালিকার দেহ উদ্ধার করেছে মালদা থানার পুলিশ ৷
নিহত নাবালিকা আদিবাসী সম্প্রদায়ের৷ নিতান্তই গরিব পরিবারের মেয়ে ৷ স্থানীয় একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ত ৷ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার গ্রামে আদিবাসী সম্প্রদায়ের একটি অনুষ্ঠান ছিল ৷ সেখানে যাবে বলে সন্ধে নাগাদ সে বাড়ি থেকে বেরোয় ৷ তারপর সে আর বাড়ি ফিরে আসেনি ৷ রাত থেকেই তাকে খোঁজাখুঁজি করছিলেন পরিবারের সদস্যরা ৷ শুক্রবার সকালেও তল্লাশি জারি ছিল ৷ কিন্তু কোথাও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি ৷ অবশেষে এ দিন সন্ধে নাগাদ কয়েকজন গ্রামবাসী পরিত্যক্ত একটি ইটভাটার চুল্লির সামনে তার মাথা থেঁতলানো মৃতদেহ দেখতে পান ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান অভিভাবকরা ৷ খবর যায় মালদা থানাতেও ৷ দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ ৷
নিহত নাবালিকার বাবার বক্তব্য, “গতকাল সন্ধে সাতটার সময়ও মেয়ে বাড়িতে ছিল ৷ তার 10 মিনিটের মধ্যেই দেখি মেয়ে বাড়িতে নেই ৷ গ্রামে বাঁধনা পরব চলছে ৷ মেয়ে সেখানে যাবে বলেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল ৷ ওখানে ওর নাচার কথা ছিল ৷ তারপর থেকে মেয়ের আর খোঁজ নেই ৷ সারা রাত খুঁজেছি৷ আজ সকালেও খোঁজ চলেছে ৷ কিন্তু মেয়ের আর হদিশ পাইনি ৷ আজ সন্ধে নাগাদ খবর পাই, মেয়ের লাশ ইটভাটায় পড়ে রয়েছে ৷’’
তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমাদের মনে হচ্ছে, ওকে ধর্ষণ কিংবা গণধর্ষণ করে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়েছে ৷ ধর্ষণের যাবতীয় চিহ্ন ওর শরীরে দেখা গিয়েছে ৷ আমি এই ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করছি ৷ যারা আমার মেয়েকে এভাবে খুন করেছে, আমি তাদের কঠোর শাস্তি চাই ৷ আমরা খুব গরিব ৷ দিনমজুরি করে খাই ৷ তবু ছোট মেয়েকে এবার নবম শ্রেণিতে ভর্তি করেছিলাম ৷ আমি চেয়েছিলাম, আমার দুই মেয়েই পড়াশোনা করে বড় হোক ৷”
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আজ সন্ধে নাগাদ শুনলাম, 12-13 বছরের একটি মেয়েকে ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়েছে ৷ ইটভাটায় তার দেহ পড়ে রয়েছে ৷ এখানে এসে দেহ দেখেই বুঝতে পেরেছি, মেয়েটাকে খুনের আগে ধর্ষণ করা হয়েছে ৷ ভয়ঙ্কর ঘটনা ৷ এর আগে মালদা শহরেও একটা বাচ্চা মেয়েকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছিল ৷ একের পর এক এমন ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত ৷ অভিভাবকরা মেয়েদের বাড়ি থেকে বের করতেই ভয় পাবেন ৷ পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমার আবেদন, যারা এই মেয়েটিকে এভাবে খুন করেছে, তাদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক ৷”
মালদার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, “আজ পুরাতন মালদার একটি ইটভাটা থেকে এক নাবালিকার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেছে মালদা থানার পুলিশ ৷ এই ঘটনায় ওই নাবালিকার বাবা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ ঘটনার পুলিশি তদন্ত শুরু করা হয়েছে ৷ অপরাধীরা দ্রুত গ্রেফতার হবে ৷ আগামীকাল মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে ৷”
আরও পড়ুন: