কলকাতা, 19 অক্টোবর: জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রতীকী অনশনে বসলেন চৈতী ঘোষাল, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, বিরসা দাশগুপ্ত, দেবলীনা দত্ত, সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রান্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে তনিকা বসুরা । শনিবার সকাল 10টা থেকে ধর্মতলায় শুরু হয়েছে এই প্রতীকী অনশন ৷ 20 অক্টোবর সকাল 10টা পর্যন্ত প্রতীকী অনশনে চলবে তাঁদের ৷ শুধু জল খেয়ে থাকবেন এইসব টলি অভিনেতা থেকে পরিচালকরা ।
দশ দফা দাবি মেনে না নিলে আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা । জুনিয়র ডাক্তারদের প্রত্যেকটা দাবি নায্য । তাই তাঁদের পাশে আছেন বলে জানিয়েছেন অনশনরত অভিনেতারা । প্রতীকী অনশনে মুখ্যমন্ত্রীকে একবার আসার আর্জি জানিয়েছেন বিদীপ্তা, চৈতী থেকে দেবলীনারা ৷
অভিনেতা দেবলীনা দত্ত বলেন, "মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আপনাকে তো আমরাই ভোটে জিতিয়ে এনেছি । একবার এসে ওদের পাশে দাঁড়ান । আমরা জানি আরজি কর-কাণ্ডে প্রমাণ লোপাট হয়েছে । তাই সিবিআইয়ের তদন্ত করতে সময় লাগবে । কিন্তু তারপর থেকে যে সব দাবি তোলা হয়েছে, তা সবই থ্রেট কালচার বিনাশ করার লক্ষ্যে এবং স্বাস্থ্য পরিকাঠামো দেওয়ার জন্য ৷ এগুলো তো খুব মৌলিক জিনিস । ভেবেছিলাম সরকার নিজেই এই ঘটনার পর ডাক্তারদের ডাকবেন যে কীভাবে এই দুর্নীতি থেকে বেরনো যায় । সেই জায়গায় আজ অনশন করতে হচ্ছে ।"
বিদীপ্তা চক্রবর্তীর কথায়, "জুনিয়র ডাক্তারদের সব দাবি ন্যায্য । তাই শুরুর দিন থেকে তাঁদের পাশে আছি । গত 15 দিন ধরে ওদের যেভাবে দেখছি তাতে মাত্র 24 ঘণ্টার অনশন কিছুই না । আমরা প্রতীকী অনশন করছি যাতে আরও সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারি ৷ এখানে ছেলেখেলা হচ্ছে না । অনেকে বলছে শুনছি, দু'তিন জন অনশন করছে বাকিরা সব উৎসব করছে । তা হলে এই উৎসবেও আসুন । আপনারা তো উৎসবের কার্নিভালে যান ৷ এই উৎসবেও আসুন । দেখুন এখানকার চিত্রটা । মুখ্যমন্ত্রী একবার এসে একটু কথা বলুন । দুই পক্ষ অনড় । এসে কথা বললে সকলের ভালো হবে । স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়লে কী হবে এরপরে?"
একইভাবে নিজেদের মতামত জানালেন চৈতী ঘোষাল, প্রান্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায়, তনিকা বসুও । ওদিকে এ দিন দুপুরেই অনশনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ দ্রুত অনশন প্রত্যাহার করলে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছেন তিনি ৷
উল্লেখ্য, অনশনের 15তম দিনে শনিবার বেলা 2টো নাগাদ মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব ধর্মতলায় অনশন মঞ্চে হাজির হন এবং সেখানে জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের সদস্যদের সঙ্গে তাঁরা দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন ৷ তারপরেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের ফোনে কথা বলিয়ে দেন মুখ্যসচিব ।
অন্যদিকে নাট্যকর্মীদের ডাকে আকাদেমি চত্বরে শনিবার শুরু হল 'দ্রোহের সংস্কৃতি' । এ দিন সকাল 10টা থেকে 21 অক্টোবর সকাল 6টা অবধি চলবে সাংস্কৃতিক কর্মীদের টানা দু'দিনের অবস্থান । রানুচ্ছায়া মঞ্চে সারাদিন ধরে চলবে নাচ, গান, কবিতা-পাঠ, নাটক, সিনেমা দেখানো ৷ দু'দিন রাতেই বসবে উৎপল দত্ত পাঠশালা । এখানে অবস্থানে বসেছেন অভিনেতা দীপাঞ্জন (জ্যাক) ভট্টাচার্য, মৌসুমী ভট্টাচার্য, সীমা মুখোপাধ্যায়, আর্য জানা, গৌতম চক্রবর্তী-সহ আরও অনেকে ।
জ্যাক বলেন, "সবাই বুঝতে পারছেন উনিই (মুখ্যমন্ত্রী) বুঝতে পারছেন না । এবার ওঁর পরিবারের কেউ অনশনে বসলে বোধহয় উনি বুঝবেন ব্যাপারটা ।" অনেককেই বলতে শোনা যাচ্ছে, "এত বিক্ষোভ, প্রতিবাদ করে কোনও লাভ নেই । বিচার আসবে না । সবাই সব ভুলে যাবে দু'দিন পরে।" এই প্রসঙ্গ তুললে মৌসুমী ভট্টাচার্য বলেন, "এত তাড়াতাড়ি হাল ছেড়ে দিলে চলবে না ।"