নয়াদিল্লি, 9 নভেম্বর: জাতীয় প্রতীক অশোকস্তম্ভের অসম্মান করেছেন বিজেপি'র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ রাজ্য পুলিশেরও অবমাননা করেছেন তিনি ৷ শনিবার দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে গিয়ে এই অভিযোগ জানালেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ পাঁচ নেতা-নেত্রী ৷
এদিন তাঁদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের তরফে কারও দেখা না-হওয়ায় কমিশনকে বিজেপি সরকারের হাতের পুতুল বলে তোপ দাগল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল ৷ রাজ্যে আসন্ন ছ'টি উপনির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের ইস্যুতে জাতীয় প্রতীক অশোকস্তম্ভ এবং রাজ্য পুলিশ-দুইয়েরই মানহানি করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার ৷
স্মারকলিপিতে তৃণমূল সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগে তৃণমূল জানিয়েছে, গত 7 নভেম্বর তিনি তালডাংরা বিধানসভায় একটি বক্তৃতা দিয়েছেন, যা মিথ্যা, অসম্মানজনক এবং উস্কানিমূলক ৷ তাই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক নির্বাচন কমিশন, দাবি ঘাসফুল শিবিরের ৷ বঙ্গ বিজেপি-র অন্যতম শীর্ষ নেতা বলেছেন, পুলিশ আধিকারিকরা তাঁদের উর্দিতে অশোকস্তম্ভের বদলে হাওয়াই চটি লাগিয়ে রাখুন ৷ এতে জাতীয় প্রতীক অশোকস্তম্ভ এবং রাজ্য পুলিশের অবমাননা করা হয়েছে ৷
তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে দু'টি স্মারকলিপি জমা দিলেন তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল ৷ লোকসভার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও এই দলে ছিলেন তৃণমূল সংসদীয় নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যসভায় দলের সংসদীয় নেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন, লোকসভা সাংসদ কীর্তি আজাদ, রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে এবং সুস্মিতা দেব ৷ তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, তাঁরা আগে থাকতে দেখা করার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিল ৷ তা সত্ত্বেও কোনও আধিকারিক সেখানে ছিলেন না ৷
এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ তৃণমূল নেতাদের থেকে সাক্ষাতের সময় সংক্রান্ত ইমেল পেয়েছে ৷ কিন্তু তাতে কী কারণে তৃণমূল নেতারা দেখা করবেন এবং তা কতটা জরুরি, তার কোনও উল্লেখ ছিল না ৷ সূত্র আরও জানায়, তৃণমূলের পাঠানো ইমেলে প্রতিনিধিদের কথাও লেখা ছিল না ৷ তাঁরা অ্যাপয়েন্টমেন্ট না করেই এসেছিলেন ৷ তা সত্ত্বেও শনিবার রীতি মেনে তাঁদের কাছ থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ করা হয়েছে ৷
এই ঘটনায় হতাশ দুই সাংসদ কীর্তি আজাদ এবং সুস্মিতা দেব বলেন, "24 ঘণ্টারও আগে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে সময় চেয়েছিলাম ৷ 13 নভেম্বরের উপনির্বাচনের জন্য নির্বাচনী প্রচার বন্ধ হচ্ছে 11 নভেম্বর ৷ ইলেকশন ম্যানুয়াল অনুযায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করার জন্য ফুল বেঞ্চকেই হাজির থাকতে হবে ৷ আমরা পাঁচ জন এসেছি ৷ সংসদের দুই কক্ষেই আমরা তৃতীয় বৃহত্তম দল ৷ তা সত্ত্বেও তাঁদের কাছে আমাদের সঙ্গে দেখা করার সময় নেই ৷ এতেই স্পষ্ট যে, তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতের পুতুল ৷"
রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেবের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন 2003 সালে যে নিয়মগুলি লাগু করেছিল, পশ্চিমবঙ্গে তা লঙ্ঘিত হচ্ছে ৷ নিয়মে নির্দিষ্ট করে বলা আছে, রাজ্যে যেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে, সেখানে রাজ্য পুলিশের একজন করে প্রতিনিধিও থাকবেন ৷ তাঁর কথায়, "আমরা বাংলার উপনির্বাচনগুলিতে দেখতে পাচ্ছি, কেন্দ্রীয় বাহিনী বঙ্গ বিজেপির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে ৷ রাজ্য পুলিশ নয় ৷ তারা বিজেপি নেতাদের সঙ্গে কাজ করছে ৷ ভোটারদের বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রভাবিত করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ৷ এই পরিস্থিতিতে আজ আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখাই করতে পারলাম না ৷"