কলকাতা, 8 সেপ্টেম্বর: আরজি কর আবহের মধ্যেই বড় ধাক্কা তৃণমূল কংগ্রেসের । দলের রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন জহর সরকার ।
সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক বিষয় নিয়ে দলের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হয়েছিল তাঁর সঙ্গে । তবে সেই সময় বিষয়টি দলীয় উদ্যোগে সামলে নেওয়া হয়েছিল । কিন্তু আরজি কর আবহে যেভাবে প্রবল-জনরোষের মুখে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারকে পড়তে হয়েছে, তার মধ্যেই বেশকিছু বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ । এমনকি প্রথম অবস্থাতেই আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে সাসপেন্ড করার দাবিও তুলেছিলেন তিনি । রবিবার আচমকাই তিনি দলীয় সাংসদ পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন । শুধু ঘোষণা নয়, ইতিমধ্যেই তাঁর সিদ্ধান্তের কথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি । একইসঙ্গে দিয়েছেন একটি বিস্ফোরক চিঠিও ।
প্রসঙ্গত, 2021 সালে সাংসদ হিসেবে জহর সরকারকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস । প্রাক্তন কেন্দ্রীয় আমলা চাকরি জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকেই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বরাবরই সরব ছিলেন । তাঁর সেই ভূমিকায় বিচার্য হয়েছিল তাঁর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান এবং তাঁকে সাংসদ করার পেছনে ৷ কিন্তু সাংসদ হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেসে জহর সরকারের সফর যে সুখকর ছিল না, তা বলাই চলে ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর, তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছিলেন জহর সরকার । আর তাতেই দলের কোপের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে । এমনকি আরজি করের ঘটনা ঘটার পরেও বিষয়টি নিয়ে সমাজ মাধ্যমে মুখ খুলেছিলেন তিনি । প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের জমানাতে দেদার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে । এই আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের তদন্তে সিট গঠন করে স্বরাষ্ট্র দফতর ।
সেই সময় জহর সরকার লিখেছিলেন, "জেনে ভালো লাগল যে সরকার অবশেষে আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে সিট তদন্ত করছে । প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডা. সন্দীপ ঘোষের আমলের দুর্নীতির তদন্ত হবে । এটা অনেক আগেই করা উচিত ছিল । অবিলম্বে তাঁকে সাসপেন্ড করুন ।"
খুব স্পষ্টই ছিল সে সময় তাঁর এই বক্তব্যের মূল লক্ষ্য ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তাঁর দলনেত্রী । কিন্তু এরপরেও দলনেত্রীর কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না-পেয়ে অবশেষে যে তিনি পদত্যাগের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নেবেন সেটা দলের জানা ছিল না । এদিন দলনেত্রীকে চিঠি দিয়ে তাঁর দল ছাড়ার কথা জানিয়ে দিলেন জহর সরকার ৷ একইসঙ্গে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, কিছুদিনের মধ্যেই দিল্লি গিয়ে সাংসদ পদ থেকে পদত্যাগ করবেন তিনি ৷