কলকাতা, 19 অক্টোবর: শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যার তিনটি পুজোর থিম ফের প্রাণ পাচ্ছে জগদ্ধাত্রী পুজোয় ৷ কলকাতার তিনটি নামী পুজোর ওই থিমগুলি চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোয় স্থান পেতে চলেছে ৷ নিউ আলিপুরের সুরুচি সংঘের 'পুরনো সেই দিনের কথা', মনোহর পুকুর রোডের ত্রিধারার 'অঙ্গন' এবং এন্টালি মার্কেটের কাছে 14 পল্লির পুজোর থিম চন্দননগরের যাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে ৷
ইতিমধ্যে, প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যা ৷ দুর্গাপুজোয় এই তিনটি থিম দেখতে অসংখ্য মানুষ ভিড় করেছিলেন ৷ এবার জগদ্ধাত্রী পুজোয় নতুন করে জেলার মানুষও সেই থিমগুলি দেখার সুযোগ পাবেন ৷
সুরুচি সংঘের পুজোর থিম চন্দননগরের নিয়োগীবাগানের জগদ্ধাত্রী পুজোয় ব্যবহার করা হবে ৷ তার থিম ছিল 'পুরানো সেই দিনের কথা' ৷ এই থিমের মাধ্যমে মানুষকে তার ভুলে যাওয়া শিকড় মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন শিল্পী গৌরাঙ্গ ৷ যেখানে শিল্পী বলতে চেয়েছিলেন, আমি, আপনি বা যেকোনও ব্যক্তি জীবনে একজন সফল গায়ক, একজন খেলোয়াড় বা অন্য কোনও সফল পেশাদার হয়ে উঠতে পারেন ৷ কিন্তু, নিজের শিকড়কে ভুলে যাওয়া উচিত নয় ৷ একারণেই থিম সাজানোর জন্য যানবাহনের বিভিন্ন অংশ, মাছ ধরার জাল, তেলের টিন, রঙের পাত্র ব্যবহার করা হয়েছিল ৷
শিল্পী বলেন, "অনেক জিনিস আছে, যা একসময় মানুষের কাছে মূল্যবান সম্পদ ছিল ৷ প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সেই মূল্যবান জিনিসগুলির গুরুত্ব কমে গিয়েছে ৷ যে জিনিসগুলি আমাদের সেবার কাজে লাগে, সেগুলিকেই আমরা যত্ন নিই ৷ কিন্তু, যখন আমরা অনুভব করি, নির্দিষ্ট একটি জিনিস আমাদের কাজে লাগবে না, তা আমরা বর্জন করি ৷ উৎসব শুধুমাত্র জীবের জন্যই নয়, জড়ো পদার্থের ক্ষেত্রেও আনন্দ নিয়ে আসে ৷ আমার কাজের মাধ্যমে, আমি সেই জিনিসগুলিতে জীবন স্থাপন করার চেষ্টা করেছি ৷"
দক্ষিণ কলকাতার মনোহরপুকুর রোডের ত্রিধারার থিম ছিল 'অঙ্গন' ৷ এই থিমে সুন্দরভাবে ভারতীয় পারিবারিক বন্ধন এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের শক্তিশালী প্রতীক তুলে ধরা হয়েছিল ৷ এই থিমেরও শিল্পী ছিলেন গৌরাঙ্গ। তিনি বলেন, "জীবন দ্রুত প্রবাহমান। তারপরও আমাদের ভারসাম্যপূর্ণ জীবনের জন্য সমাজ এবং সংস্কৃতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা এই থিমের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছিল ৷" এই থিম চন্দননগরের হেলাপুকুর জগদ্ধাত্রী পুজোয় দ্বিতীয় জীবন পাবে ৷
এন্টালির 14 পল্লি, সুরুচি এবং ত্রিধারার মতো এতটা জনপ্রিয়তা পায়নি ৷ এই বছর এই পুজোর থিম ছিল ‘পরম্পরা’ ৷ আগের দুই পুজোর মতোই এটার শিল্পী ছিলেন গৌরাঙ্গ কুইল্যা ৷ শিল্পী বলেন, "ঐতিহ্যের মধ্যে দিয়ে চলতে থাকা বিভিন্ন পেশাকে তুলে ধরা হয়েছিল ৷ মণ্ডপ তৈরিতে বিভিন্ন রাজ্যের পট্টচিত্র, আলপনা, শোলা, হস্তশিল্পের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়।"