দার্জিলিং, 19 ফেব্রুয়ারি: বেতন বৃদ্ধির দাবিতে অস্থায়ী কর্মী ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকের বিক্ষোভের জেরে চরম অচলাবস্থার সৃষ্টি হল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে । বন্ধ হল সমস্ত প্রশাসনিক কাজ । উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও কার্যকরী কমিটির সদস্যদের আটকে রেখে চলল বিক্ষোভ । রাজ্য ও কেন্দ্রের টানাপোড়েনে পদত্যাগের আর্জি জানালেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ।
জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে বৃহস্পতিবার থেকে 16 শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে সারা বাংলা তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষাবন্ধু সমিতি । বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকরী কমিটির বৈঠক হয় । আর বৈঠকের খবর পাওয়ামাত্র এ দিন সকাল থেকে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান অস্থায়ী কর্মীরা । বাইরে থেকে গেট বন্ধ করে চলে বিক্ষোভ । আধিকারিকদের নিরাপত্তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা গেটে তালা লাগিয়ে দিলে সেই তালা ভেঙে প্রশাসনিক ভবনে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা । পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ডাকা হলে পরিস্থিতি আরও বেগতিক হয়ে পড়ে । শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুলিশকে ডাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের পাশাপাশি মাটিগাড়া থানার পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান আন্দোলনকারীরা ।
জানা গিয়েছে, এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির দাবি উঠেছিল । রাজ্য সরকারের দেওয়া 10 শতাংশ ডিএ এবং দু'বছরের 3% করে মোট 16 শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছিল । গত কার্যকরী কমিটির বৈঠকে জানানো হয়েছিল যে, পরবর্তী বৈঠকে ওই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । কিন্তু বৈঠকের এজেন্ডা থেকে অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি বাদ রাখা হয় । এরপর বিষয়টি জানামাত্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন সংগঠনের সদস্যরা । বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়, রাজ্য সরকারের তরফে স্থায়ী উপাচার্য ছাড়া কোনওরকম কার্যকরী কমিটির বৈঠক যাতে না ডাকা হয় তা সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে । কোরাম না হওয়ার কারণে ভেস্তে যায় বৈঠক । এ দিকে, দাবিপূরণ না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন চলবে বলে জানান আন্দোলনকারীরা । আর আন্দোলনের জেরে চরম অচলাবস্থার সৃষ্টি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ।
সারা বাংলা তৃণমূল কংগ্রেস শিক্ষাবন্ধু সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক রঞ্জিৎ রায় বলেন, "আমাদের এই দাবি আজকের না । বহু দিনের দাবি । বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন চলছে । এই উপাচার্য কোনও কাজ করছেন না । উলটে পুলিশ ডেকেছে । এর তীব্র নিন্দা জানাই । আমাদের দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলবে ।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার তথা যুগ্ম রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত বলেন, "রাজ্যের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল যে, স্থায়ী উপাচার্য ছাড়া কার্যকরী কমিটির বৈঠক যাতে না হয় । আদালতের রায় রয়েছে যে, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না । যে কারণে কোরাম হয়নি, তাই বৈঠক হয়নি । এ দিকে কর্মী সমস্যা, প্রতিদিন নতুন সমস্যা । রেজিস্ট্রার নেই । যার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে । যে কারণে আমি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ও আমাদের সংগঠনকে জানিয়েছি যে, আমি পদত্যাগ করতে চাই ।"
আরও পড়ুন: