সুন্দরবন, 2 ফেব্রুয়ারি: ডাকাত ধরার রুদ্ধশ্বাস অভিযান যেন সিনেমাকেও হার মানাবে ! জীবন উপেক্ষা করেই রয়্যাল বেঙ্গলের ডেরায় ঢুকল বন দফতরের কর্মীরা ৷ কারণ বাংলাদেশি ডাকাতরা পালিয়ে সেখানেই আশ্রয় নিয়েছে ৷ তাদের ধাওয়া করে দু'টি নৌকা-সহ 2 জন বাংলাদেশি ডাকাতকে গ্রেফতার করল সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ ৷
এই ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে সুন্দরবনে ন্যাশানাল ইস্ট পার্ক রেঞ্জ এলাকায় ৷ ধৃতরা আজিজ সরদার, আব্দুল গফ্ফর হাওলাদার ৷ তাদের বাড়ি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এলাকায় ৷ ধৃতদের কাছ থেকে 2টি নৌকা, একটি একনলা বন্দুক, একটি হরিণের শিং, 6টি ধারালো দা, একটি কুঠার, 6টি মোবাইল ফোন, 2টি বাংলাদেশের সিমকার্ড , বাংলাদেশি 550 টাকা, নেপালের একটি 20 টাকার নোট, 10টি গেঁওয়া কাঠ সমেত আরও অনেক কিছু বাজেয়াপ্ত করেছে রেঞ্জ আধিকারিকরা ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা 6টি কাঁকড়া ধরার নৌকা এবং একটি মাছ ধরার নৌকায় মৎস্যজীবিদের বেধড়ক মারধর করে তারপর ছিনতাই করে ৷ সুন্দরবন ন্যাশানাল ইস্ট পার্ক রেঞ্জ সংলগ্ন খালের ধারে রেঞ্জার স্বপন কুমার মাঝি ও ট্রেনি রেঞ্জার নবকুমার সাউয়ের নেতৃত্বে ফরেস্ট গার্ড দীপক মৃধা, অরণ্যসাথী সুকুমার মণ্ডল, সুব্রত কুমার সাউ, বুদ্ধদেব দলপতি, শশবিন্দু পাত্র-সহ 7 সদস্যের একটি দল নজরদারি চালাচ্ছিল ৷ সেই সময় তাঁরা 4টি নৌকা দেখতে পান ৷
তাঁরা নৌকাগুলির কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করলে বিপদ বুঝে দু'টি নৌকার 7 জন নদীতে ঝাঁপ দেয় ৷ এরপর তাঁরা সুন্দরবনের জঙ্গলে বাঘের ডেরায় লুকিয়ে গাঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করে ৷ এদিকে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের সদস্যরা সুন্দরবন জঙ্গলে নেমে চিরুনি তল্লাশি অভিযান চালায় ৷ দীর্ঘ প্রায় দু'ঘণ্টা বাঘের আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে দুই বাংলাদেশি ডাকাতকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন সদস্যরা । তবে অন্যরা পালিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে ৷ তাদের খোঁজে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ তল্লাশি অভিযান জারি রেখেছে ৷
ঘটনা প্রসঙ্গে ন্যাশানাল ইস্ট পার্কের ট্রেনি রেঞ্জার নবকুমার সাউ বলেন, "ধৃত ডাকাতরা সুন্দরবনের জঙ্গলে ডাকাতি করেছে ৷ পাশাপাশি ডাকাত দলটি জঙ্গলের মধ্যে একটি হরিণ মেরে পুড়িয়ে খেয়েছে । তার প্রমাণস্বরূপ জঙ্গলে পোড়া মাংসের অংশ পাওয়া গিয়েছে ৷ ওরা অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে সুন্দরবনে চলে আসছিল ৷ এখানে মধুর সময়, কাঁকড়ার মরশুমে এসে লুঠপাট চালায় ৷" গত 9 মাসের মধ্যে 4 বার এই ধরনের সাফল্য পেয়েছে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ ৷ তবে বিগত পাঁচ বছরে এমন বড় সাফল্য আসেনি ৷
আরও পড়ুন: