কলকাতা, 3 জুন: স্কুল বলতেই মনে পড়ে এক চেনা ছবি । সেই বোরিং ক্লাস ৷ চক, ডাস্টার হাতে নিয়ে ব্ল্যাকবোর্ডে পড়িয়ে চলেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা । সেই পড়া মন দিয়ে শুনছেন ছাত্রছাত্রীরা । কিন্তু এবার ভিন্ন ছবি ধরা পড়ল যাদবপুর বিদ্যাপীঠে । স্কুলে এসে চলছে ক্লাস ৷ তবে নেই ব্ল্যাকবোর্ড ৷ বরং শিক্ষকের সামনে খোলা রয়েছে একটি ল্যাপটপ । ব্ল্যাকবোর্ডের বদলে রয়েছে সাদা স্ক্রিন । প্রজেক্টরের মাধ্যমে সেখানে চলছে সিনেমা ।
রাজ্যের স্কুলেগুলিতে চলছে গরমের ছুটি । পড়ুয়াদের জন্য সেই ছুটি শেষ হবে জুন মাসের 10 তারিখ । কিন্তু এই গরমের ছুটির মাঝেই চলছে 'সামার প্রজেক্ট'-এর কাজ । আর সেই 'সামার প্রজেক্ট'-এর অংশ হিসেবে বেছে নেওয়া হল সিনেমা দেখানোকে । স্কুলে ডেকে এক দিন সকাল 11টা থেকে নবম শ্রেণির সকল পড়ুয়াদেরকে একত্রিত করে দেখানো হল অস্কারজয়ী ডকুমেন্টরি 'দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স'।
কিন্তু হঠাৎ স্কুলে বসে সিনেমা দেখা কেন? কারণ হিসাবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য জানান, "এর ফলে পশুদের প্রতি পড়ুয়াদের একটা ভালবাসা তৈরি হবে । এই সিনেমাটা দেখে ওরা ওদের প্রজেক্টের খাতায় বিষয়টির সারমর্ম নিজের ভাষায় লিখে আনবে গরমের ছুটির পর ।" যদিও প্রধান শিক্ষক এর পুরো কৃতিত্বই দিচ্ছেন স্কুলের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক শিক্ষিকাদের । স্কুলের শিক্ষিকা মিস্টুমি দত্ত বলেন, "সিনেমা দেখানোর ফলে পড়ুয়াদের ইংরেজিতে কথা বলার মাধ্যমটাও আরো ভালো হচ্ছে । ওরা ইংরেজি ভাষাটা শুনছে ৷ কোথাও বুঝতে সমস্যা হলে আমাদের জিজ্ঞাসা করছে । নিজেদের মধ্যে এই নিয়ে আলোচনা করছে ৷"
স্কুলের এই অভিনব ভাবনায় খুশি পড়ুয়ারাও । নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর কথায়, "সাধারণত আমরা সিনেমা দেখি বাবা-মায়ের সঙ্গে । কিন্তু এখানে বন্ধুদের সঙ্গে নিজের বেঞ্চে বসেছে সিনেমা দেখছি । আমার খুব ভালো লাগছে, এই সিনেমাটাও খুব ভালো ।" আরও এক পড়ুয়া স্বর্ণদীপ ঠাকুর জানায়, "দীর্ঘ গরমের ছুটির পর আমরা স্কুলে এসেছি । বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হল ৷ প্রথমে একটু গল্প করলাম, তারপর সকলে মিলে সিনেমা দেখেছি । এই অভিজ্ঞতাটা আমার কাছে প্রথম ।"
স্কুলের এই পদক্ষেপে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি খুশি হয়েছেন অভিভাবকেরাও ৷ পিংকি সাপুই নামে এক অভিভাবক বলেন, "আজ ছেলেমেয়েদের সিনেমা দেখিয়েছে ৷ এই নিয়ে প্রজেক্ট করবে ওরা । স্কুলের এই পদক্ষেপকে আমরা সমর্থন জানাচ্ছি ৷ এতে ওদের ভালো হবে ।" নবম শ্রেণির পাশাপাশি দশম শ্রেণির পড়ুয়াদেরকে দেখানো হয়েছে 'ক্যাঙ্গারু কাওস' ডকুমেন্টরি ।