কলকাতা, 16 ফেব্রুয়ারি: রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদল। অবশেষে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। তাঁর হাতে থাকা দফতরগুলির দায়িত্ব দেওয়া হল উত্তর 24 পরগনার গুরুত্বপূর্ণ নেতা তথা রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে। একইভাবে বন দফতরের দায়িত্ব পেলেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা ৷
মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে পার্থ ভৌমিককে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাতে থাকা পাবলিক এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রি-কনস্ট্রাকশনের (শিল্প পুনর্গঠন) দায়িত্ব দিলেন রাজ্যপাল ৷ বীরবাহা হাঁসদা স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত বন দফতরের দায়িত্ব সামলাবেন। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক থেকে বন দফতর ও পাবলিক এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিকনস্ট্রাকশনের দফতর থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপালের মধ্যে আলোচনার পরেই দায়িত্ব থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করেন রাজ্যপালকে সূত্রের খবর।
গত কয়েকদিন ধরেই রেশন দুর্নীতি মামলায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অপসারণের দাবি উঠছিল বিভিন্ন মহলে কিন্তু তাঁর পাশে ছিল দল। কিন্তু শুক্রবার আচমকায় তাকে মন্ত্রীপদ থেকে সরিয়ে দেয়া হল। ফলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পথেই মন্ত্রীপদ হারালেন জেলবন্দি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ঘটনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিন রাজভবনের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অপসারণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন তাতে জানা গিয়েছে, তার হাতে থাকা বন এবং এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড রিকনস্ট্রাকশন দফতরের দায়িত্ব পার্থ ভৌমিক এবং বীরবাহা হাঁসদার মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়।
এদিন রদবদল হওয়ার পর পার্থ ভৌমিকের হাতে গেল সেচের পাশাপাশি পাবলিক এন্টারপ্রাইজ এবং শিল্প পুনর্গঠন দফতরের দায়িত্ব পেলেন তিনি। অন্যদিকে রাষ্ট্রমন্ত্রী হলেও বীরবাহা হাঁসদাকে দেওয়া হল বনদপ্তরের স্বাধীন দায়িত্ব। ইতিমধ্যেই তিনি স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং সংযুক্তি দপ্তরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী রয়েছেন। এদিন তার সঙ্গে যুক্ত হল বাড়তি দায়িত্ব।
প্রসঙ্গত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হলেও তাঁর পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী তাঁকে এও বলতে শোনা যায়, "আমি বিশ্বাস করি না জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক চোর।" উলটে, মন্ত্রীর পক্ষে সাফাই দিতে গিয়ে তিনি বাম আমলের দুর্নীতি মুক্ত করতে খাদ্যদফতর কী পদক্ষেপ নিয়েছে তার খতিয়ান দিয়েছিলেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই মনে করা হচ্ছিল দলনেত্রী তার পাশেই আছে। কিন্তু এদিন আচমকাই লোকসভা নির্বাচনের আগে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাবলী মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এর কিছু পিছনে মূল কারণ কী তা নিয়ে অবশ্যই সংশয় থাকছে।
আরও পড়ুন
চলতি সপ্তাহেই রেশন দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট, নাম থাকছে জ্যোতিপ্রিয়রও