কলকাতা, 13 জুলাই: লোকসভা ভোটে পরাজিত হয়েছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী ৷ এরপর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বদলের সম্ভাবনা জোরালো হয়ে ওঠে ৷ সপ্তাহ তিনেক আগে তাতে ঘি ঢালেন অধীর নিজেই ৷ জানান, এবার তিনি পদ থেকে সরে যেতে চান। সূত্রের খবর, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে অধীররঞ্জন চৌধুরীকে সরানো হলে সেই পদে আপাতত কে আসবেন তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। মোট চারটি নাম উঠে আসছে কংগ্রেস হাই কমান্ডের বাছাই করা তালিকায় ৷
একজনকে সভাপতি করা হলেও উত্তর-দক্ষিণবঙ্গ এবং কলকাতা মিলিয়ে সহ-সভাপতি পদে দু-তিনজনকে বসানো হতে পারে ৷ যাতে গোটা রাজ্যের সবক'টি জেলাকে চাঙ্গা করা যায় ৷ খুব দ্রুত বৈঠক ডেকে কংগ্রেস হাইকমান্ড এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ৷ একই সঙ্গে দাবি করা হচ্ছে, যাকেই প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব দেওয়া হোক না কেন, বঙ্গের শাসকদল তৃণমূলের সঙ্গে কীরকম সম্পর্ক রাখা হবে তার ভিত্তিতেই প্রদেশ কংগ্রেসের 'হাল' নির্ভর করছে ৷ কারণ, লোকসভা নির্বাচনে অধীরের নেতৃত্বে কংগ্রেস তৃণমূলের বিরুদ্ধে বামেদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল ৷ তাতেও লাভ হয়নি ৷
সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি হিসেবে দীপা দাশমুন্সির নাম উঠে আসছে ৷ তিনি ছাড়া আরও চারজনের নাম এআইসিসি-র পছন্দের তালিকায় রয়েছে ৷ তাঁরা হলেন, এআইসিসি-র প্রাক্তন সম্পাদক শুভঙ্কর সরকার, অধীর-ঘনিষ্ঠ পুরুলিয়ার নেতা নেপাল মাহাতো, উত্তরবঙ্গের নেতা শঙ্কর মালাকার এবং বাম আমলের মন্ত্রী তথা সিপিএম ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া আবদুস সাত্তার ৷
বিধান ভবন সূত্রের দাবি, তরুণ নেতাদের অনেকেই চাইছেন শংকর মালাকার বা আবদুস সাত্তারকে প্রদেশ সভাপতি করা হোক ৷ তাঁরা ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীরের কাছে দরবার করেছেন ৷ কিন্তু, এই দু'জনের কাউকেই সভাপতি করা হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ৷
আবদুস সাত্তার সিপিএম ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া নেতা ৷ আর উত্তরবঙ্গ থেকে বিধান ভবনের দূরত্ব অনেক ৷ অধীর চৌধুরী সাংসদ থাকাকালীন দিল্লি থেকে রাজ্যে ফিরলেও বহরমপুরেই বেশি সময় দিতেন ৷ ফলে, কলকাতা বা শহর লাগোয়া জেলা থেকে সভাপতি না-করা হলে একই অবস্থা থাকবে ৷ আর দীপা দাশমুন্সিকে আগেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু, তিনি ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন ৷ এখন তিনি এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তেলেঙ্গানা, কেরল, লাক্ষাদ্বীপের দায়িত্বে রয়েছেন ৷ এমতাবস্থায় প্রদেশ সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ তিনি নিতে চাইবেন কি না সেটাই এখন দেখার।
আবার অনেক নেতাই বলছেন, "দায়িত্ব বা পদে যাকেই বসানো হোক, রাজ্যের শাসক দলের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে অধীরের মতো কঠোর মনোভাব না নিলে কংগ্রেসের যেটুকু আছে সেটুকুও থাকবে না ৷" এখন দেখার কংগ্রেস হাইকমান্ড বঙ্গ কংগ্রেসের হাল ফেরাতে কার উপর দায়িত্ব দেয় ৷