কলকাতা, 21 অক্টোবর: দশ দফা দাবিকে সামনে রেখে জুনিয়র চিকিৎসকদের আমরণ অনশন চলছে । সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তাঁরা । এরই মাঝে ধরা পড়ল শহরের সরকারি হাসপাতালের শৌচালয়ের বেহাল অবস্থার ছবি ৷ চারিদিকে নোংরা-আবর্জনায় ভর্তি ৷
মূলত জুনিয়র চিকিৎসকদের 10 দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি বাদ দিয়ে বাকি ন'টি দাবি রাজ্য সরকারের কাছে তাঁরা করেছেন । সেখানে তাঁদের পাঁচ নম্বর দাবির মধ্যে যুক্ত রয়েছে হাসপাতালগুলিতে শৌচালয় ব্যবস্থা । জুনিয়র চিকিৎসকরা দাবি করেছেন, শৌচালয়ের সঙ্গে হেল্পলাইন নম্বর যুক্ত করতে হবে । তার পাশাপাশি মহিলা ও পুরুষ শৌচালয়ের আলাদা করতে হবে । এর সঙ্গে শৌচালয়ের অবস্থাগুলিকে উন্নত করতে হবে ।
যদিও রাজ্য সরকারের তরফে পালটা দাবি করা হয়েছে, রাজ্যের সমস্ত সরকারি হাসপাতালে 10 শতাংশ কাজ আর বাকি রয়েছে । কিন্তু, এর মাঝেই ভিন্ন চিত্র ধরা পড়ল । শহর কলকাতার অন্যতম সরকারি হাসপাতাল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ । সেখানে চক্ষু বিভাগের শৌচালয়ে দেখা গেল ভয়ানক ছবি ! যে সমস্ত রোগীরা নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে আসেন অথবা যে সমস্ত চিকিৎসকেরা সেখানে অন ডিউটি অবস্থায় থাকেন, তাঁদের যে শৌচালয়ের ব্যবহার করতে হয়, তা দেখে রীতিমতো আঁতকে ওঠার অবস্থা !
কারণ, সেখানকার শৌচালয়ে কোথাও রয়েছে ভাঙা কমোড । আবার কোথাও দেখা যাচ্ছে, বাথরুম ভর্তি বর্জ্য পদার্থ । এই অবস্থা সামনে আসার পর জুনিয়র চিকিৎসকেরা প্রশ্ন তুলছেন, রাজ্য সরকারি হাসপাতালগুলির কোথায় উন্নতি হয়েছে ? তাঁদের কথায় উঠে আসছে, শুধুমাত্র নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ নয়, বরং এই চিত্র সারা রাজ্যের একাধিক হাসপাতালে রয়েছে ।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সম্মতি, তবে উঠছে না অনশন; মুখ্যসচিবকে ইমেল জুনিয়র ডাক্তারদের
এই বিষয়ে জুনিয়র চিকিৎসক ত্রিনেশ মণ্ডল বলেন, "সরকারি হাসপাতালে কাজ শুরু হয়েছে এটা ঠিক কথা । কিন্তু রাজ্যে সরকার যে তথ্য দিচ্ছে তার সঙ্গে বাস্তবে অনেক তফাৎ । চিকিৎসকদের অনেক লম্বা ডিউটি করতে হয় । কোনও সময়ের মাপকাঠি থাকে না । এই নোংরা পরিবেশের মাধ্যমেই চিকিৎসকদের সেই ডিউটি চালিয়ে নিয়ে যেতে হয় । আমি সরকারকে বলব, এই বিষয়টি যেন তারা নজরে আনেন ।"
একই কথা শোনা গেল আরেক জুনিয়র চিকিৎসক আকিবের গলায় ৷ তাঁর বক্তব্য, "সুপ্রিম কোর্টে বলা হয়েছে, হাসপাতালগুলিতে কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে ৷ তা একদমই না । আমাদের একদম সাধারণ জিনিসগুলোর দরকারে পর্যন্ত হাসপাতালে বাইরে যেতে হয় । যেকোনও সাধারণ মানুষ যাক সরকারি হাসপাতালে তাহলে বুঝতে পারবে এখন কী অবস্থায় রয়েছে সেগুলি ।"
অন্যদিকে সিনিয়র চিকিৎসক ও জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টরসের সদস্য কৌশিক চাকি বলেন, "আমি চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলতে পারি কোনও নিরপেক্ষ একটি দল রাজ্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে যাক ৷ তাহলে আসল চিত্র বুঝতে পারবে । কাজ শুরু হয়েছে ঠিক কথা, কিন্তু সরকারকে বলব যেরকম কোভিডের সময় আমরা সকলে এক হয়ে কাজ করেছিলাম, এবারও এমন একটি টিম তৈরি করুন । নিরপেক্ষভাবে সেই দল বিচার করুক কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যে ।"
কেন স্বাস্থ্য সচিবকে সরাতে হবে ? মুখ্যসচিবকে মেইল করে ব্যাখা জুনিয়র চিকিৎসকদের