বহরমপুর, 14 ডিসেম্বর: হুজুর বিয়ে করব । একটা পাকা ঘর দিন । সটান বিডিওর ঘরে ঢুকে কাতর আর্জি বছর পঞ্চান্নর এক প্রৌঢ়ের । আবদার শুনেই হকচকিয়ে গেলেন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা-1 ব্লকের বিডিও রবীন্দ্রনাথ অধিকারী । সব শুনে ধাতস্ত হন ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক ।
নাছোরবান্দা প্রৌঢ়ের ঘনঘন আবদারে বিরক্ত হলেও বিডিও তাঁকে তাড়িয়ে দিলেন না । সব শুনে প্রৌঢ়কে আশ্বস্ত করেই ফেরালেন । বেলডাঙা-1 ব্লকের বিডিও রবীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, "সব দিক খতিয়ে দেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।" বিডিওর কাছে আশ্বাস পেয়ে খুশি হয়েই বাড়ি ফিরলেন প্রৌঢ় ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রৌঢ়র নাম আবদুর শুকুর মোল্লা ৷ তিনি মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা-1 ব্লকের বেগুনবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজিশাহের বাসিন্দা ৷ বছর দশেক আগে আবদুর শুকুর মোল্লার স্ত্রী গত হয়েছেন । অভিযোগ, ছেলেরা বাবাকে দেখেন না । ছিটেবেড়ার ঘরে কোনোরকমে মাথা গুঁজে দিন গুজরান করেন প্রৌঢ় । নিজের রান্না নিজেই করে খেতে হয় তাঁকে ।
এই একাকীত্বের জীবন দূর করতে ফের বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আবদুর । কিন্তু এই বাজারে পাকা ঘর না-থাকলে কেউ মেয়ে দিতে রাজি হচ্ছেন না তাঁকে । এদিকে বাংলা আবাস যোজনার তালিকায় নাম আসেনি আবদুর শুকুর মোল্লার । ঘরবাঁধার স্বপ্ন নিয়ে অবশেষে বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি । আবদুর শুকুর মোল্লার এই কাহিনি এখন বেলডাঙা ছাড়িয়ে জেলার মানুষের মুখেমুখে ঘুরছে । সোশাল মিডিয়ায় বহু মানুষের সহানুভূতি কুড়িয়েছেন আবদুর ।
অভিযোগ, মুর্শিদাবাদে বাংলা আবাস যোজনা তালিকা থেকে প্রচুর নাম বাদ গিয়েছে । যা নিয়ে জেলাজুড়ে কার্যত শোরগোল পড়ে গিয়েছে । নামের তালিকা খতিয়ে দেখতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে প্রশাসন । আর এরই মধ্যে কাজিশাহের আবদুর শুকুর মোল্লা বিডিওর কাছে বাড়ি চেয়ে কার্যত শিরোনামে চলে এসেছেন ।
আবদুর শুকুর মোল্লা বলেন, "খুব কষ্ট সহ্য করে বেঁচে আছি । একজন সঙ্গী দরকার। পাকা ঘর না থাকলে সঙ্গী জুটছে না । তাই বিডিও সাহেবের কাছে দরবার করেছি । জানি না কী হবে না হবে ।"