কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি: রুক্ষ ভূমিতে যেন প্রাণের সঞ্চার ৷ তেমনটাই ঘটতে চলেছে গড়িয়ার ব্রহ্মপুরে ৷ সেখানে তৈরি হয়েছে 3.2 মিলিয়ন গ্যালন ক্ষমতা সম্পন্ন বুস্টিং পাম্পিং সেন্টার ৷ 111 নম্বর ওয়ার্ডের সেনপল্লিতে এই আধুনিক জলাধার তৈরি হয়েছে ৷ যা চালু হচ্ছে আগামী মার্চ মাস থেকে ৷ এর ফলে সুভাষপল্লি, কামডহরি, গড়িয়া, সোনারপুর ও যাদবপুর সীমানা লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকার 35-40 হাজার নাগরিক পাবেন পরিশ্রুত পানীয় জল ৷ এই কর্মকাণ্ডে খরচ হচ্ছে 28 কোটি টাকা ৷
এক সময় এই সমস্ত এলাকা কলকাতা পৌরনিগমের আওতাধীন হয় ৷ অভিযোগ ছিল, সংযুক্ত এলাকার টাকা বরাদ্দ হলেও, উন্নয়ন তেমন হয়নি ৷ তার মধ্যে অন্যতম ছিল পানীয় জলের সমস্যা ৷ তবে বেশ কয়েক বছর ধরে এলাকায় পৌর পরিষবা ঢেলে সাজানো হয়েছে ৷ সেই কাজ করতে গিয়ে কলকাতা পৌরনিগমের নজরে আসে, ওই এলাকায় তীব্র পানীয় জলের কষ্ট ৷ যেখানে ভূগর্ভস্থ জল একমাত্র ভরসা ৷ গভীর নলকূপ থেকে জল তুলে পাম্পের সাহায্যে এলাকার লোকজনকে দেওয়া হত ৷ আর গরমকালে জলের চাহিদা বাড়লে সংকট আরও প্রকট হত ৷
আর পানীয় জলের চরম সঙ্কট চরম ছিল 111 নম্বর ওয়ার্ডে ৷ আশপাশের এলাকায় যেতে হতো জলের জন্য ৷ এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে এই বিষয় জানান সেখানকার তৃণমূল কাউন্সিলর সন্দীপ দাস ৷ এর পরে তাঁর সহযোগিতায় শেষমেষ সংকট কাটতে চলেছে ৷ আগামী মাস থেকে গড়িয়া-সহ আশেপাশের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষকে আর নলকূপ নয়, এক্কেবারে জল প্রকল্পের থেকে পাইপলাইন মারফত আসবে পরিশ্রুত পানীয় জল ৷ বহু বছরের দাবি পূরণ হতে চলায় এলাকায় খুশির আবহ ৷ উল্লেখ্য, এই এলাকায় এতদিন গার্ডেনরিচের জল আসত ৷ ফলে সেখানেও জলের চাপ কম ছিল ৷ সেই সব সমস্যার সমাধান এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা ৷
কলকাতা পৌরনিগম সূত্রে জানা গেছে, সমস্যার কথা জানতে পেরে পরিকল্পনা বেশকয়েক বছর আগেই করা হয়েছিল ৷ তবে, করোনা সব ঘেঁটে দেয় ৷ এরপর বছর খানেক আগে কাজ শুরু হয় পুরোদমে ৷ সম্প্রতি এই জলাধার নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে ৷ খেয়ালী সংঘ, ভট্টাচার্য পাড়া, চারুনগর, সারদা পার্ক, শরৎ পল্লি, সেন পল্লি-সহ আশপাশে এলাকার মানুষ উপকৃত হবেন ৷ এই বিস্তীর্ণ এলাকায় এখন কমবেশি 30টি গভীর নলকূপ আছে ৷ এই জলাধার হলে প্রায় 20টির বেশি নলকূপ বন্ধ করে দেওয়া হবে ৷ এতে ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহার কমবে ৷
এই সমস্ত এলাকার মানুষজন জানান, অনেক দিনের দাবিপূরণ হতে চলেছে ৷ কলকাতা পৌরনিগমে অন্তর্ভুক্তির বহু বছর হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু, পরিশ্রুত পানীয় জল পায়নি আজ পর্যন্ত ৷ সেই দাবিপূরণ হচ্ছে ৷ যার কৃতিত্ব স্থানীয়রা দিয়েছেন কাউন্সিলর সন্দীপ দাসকে ৷ কাউন্সিলর সন্দীপ দাসের বক্তব্য, "মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস অনেকটাই সহায়তা করেছেন এই কাজে ৷ আমার ওয়ার্ড-সহ আশপাশের লাগোয়া ওয়ার্ডগুলির বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মানুষ দীর্ঘদিন এই জল কষ্টে ভুগেছেন ৷ তাদের সেই কষ্ট লাঘব করতে পেরে ভালো লাগছে ৷"
আরও পড়ুন: