মালদা, 4 নভেম্বর: ভাইদের মঙ্গলকামনায় রবিবার গোটা দেশে পালিত হয়েছে ভাইফোঁটা ৷ ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে যমের দুয়ারে কাঁটা বিছিয়েছেন বোনেরা ৷ ঠিক সেই সময় 'যমরূপী' দুই ভাইয়ের কীর্তির কথা সামনে এল ৷ অভিযোগ, তাদের লালসার শিকার হয়েছে ছোট্ট বোন ৷ রবিবার দুই অভিযুক্তের স্থান হয়েছে জেলে ৷
মালদা জেলার এক প্রান্তিক গ্রামে ঘটনাটি ঘটে 27 অক্টোবর ৷ তখন গোটা দেশ মেতে ছিল আলোর উৎসবে ৷ সেদিন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এক গ্রামে আট বছরের এক শিশুকন্যা দুই দাদার হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হয় বলে অভিযোগ ৷ সে স্থানীয় একটি প্রাইমারি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে ৷ তার দুই তুতো দাদাও পড়াশোনা করে ৷ 16 বছর বয়সি খুড়তুতো দাদা দশম শ্রেণির ছাত্র ৷ আর পিসতুতো দাদার বয়স 20 বছর ৷ সে কলেজে পড়াশোনা করে ৷
সেদিন রাতেই বাবা-মাকে সব খুলে বলে ওই বালিকা ৷ সব শুনে হতভম্ব হয়ে পড়েন বাবা-মা'ও ৷ কী করবেন ভেবে উঠতে পারছিলেন না তাঁরা ৷ মানসিক দ্বিধায় কয়েকটি দিন কেটে যায় ৷ শেষ পর্যন্ত সব দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে শনিবার তাঁরা স্থানীয় থানায় গোটা ঘটনা জানিয়ে দুই নিকটাত্মীয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৷ অভিযোগ পেয়েই দুই দাদাকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ সরকারি হাসপাতালে নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষাও করানো হয় ৷ রবিবার ধৃতদের জেলা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক দু'জনকেই 14 দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷
থানায় দায়ের করা অভিযোগপত্রে নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছেন, কালীপুজো নিয়ে যখন সবাই ব্যস্ত ছিল, তখন বাজি দেওয়ার নাম করে দুই ভাই তাঁর মেয়েকে নির্জন জায়গায় নিয়ে যায় ৷ সেখানে দু'জনই মেয়ের যৌন নির্যাতন করে ৷ মেয়ে সেই রাতে সব ঘটনা তাঁদের জানিয়েছিল ৷ কিন্তু অভিযুক্তরা তাঁদের ছেলের মতো ৷ আত্মীয়ের ছেলেদের বিরুদ্ধে কীভাবে পুলিশে অভিযোগ করবেন, তা তাঁরা ভেবে উঠতে পারছিলেন না ৷ অনেক চিন্তাভাবনার পর তাঁরা থানায় অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেন ৷ তা না হলে অভিযুক্তরা ভবিষ্যতেও এমন ঘটনা ঘটাতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা হয় ৷ অভিযুক্ত দুই ভায়েরই কড়া শাস্তি চাইছেন নিগৃহীতার পরিবার ৷
পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, "অভিযোগ পাওয়ার পর দুই অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষাও করানো হয়েছে ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে দু'জনের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করে রবিবার জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে ৷"