কলকাতা, 1 সেপ্টেম্বর: মহামিছিলের গর্জন কলকাতার রাজপথে ৷ রবিবারের বিকেলে কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত নাগরিক সমাজ, বুদ্ধিজীবীদের একাংশ, জুনিয়র ডাক্তার এবং রূপান্তরকামীরা একযোগে পা মেলালেন মহামিছিলে ৷ ডাক উঠল, 'বিচার চায় আরজি কর' ৷ চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় জড়িত সকল অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি উঠল মিছিল থেকে ৷ ঘোষণা করা হয়েছে, যতদিন না-বিচার হচ্ছে, ততদিন রাস্তায় নেমে এই আন্দোলন জারি থাকবে ৷ পাশপাশি রাজপথে ধরনায় বসলেন সোহিনী সরকার থেকে শুরু করে লগ্নাজিতা চক্রবর্তীরা। জানা গিয়েছে, রবিবার সারারাত তাঁরা রাস্তায় থাকবেন । ভোর চারটে পর্যন্ত চলবে ধরনা ।
উল্লেখ্য, আজকের ওই মহামিছিলে টালিগঞ্জের তারকামহলের একাংশ অংশগ্রহণ করেছেন ৷ অপর্ণা সেন, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, চৈতী ঘোষাল, অপরাজিতা আঢ্য, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়-সহ অসংখ্য বুদ্ধিজীবী এই মিছিলে হাঁটলেন ৷ রাজনৈতিক ব্যানার ও রঙের উর্ধ্বে সকলের একটাই দাবি, সুবিচার পাক আরজি কর ৷ তাঁরা জানালেন, আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়ার সঙ্গে ঘটা অপরাধের বিচারই একমাত্র দাবি ৷ এখানে কোনও রং, কোনও দলের ভেদাভেদ নেই ৷
মহামিছিল থেকে অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় বলেছেন, "আজকে অভিনেত্রী হিসেবে আসিনি ৷ একজন মেয়ে হিসেবে এসেছি ৷ এই লড়াই থামবে না ৷ এই লড়াই চলবে ৷ আজকে এতগুলো দিন পেরিয়ে গেল, বিচার পাওয়া গেল না ৷ এত মানুষ এসেছেন একটাই দাবিতে, অপরাধীদের খুঁজে বের করা হোক, শাস্তি হোক ৷"
এই মিছিলে নাগরিক সমাজের ব্যানার নিয়ে একদল মানুষকে দেখা গেল ৷ যেখানে লেখা ছিল, "রাজার নীতি ভুল হয়েছে ৷ তাই লড়াই সকলের ৷ গেরুয়া, লাল, সবুজ নয় ৷ এই মিছিল মানুষের মহামিছিল ৷" তাঁদের সঙ্গেই দেখা গেল রূপান্তরকামীদেরও ৷ আরজি করের সুবিচারের দাবিতে তাঁরা পথে নেমেছিলেন 14 অগস্ট রাতে ৷ আজ আবার সেই রূপান্তরকামীদের দেখা গেল কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মহামিছিলে ৷
নাগরিক সমাজের এই মহামিছিলে নিজেদের পাঁচদফা দাবি নিয়ে সামিল হল আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দলও ৷ ব্যানারে নিজেদের দাবি লিখে মিছিলে হাঁটলেন হবু চিকিৎসকরা ৷ যেখানে তাঁদের প্রথম ও অন্যতম দাবি, প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারি এবং চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের সুবিচার ৷ দ্বিতীয়ত, সন্দীপ ঘোষের সাসপেনশন ৷ তৃতীয় দাবি, 14 অগস্ট রাতের ঘটনার দায় নিয়ে কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েলের পদত্যাগ ৷ চতুর্থ, আরজি কর হাসপাতালের সকল চিকিৎসক, জুনিয়র ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা এবং কলেজ ও হাসপাতালে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা ৷