কলকাতা, 2 ডিসেম্বর: আলু ও পেঁয়াজের দাম যতক্ষণ না নিয়ন্ত্রণে আসছে, ততক্ষণ তা রফতানি করা হবে না বলে ফের স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । প্রসঙ্গত, আগামিকাল থেকেই গোটা রাজ্যে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে । তাদের দাবি, আগে অন্য রাজ্যে রফতানির জন্য আলু ছাড়তে হবে, নইলে তারা হিমঘর থেকে আলু বের করবে না । তাদের চাপের মুখে সরকার যে মাথা নোয়াবে না, সেই বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আগে বাংলা পাবে, তার পর বাকিরা ।'
আলু ও পিঁয়াজের অগ্নিমূল্য সাম্প্রতিক সময়ে গৃহস্থের জন্য বড় চিন্তার কারণ । রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দাম নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা হলেও এখনও আলু ও পেঁয়াজের দাম সাধারণের নাগালের মধ্যে এসেছে বলে মনে করছেন না মানুষজন । এই অবস্থায় আগেই একশ্রেণির স্বার্থপর ব্যবসায়ীকে নিয়ে সরব হয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সোমবার অর্থাৎ আজ রাজ্য বিধানসভায় আরও একবার এই নিয়ে নিজের বক্তব্য স্পষ্টভাবে তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী ।
তিনি এ দিন বলেন, "দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়টা সবটা আমাদের হাতে নেই । যখন বাজারে আলুর দাম বাড়ে তখন আমরা মানুষকে সুফল বাংলায় কম দামে আলু সাপ্লাই করি ।" তিনি তথ্য দিয়ে বলেন, "আপনারা জানেন, গোটা দেশে আলু উৎপাদনে বাংলা দ্বিতীয় । হলে কী হবে, চাষীদের দোষ নয় । কিছু লোক ব্যবসার জন্য সেগুলিকে বাইরে নিয়ে যায় । রফতানিও করে ।"
পেঁয়াজ নিয়ে বলতে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আগে বাংলায় একটিও পেঁয়াজ হত না । আমরা ক্ষমতায় আসার পর 75 শতাংশ পেঁয়াজ বাংলায় তৈরি করছি । সেই পেঁয়াজ যাঁরা বাংলার বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছেন, তাঁরা কেন বুঝতে পারছেন না, আগে ঘর সামলাবে নাকি টাকা কামাবে !"
তিনি আরও বলেন, "কয়েকজন মুনাফা লুটবে, তার জন্য আমার বাংলা ভুগবে - সেটা আমরা মেনে নেব না । আগে বাংলা পাবে, তারপর অন্য কোনও জায়গায় যাবে । এটা আমাদের পরিষ্কার সিদ্ধান্ত ।" মুখ্যমন্ত্রী এদিন এটাও জানিয়ে দিয়েছেন, "দ্রব্যমূল্য হ্রাসের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে এগিয়ে ।"
মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্নাও আজ জানিয়েছেন, যতদিন না পর্যন্ত বাংলার মানুষের আলুর চাহিদা পূরণ হবে, ততদিন আলু বাইরে পাঠানো হবে না ৷ তিনি বলেন, "বাংলায় আলুর ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে । ব্যবসায়ীদের ন্যায্যমূল্য দেওয়া হচ্ছে ।" আলুর দাম নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে বলে তোপ দাগেন তিনি ৷