কলকাতা, 11 ডিসেম্বর: কলকাতায় হানা দিল মুম্বইয়ের সাইবার দস্যুরা ! তাও আবার দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের পরিচয় দিয়ে ৷ এমনই এক ঘটনা ঘটেছে কলকাতার চারুমার্কেট থানা এলাকায় ৷ প্রথমে ফোনে ও পরে ভিডিয়ো কলে এক মহিলার সঙ্গে 66 লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে ৷ ঘটনার তদন্তে নেমে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ৷
লালবাজার সূত্রে খবর, মুম্বইয়ের একটি সাইবার গ্যাং এই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত ৷ এই ঘটনায় যুক্ত থাকার সন্দেহে ধৃত দু’জন মুম্বইয়ের বাসিন্দা ৷ ধৃতদের নাম ধনাজি জগন্নাথ শিন্ডে এবং বিনোদ পাওয়ার ৷ মুম্বইয়ের বাসিন্দা হলেও, শিয়ালদা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গোয়েন্দারা ৷
এই বিষয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার ইটিভি ভারতকে বলেন, "এটা অপরাধের একটা নতুন ধরন ৷ এরা প্রত্যকেই মুম্বইয়ের বাসিন্দা ৷ এঁদের সঙ্গে আর কারা যুক্ত আছে, সেটাই তদন্ত করে জানার চেষ্টা করছি আমরা ৷" লালবাজার সূত্রের খবর, এই ঘটনায় প্রথমে চারু মার্কেট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় ৷ পরে মামলার তদন্তভার চলে যায় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হাতে ৷
জানা গিয়েছে, প্রতারকরা চারু মার্কেট থানা এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলাকে প্রথমে ফোন করে কথা বলে ৷ এরপরে ভিডিয়ো কল করে একেবারে পুলিশের পোশাকে মহিলার সামনে আসে অভিযুক্তরা ৷ মহিলার সামনে নিজেদের দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের আধিকারিক হিসেব পরিচয় দেন তাঁরা ৷ অভিযোগ, এরপর ভিডিয়ো কলেই ওই মহিলাকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷
এমনকি দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চে ওই মহিলার বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর হয়েছে ৷ খুব তাড়াতাড়ি কলকাতায় এসে দিল্লি পুলিশের একটি বিশেষ দল তাঁকে গ্রেফতার করবে ৷ এই শুনে মহিলা অত্যন্ত ঘাবড়ে যান এবং কী কারণে তাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ দায়ের হল জানতে চান ৷ পাল্টা প্রশ্ন করায় উল্টো দিক থেকে পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তিরা মহিলাকে জানান, তাঁর বিরুদ্ধে মুম্বই পুলিশেও একাধিক এফআইআর দায়ের হয়েছে ৷ তিনি নাকি একাধিক বেআইনি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ৷
মহিলা এসব শুনে ঘাবড়ে যান ৷ অভিযোগ, তখনই উল্টোদিকে উর্দিধারী প্রতারকরা মহিলাকে বাঁচার উপায় হিসেবে একটি অফার দেন ৷ মহিলা গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, তাঁকে বলা হয়েছিল যে এসব থেকে বাঁচতে ও গ্রেফতারি এড়াতে চাইলে তাঁদের দেওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে 66 লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দিতে হবে ৷ একবার সেই টাকা পুলিশকে দিলে সমস্ত মামলা তুলে নেওয়া হবে ও তিনি গ্রেফতারির হাত থেকে বেঁচে যাবেন ৷