কলকাতা, 11 অক্টোবর: আরজি কর হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে অনশনরত জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোকে। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় আরজি কর হাসপাতালে। চিকিৎসক সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অনিকেতের জন্য একটি পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সেই বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনিকেত মাহাতোর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক ! এই পরিস্থিতিতে আরও জোরালো আন্দোলনের ডাক দিল ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে জুনিয়র চিকিৎসক দেবাশিস হালদার শুক্রবার বিকেলে ধর্মতলার অনশনমঞ্চ সংলগ্ন এলাকায় সমাবেশের ডাক দিয়েছেন ৷ এই সমাবেশে তিনি পাশে চেয়েছেন শহরবাসীকেও ৷
দেবাশিস হালদার জানান, আরজি করের মতো ঘটনা যাতে আর কোথাও না ঘটে, তা নিশ্চিত করতেই জুনিয়র চিকিৎসকদের এই আন্দোলন। অনশন চলাকালীন ডাঃ অনিকেত মাহাতোর স্বাস্থ্যের অবনতি আর তাঁর সিসিইউতে ভর্তি হওয়া প্রসঙ্গে দেবাশিস প্রশ্ন করেন, "আমরা জানতে চাই, আজ অনশনের 130 ঘণ্টা অতিক্রান্ত হওয়ার পর আমাদের যে সহযোদ্ধাকে আইসিউতে ভর্তি হতে হল তার দায় কার ? আমাদের আর কতজন সহযোদ্ধাকে আইসিউ যেতে হবে যাতে এই অমানবিক সরকারের টনক নড়ে ?" এর সঙ্গে তিনি নাগরিকদের কাছে আবেদন করেন, "10 দফা দাবিতে আমাদের সহযোদ্ধারা নিজেদের জীবন বাজি রেখেছেন। তাঁদের প্রতি সংহতি দেখিয়ে প্রত্যেক মানুষের আবেগকে এখানে এনে জড়ো করুন।"
ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের তরফে সাধারণ মানুষের কাছে ডাঃ দেবাশিস হালদারের আবেদন, শুক্রবার বিকেলে ধর্মতলার মোড়ে এই জমায়েতকে এক ‘মহাসমাবেশ’-এর রূপ দিতে হবে ৷ সমাবেশে যোগ দেওয়া সকলের হাতে চিকিৎসকদের দাবিদাওয়ার কথা উল্লেখ করা লিফলেট তুলে দেওয়া হবে ৷ অনশনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে দেবাশিসের দাবি, এই আন্দোলন তাঁদের নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির আন্দোলন নয়। বরং, আরেকটা আরজি কর কাণ্ড যাতে না ঘটে, সেটাই নিশ্চিত করতে চাইছেন তাঁরা ৷ আর সেটাই এই সমাবেশ থেকে লিফলেটের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জানাতে চাইছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷
এর আগে গত বুধবারই রাজ্য সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু, ওই বৈঠক নিষ্ফলা হয়েছে বলেই দাবি করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার শুধু মৌখিক আশ্বাস দিয়ে অনশন তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে ৷ কিন্তু পুজো না মিটলে এ বিষয়ে আদপে কোনও কথাই বলতে চাইছে না সরকার ৷ অনশনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে অনশন তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকদের একাংশও। কিন্তু, অনশন এ ভাবে উঠবে না, সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকেরা।