কলকাতা, 1 মে: সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে বঙ্গের তাপমাত্রা ৷ ইতিমধ্যেই গরমে নয়া রেকর্ড গড়েছে কলকাতা ৷ এই বিষয়ে আলিপুর আবহাওয়া অফিসের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সোমনাথ দত্ত জানিয়েছেন, কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি সব জেলাতেই শনিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলবে । দুই বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকবে । বর্ধমান এবং বীরভূমে গরম ও অস্বস্তি বাড়বে । 5 মে রবিবার থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ৷
মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ পশ্চিম দিক থেকে ধেয়ে আসা গরম বাতাস । আপাতত পশ্চিম দিক থেকে ছুটে আসা গরম বাতাস প্রবেশ কমতে শুরু করবে । বদলে উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা বাতাসে স্বস্তি ফিরবে ৷ 3 মে শুক্রবার থেকে একটু একটু করে পরিস্থিতির উন্নতি হবে । তার আগে এই ক'দিন রাজ্যজুড়ে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বজায় থাকবে ৷ হাওয়া অফিসের কথায়, উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে বৃষ্টি চলবে । আজ থেকে বৃষ্টি বাড়বে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার জেলায় । তবে নিচের দিকের তিন জেলা অর্থাৎ মালদা এবং দুই দিনাজপুরে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকবে । আগামী দু'দিন একই রকম তাপমাত্রা বজায় থাকবে উত্তরবঙ্গে । দু'দিন পর থেকে উত্তুরে হওয়া বইতে পারে উত্তরবঙ্গে ৷ তখন তাপমাত্রা কমবে ৷
এই তীব্র গরম গত অর্ধ শতাব্দীতে দেখা যায়নি । মঙ্গলবার ছিল মরশুমের উষ্ণতম দিন । এদিন উত্তরবঙ্গের মালদা-সহ দক্ষিণবঙ্গের সিংহভাগ জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি ছিল । রাজ্যের উষ্ণতম জায়গা ছিল কলাইকুণ্ডা ৷ এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 47.2 ডিগ্রি সেলসিয়াস ৷ যা স্বাভাবিকের চেয়ে 10.4 ডিগ্রি বেশি । পানাগড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 45.6 ডিগ্রি ৷ যা স্বাভাবিকের চেয়ে 10 ডিগ্রি বেশি ।
কলকাতার আলিপুর ও দমদমে 43 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে । আলিপুর আবহাওয়া অফিসের মতে, গত 50 বছরে এটাই এপ্রিল মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা । 1980 সালে 25 এপ্রিল তাপমাত্রা ছিল 41.7 ডিগ্রি সেলসিয়াস । 1954 সালের এপ্রিল মাসে 43.3 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল । তবে হাওয়া অফিস তাপমাত্রা আর বৃদ্ধি না হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে ।
মঙ্গলবার কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল 43 ডিগ্রি । যা স্বাভাবিকের চেয়ে 7.4 ডিগ্রি বেশি । সর্বনিম্ন তাপমাত্রা 29.7 ডিগ্রি সেলসিয়াস ৷ যা স্বাভাবিকের চেয়ে 3.5 ডিগ্রি বেশি । বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ 86 শতাংশ । সর্বনিম্ন আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল 21 শতাংশ । যা সাধারণত শীতকালে থাকে । ফলে ত্বকে শীতকালের মতো টান পড়ছে ।
আজ বুধবার দিনের আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার পাশাপাশি তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকবে । সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে 42 এবং 29 ডিগ্রির আশেপাশে থাকবে ।
আরও পড়ুন :