মালদা, 26 জুন: প্রদীপের নীচেই অন্ধকার ৷ অন্তত ইংরেজবাজারে ৷ গত শনিবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পইপই করে করে প্রত্যেককে জানিয়ে দিয়েছিলেন, রাজ্যের কোনও শহরে বেআইনি পার্কিং রাখা যাবে না ৷ ফুটপাথ অবশ্যই দখলমুক্ত করতে হবে ৷ প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে ৷ কারণ, এতে রাস্তায় যানজটে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে ৷
শুধু বিভিন্ন পুরসভার চেয়ারম্যান ও কর্পোরেশনের মেয়র নয়, প্রশাসনিক কর্তাদেরও এই নির্দেশ দেন তিনি ৷ তাঁর নির্দেশ পেয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক শহরে পথে নেমে পড়েছে পুরসভা ও প্রশাসন ৷ কিন্তু এক্ষেত্রে খানিকটা ধীরে চল নীতি নিয়েছে গৌড়বঙ্গের তিন জেলা ৷ এখনও মালদা কিংবা দুই দিনাজপুরে তেমন কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি ৷
মালদা শহরে আবার রাস্তার উপর পার্কিং প্লেস তৈরি করে রেখেছে খোদ ইংরেজবাজার পুরসভা ৷ কোনও একটি জায়গায় নয়, একাধিক জায়গায় ৷ রীতিমতো পুরসভার স্লিপে পার্কিং ফি মেটাচ্ছেন গাড়ির মালিকরা ৷ পাশে পুরসভার বোর্ড জানান দিচ্ছে, প্রতি ঘণ্টার ফি 10 টাকা ৷ আরও মজার কথা, বুধবার সেই পার্কিং প্লেসের পাশেই জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের তরফে মাইকিং করে ঘোষণা করা হচ্ছে, রাস্তার উপর বাইক বা গাড়ি পার্ক করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ সমস্ত ঘটনা দেখে স্থানীয় এক দোকানদার বলেই বসলেন, “যত পাগলের কাণ্ডকারখানা ৷”
দিদির বৈঠক শেষে এদিনই মালদায় ফিরেছেন ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী ৷ ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ কিংবা ভারতে এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে সরকারি জায়গা দখল হয়নি ৷ মালদা শহরেও হয়েছে ৷ আমরা অনেকদিন ধরেই এদের তোলার চেষ্টা করছি ৷ এবার মুখ্যমন্ত্রী সেটা আমাদের মন্ত্রের মতো বুঝিয়ে দিয়েছেন ৷’’ তাঁর কথায়, নগরের কাজ করতে গেলে নগর পরিষেবা দিতে হবে ৷ মানুষের সুবিধা দেখতে হবে ৷ এই শহরকেও দখলমুক্ত করা হবে ৷ ইতিমধ্যে মাইকিং শুরু হয়েছে ৷ সবার সঙ্গে বসে প্ল্যান তৈরি করা হবে ৷ তারপরেই কাজ শুরু করবে পুরসভা ৷
কিন্তু রাস্তা যে দখল করে রেখেছে পুরসভাই ? কৃষ্ণেন্দুর জবাব, “কলকাতা, শিলিগুড়ি-সহ বিভিন্ন বড় শহরে যদি যান, দেখবেন, রাস্তার উপরেই পার্কিং রয়েছে ৷ এটা রাস্তার উপরেই হয় ৷ আমাদের শহর অনেকদিনের পুরোনো ৷ নতুন শহর নয় ৷ পুরোনো শহরে আমাদের এভাবেই ম্যানেজ করতে হবে ৷ আমরা পার্কিং করব ৷ তবে যাতে যানজটের সমস্যা না-হয় তার দিকে লক্ষ্য রেখেই সেটা করা হবে ৷”
এদিকে জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, “শহর পরিষ্কার করার জন্য আমাদের কাছে রাজ্যের তরফে নির্দেশিকা এসেছে ৷ আমরা জেলার দুই পৌর কর্তৃপক্ষকে তা জানিয়ে দিয়েছি ৷ দুই শহরের কোথাও যেন সরকারি জায়গা দখল না-করা হয়, তারজন্য দুই পৌর কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি ৷ আমরাও এনিয়ে পথে নামছি ৷ কোথাও অবৈধ দখলদারি আমরা চলতে দেব না ৷”